মিয়ানমার থেকে এলো ২০ টন পেঁয়াজ
কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমার থেকে প্রায় দুই হাজার বস্তা (২০ টন) পেঁয়াজ এসেছে। শুক্রবার ছোট ট্রলারে এই পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে এসে পৌঁছায়। বন্দরসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ খালাস শেষে পেঁয়াজগুলো ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হবে।
এদিকে দেশি পেঁয়াজে সয়লাব দেশের অন্যতম উৎপাদনকারী জেলা কুষ্টিয়ার বাজার। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় দেশটির ঘোজাডাঙা বন্দরে আটকা পড়েছে পেঁয়াজ বোঝাই ৩০০ ট্রাক। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
টেকনাফ (কক্সবাজার) : টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রায় তিন মাস পর মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজগুলো ট্রলার থেকে খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাগজপত্র হাতে না আসায় এখনও পেঁয়াজের সঠিক পরিমাণ জানা যাচ্ছে না। তবে ২০ মেট্রিক টনের বেশি হতে পারে। সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান সেভেন স্টার এন্টারপ্রাইজের তত্ত্বাবধানে কানিজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পেঁয়াজগুলো আমদানি করে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী উসমান গণি বলেন, প্রথম ধাপে দুই হাজার বস্তা পেঁয়াজ টেকনাফ বন্দরে এসে পৌঁছেছে। আরও পেঁয়াজ আসার পথে রয়েছে।
সেভেন স্টার এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক মো. আরাফাত বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় আমদানির কাগজপত্র (আইজিএম) জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। শনিবার (আজ) কাগজপত্র জমা দিয়ে রোববারের দিকে পেঁয়াজগুলো দেশীয় বাজারে সরবরাহ করা যাবে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত খালাস করে বাজারে পৌঁছানো হবে।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। এখানকার গ্রামাঞ্চলের হাটে প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি পেঁয়াজ নিয়ে আসছেন কৃষকরা। দাম ভালো পাওয়ায় তারা ফসল বিক্রি করে হাসিমুখে ঘরে ফিরছেন। শুক্রবার সকালে জেলার বৃহৎ পেঁয়াজের হাট কুমারখালী উপজেলার পান্টি কলেজ মাঠে দেখা যায়, পেঁয়াজে সয়লাব বাজার। প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে পেঁয়াজভর্তি ভ্যানের দীর্ঘ সারি। প্রতিটি ভ্যানে পাঁচ থেকে আট মণ করে পেঁয়াজ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এদিন ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হাট। সকাল ১০টার দিকে বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। হাটে সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ পাইকারি প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া প্রকার ভেদে প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা। গুটি পেঁয়াজ (বীজ) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৫০০ টাকায়।
কুমারখালী মোহননগর গ্রামের কৃষক আখতারুজ্জামান বলেন, নিজের জমিতে উৎপাদন করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসেছি। দুই হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে ১০ মণ বিক্রি করেছি। ভারতীয় পেঁয়াজ না এলে দেশের কৃষকরা অনেক লাভবান হবে। তিনি আরও বলেন, এলাকার বাড়িতে বাড়িতে প্রচুর পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। বেশি দাম পাওয়ার আশায় কৃষকরা ঘরে রেখে আস্তে আস্তে বিক্রি করছেন।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে পাঁচ দিন ধরে পেঁয়াজের চালান আসছে না। এ বন্দরের উল্টো দিকে ভারতের ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরে প্রায় ৩০০ ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ওই পেঁয়াজে পচন ধরেছে। ফলে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোমরা বন্দরে অভিযান চালিয়ে পেঁয়াজ মজুদ রাখার অভিযোগে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন।
রংপুর : নগরীসহ জেলার সর্বত্র খুচরা বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দু’দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। হঠাৎ করে পেঁয়াজের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
দিনাজপুর : পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক দিনেই বেড়ে দাম দ্বিগুণ হলেও ভারত থেকে আবার পেঁয়াজ আসছে- এমন খবরে জেলায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। দাম বাড়ার পেছনে বাজারের মধ্যস্বত্ব ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন পেঁয়াজ আমদানিকারকরা।
গৌরনদী (বরিশাল) : গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর, গৌরনদী বন্দর, বাটাজোড় বাজার, মাহিলাড়া বাজারে শুক্রবার খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মিয়ানমার থেকে এলো ২০ টন পেঁয়াজ
কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমার থেকে প্রায় দুই হাজার বস্তা (২০ টন) পেঁয়াজ এসেছে। শুক্রবার ছোট ট্রলারে এই পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে এসে পৌঁছায়। বন্দরসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ খালাস শেষে পেঁয়াজগুলো ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হবে।
এদিকে দেশি পেঁয়াজে সয়লাব দেশের অন্যতম উৎপাদনকারী জেলা কুষ্টিয়ার বাজার। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় দেশটির ঘোজাডাঙা বন্দরে আটকা পড়েছে পেঁয়াজ বোঝাই ৩০০ ট্রাক। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
টেকনাফ (কক্সবাজার) : টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রায় তিন মাস পর মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজগুলো ট্রলার থেকে খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাগজপত্র হাতে না আসায় এখনও পেঁয়াজের সঠিক পরিমাণ জানা যাচ্ছে না। তবে ২০ মেট্রিক টনের বেশি হতে পারে। সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান সেভেন স্টার এন্টারপ্রাইজের তত্ত্বাবধানে কানিজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পেঁয়াজগুলো আমদানি করে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী উসমান গণি বলেন, প্রথম ধাপে দুই হাজার বস্তা পেঁয়াজ টেকনাফ বন্দরে এসে পৌঁছেছে। আরও পেঁয়াজ আসার পথে রয়েছে।
সেভেন স্টার এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক মো. আরাফাত বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় আমদানির কাগজপত্র (আইজিএম) জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। শনিবার (আজ) কাগজপত্র জমা দিয়ে রোববারের দিকে পেঁয়াজগুলো দেশীয় বাজারে সরবরাহ করা যাবে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত খালাস করে বাজারে পৌঁছানো হবে।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। এখানকার গ্রামাঞ্চলের হাটে প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি পেঁয়াজ নিয়ে আসছেন কৃষকরা। দাম ভালো পাওয়ায় তারা ফসল বিক্রি করে হাসিমুখে ঘরে ফিরছেন। শুক্রবার সকালে জেলার বৃহৎ পেঁয়াজের হাট কুমারখালী উপজেলার পান্টি কলেজ মাঠে দেখা যায়, পেঁয়াজে সয়লাব বাজার। প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে পেঁয়াজভর্তি ভ্যানের দীর্ঘ সারি। প্রতিটি ভ্যানে পাঁচ থেকে আট মণ করে পেঁয়াজ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এদিন ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হাট। সকাল ১০টার দিকে বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। হাটে সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ পাইকারি প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া প্রকার ভেদে প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা। গুটি পেঁয়াজ (বীজ) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৫০০ টাকায়।
কুমারখালী মোহননগর গ্রামের কৃষক আখতারুজ্জামান বলেন, নিজের জমিতে উৎপাদন করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসেছি। দুই হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে ১০ মণ বিক্রি করেছি। ভারতীয় পেঁয়াজ না এলে দেশের কৃষকরা অনেক লাভবান হবে। তিনি আরও বলেন, এলাকার বাড়িতে বাড়িতে প্রচুর পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। বেশি দাম পাওয়ার আশায় কৃষকরা ঘরে রেখে আস্তে আস্তে বিক্রি করছেন।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে পাঁচ দিন ধরে পেঁয়াজের চালান আসছে না। এ বন্দরের উল্টো দিকে ভারতের ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরে প্রায় ৩০০ ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ওই পেঁয়াজে পচন ধরেছে। ফলে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোমরা বন্দরে অভিযান চালিয়ে পেঁয়াজ মজুদ রাখার অভিযোগে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন।
রংপুর : নগরীসহ জেলার সর্বত্র খুচরা বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দু’দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। হঠাৎ করে পেঁয়াজের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
দিনাজপুর : পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক দিনেই বেড়ে দাম দ্বিগুণ হলেও ভারত থেকে আবার পেঁয়াজ আসছে- এমন খবরে জেলায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। দাম বাড়ার পেছনে বাজারের মধ্যস্বত্ব ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন পেঁয়াজ আমদানিকারকরা।
গৌরনদী (বরিশাল) : গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর, গৌরনদী বন্দর, বাটাজোড় বাজার, মাহিলাড়া বাজারে শুক্রবার খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।