অপহরণকারীই ফোনে লাশের সন্ধান দেয়
বগুড়ায় প্রবাসীর ছেলের লাশ উদ্ধার
বগুড়া ব্যুরো
২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
গাবতলীতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে প্রবাসীর সাত বছরের ছেলে হানজালাকে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণকারী ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোন করে লাশের সন্ধান দেয়। পরে বাড়ির পাশে পুকুর থেকে তার ডুবিয়ে রাখা হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পচন ধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, অপহৃত শিশুকে উদ্ধারে পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। শিশুর বাবা গাবতলী থানায় শুক্রবার হত্যা মামলা করেছেন।
ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, লাশ বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অপহরণ ও হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিশুটির মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন।
পুলিশ, রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের মেম্বার মানিক মিয়া ও স্বজনরা জানান, শিশু হানজালা গাবতলী
উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মালয়েশিয়া প্রবাসী পিন্টু মিয়ার ছেলে। সে নিশুপাড়া বটতলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়ত। গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে শিশু হানজালা বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওইদিনই গাবতলী থানায় জিডি করা হয়। ছেলেকে অপহরণের খবর পেয়ে পিন্টু মিয়া দুদিন পর বাড়িতে ফেরেন। অপহরণকারীরা ফোনে মা তাসলিমা বেগমকে অপহরণের কথা জানায়। মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়ে দেয়। শিশুর বাবা-মা ফোন নম্বর নিয়ে গাবতলী থানায় গেলেও তারা সন্তান উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পাননি। ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অহরণকারীরা শিশুর মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, টাকা না দেওয়ায় তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এও জানায়, শিশুটির লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে ইট বেঁধে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যমতে রাতেই ওই পুকুর থেকে শিশু হানজালার লাশ উদ্ধার করা হয়। গাবতলী থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পিন্টু মিয়া বিদেশ থাকায় এর আগেও দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রীকে ফোন করে দুই লাখ টাকা ধার চেয়েছিল।
গাবতলী থানার ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, শিশুর বাবা শুক্রবার অপহরণ ও হত্যা মামলা করেছেন। তিনি জানান, শিশুটিকে উদ্ধারে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমে অপহরণকারী জিআরপি পুলিশের এসআই ফারুক সেজে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। তদন্ত করে জানা যায়, জিআরপি পুলিশে ওই নামে কোনো কর্মকর্তা নেই। এরপর থেকে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহরণকারীর ফোনে হত্যার কথা ও লাশের সন্ধান দেয়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বগুড়ায় প্রবাসীর ছেলের লাশ উদ্ধার
অপহরণকারীই ফোনে লাশের সন্ধান দেয়
গাবতলীতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে প্রবাসীর সাত বছরের ছেলে হানজালাকে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণকারী ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোন করে লাশের সন্ধান দেয়। পরে বাড়ির পাশে পুকুর থেকে তার ডুবিয়ে রাখা হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পচন ধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, অপহৃত শিশুকে উদ্ধারে পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। শিশুর বাবা গাবতলী থানায় শুক্রবার হত্যা মামলা করেছেন।
ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, লাশ বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অপহরণ ও হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিশুটির মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন।
পুলিশ, রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের মেম্বার মানিক মিয়া ও স্বজনরা জানান, শিশু হানজালা গাবতলী
উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মালয়েশিয়া প্রবাসী পিন্টু মিয়ার ছেলে। সে নিশুপাড়া বটতলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়ত। গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে শিশু হানজালা বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওইদিনই গাবতলী থানায় জিডি করা হয়। ছেলেকে অপহরণের খবর পেয়ে পিন্টু মিয়া দুদিন পর বাড়িতে ফেরেন। অপহরণকারীরা ফোনে মা তাসলিমা বেগমকে অপহরণের কথা জানায়। মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়ে দেয়। শিশুর বাবা-মা ফোন নম্বর নিয়ে গাবতলী থানায় গেলেও তারা সন্তান উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পাননি। ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অহরণকারীরা শিশুর মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, টাকা না দেওয়ায় তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এও জানায়, শিশুটির লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে ইট বেঁধে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যমতে রাতেই ওই পুকুর থেকে শিশু হানজালার লাশ উদ্ধার করা হয়। গাবতলী থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পিন্টু মিয়া বিদেশ থাকায় এর আগেও দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রীকে ফোন করে দুই লাখ টাকা ধার চেয়েছিল।
গাবতলী থানার ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, শিশুর বাবা শুক্রবার অপহরণ ও হত্যা মামলা করেছেন। তিনি জানান, শিশুটিকে উদ্ধারে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমে অপহরণকারী জিআরপি পুলিশের এসআই ফারুক সেজে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। তদন্ত করে জানা যায়, জিআরপি পুলিশে ওই নামে কোনো কর্মকর্তা নেই। এরপর থেকে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহরণকারীর ফোনে হত্যার কথা ও লাশের সন্ধান দেয়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।