শেবাচিমে ১৯ জনের ১০ জনই করোনায় আক্রান্ত
মৃত্যুর কোলে ৩
সাইদুর রহমান পান্থ, বরিশাল
০৯ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশালে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সঙ্গে প্রাণহানিও।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা ১৯ জনের মধ্যে ১০ জনেরই করোনা ধরা পড়েছে। এই সময়ে করোনা আক্রান্ত ৩ জন মারা গেছেন। এরা সবাই ষাটোর্ধ্ব। আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১২ জন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আগে রোগী শূন্য ছিল এই অঞ্চলের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল- শেবাচিম। গত জানুয়ারির পর থেকে সর্বত্রই একটা ঢিলেঢালাভাবে চলছিল হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডের কার্যক্রম। ৭ মার্চ থেকে হঠাৎ রোগী ভর্তি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৬ জন। রোগীর স্বজনরা জানান, চিকিৎসক ও নার্সের সহায়তায় চিকিৎসাসেবা মিললেও হাসপাতালের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। টয়লেট আর ওয়াশরুম যাওয়াই কঠিন। দুর্গন্ধে বমি আসে। সিঁড়ি বেয়ে ওঠাও কষ্টকর। তবে নানা সংকটের মধ্যেও চিকিৎসকরা রোগীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। শেবাচিম হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনা ওয়ার্ডের প্রতি আমাদের আলাদা নজর রয়েছে। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হাসপাতালের করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৫৬২ রোগীর মধ্যে করোনা রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭১ জন।
এদিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, ২৪ ঘন্টায় ২৪৭ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বরিশালে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১৪৮ জন। এই সময়ে ৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। নতুন তিনজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ২২১ জনের মৃত্যু হলো। মঙ্গলবার মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে দু’জন শেবাচিমে বাকি একজন ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে।
শুরু হলো করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম : বরিশালে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চলে। নগরে শেবাচিম হাসপাতাল, বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতাল ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম চলে। বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতাল গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও দূরত্ব বজায় রেখে মানুষ টিকা গ্রহনের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে নারীদের চেয়ে পুরুষদের ভিড় ছিল বেশি। অনেকে আবার মোবাইলে মেসেজ না পাওয়ার কারণে টিকা নিতে পারেনি। হাসপাতালের তিনটি বুথে টিকা দেয়া হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৫৫ জন নারী-পুরুষ টিকা নিয়েছেন।
টিকা নিতে এসে মেসেজ না পাওয়ায় ফিরে যেতে হয় নগরের হাসপাতাল রোডের সুব্রত পোদ্দারকে। তিনি বলেন, করোনার প্রথম ডোজের টিকা আমি ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে নিয়েছি। আমি প্রথমেই টিকা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারে আমার মোবাইলে মেসেজ আসেনি। তাই আমি টিকা নিতে পারিনি।
অপর আর এক ব্যাক্তি জানালেন, আমিও মেসেজ পাইনি। কেন্দ্রে এসে খবর নিলাম। কবে নাগাদ পাবো তা বলতে পারেনি কেউ। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান বলেন, করোনার প্রভাব বেশি হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা প্রদান করছি। কেন্দ্রে যাতে ভিড় না হয় সে জন্য আমরা টিকাগ্রহীতাদের ভাগ করে টিকা প্রদান করছি। আস্তে আস্তে সবাই টিকা পাবেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মৃত্যুর কোলে ৩
শেবাচিমে ১৯ জনের ১০ জনই করোনায় আক্রান্ত
বরিশালে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সঙ্গে প্রাণহানিও।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা ১৯ জনের মধ্যে ১০ জনেরই করোনা ধরা পড়েছে। এই সময়ে করোনা আক্রান্ত ৩ জন মারা গেছেন। এরা সবাই ষাটোর্ধ্ব। আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১২ জন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আগে রোগী শূন্য ছিল এই অঞ্চলের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল- শেবাচিম। গত জানুয়ারির পর থেকে সর্বত্রই একটা ঢিলেঢালাভাবে চলছিল হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডের কার্যক্রম। ৭ মার্চ থেকে হঠাৎ রোগী ভর্তি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৬ জন। রোগীর স্বজনরা জানান, চিকিৎসক ও নার্সের সহায়তায় চিকিৎসাসেবা মিললেও হাসপাতালের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। টয়লেট আর ওয়াশরুম যাওয়াই কঠিন। দুর্গন্ধে বমি আসে। সিঁড়ি বেয়ে ওঠাও কষ্টকর। তবে নানা সংকটের মধ্যেও চিকিৎসকরা রোগীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। শেবাচিম হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনা ওয়ার্ডের প্রতি আমাদের আলাদা নজর রয়েছে। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হাসপাতালের করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৫৬২ রোগীর মধ্যে করোনা রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭১ জন।
এদিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, ২৪ ঘন্টায় ২৪৭ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বরিশালে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১৪৮ জন। এই সময়ে ৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। নতুন তিনজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ২২১ জনের মৃত্যু হলো। মঙ্গলবার মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে দু’জন শেবাচিমে বাকি একজন ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে।
শুরু হলো করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম : বরিশালে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চলে। নগরে শেবাচিম হাসপাতাল, বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতাল ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম চলে। বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতাল গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও দূরত্ব বজায় রেখে মানুষ টিকা গ্রহনের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে নারীদের চেয়ে পুরুষদের ভিড় ছিল বেশি। অনেকে আবার মোবাইলে মেসেজ না পাওয়ার কারণে টিকা নিতে পারেনি। হাসপাতালের তিনটি বুথে টিকা দেয়া হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৫৫ জন নারী-পুরুষ টিকা নিয়েছেন।
টিকা নিতে এসে মেসেজ না পাওয়ায় ফিরে যেতে হয় নগরের হাসপাতাল রোডের সুব্রত পোদ্দারকে। তিনি বলেন, করোনার প্রথম ডোজের টিকা আমি ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে নিয়েছি। আমি প্রথমেই টিকা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারে আমার মোবাইলে মেসেজ আসেনি। তাই আমি টিকা নিতে পারিনি।
অপর আর এক ব্যাক্তি জানালেন, আমিও মেসেজ পাইনি। কেন্দ্রে এসে খবর নিলাম। কবে নাগাদ পাবো তা বলতে পারেনি কেউ। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান বলেন, করোনার প্রভাব বেশি হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা প্রদান করছি। কেন্দ্রে যাতে ভিড় না হয় সে জন্য আমরা টিকাগ্রহীতাদের ভাগ করে টিকা প্রদান করছি। আস্তে আস্তে সবাই টিকা পাবেন।