সাবধান, আসছে করোনার ‘সুপার ভ্যারিয়েন্ট’
করোনাভাইরাসের আরও একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি ব্রিটিশ গবেষকদের। নতুন এই ধরনটিকে বলা হচ্ছে ‘সুপার ভ্যারিয়েন্ট’।
গবেষকরা বলছেন, এটা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করোনার ধরনগুলোর মধ্যে সর্বাধিক রূপান্তরিত ধরন এবং এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। আফ্রিকার মরুপ্রধান দেশ বতসোয়ানায় এটি প্রথম শনাক্ত হয়।
বর্তমানে তিনটি দেশে ১০ জন এতে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, টিকা জীবন বাঁচায়মাত্র, সংক্রমণ রোধ করে না। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও এএফপিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।
করোনার নতুন ওই ধরনটি প্রথমে বতসোয়ানায় শনাক্ত হওয়ায় একে বতসোয়ানা ভ্যারিয়েন্ট বলে ডাকা হচ্ছে। তবে আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে এর নামকরণ করা হবে। এটি একই সঙ্গে ৩২ মিউটেশন বা রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে কয়েকটি রূপ অতি সংক্রামক। এমনকি সেগুলো টিকা প্রতিরোধী।
করোনা মূলত একটি সার্স ভাইরাস। এর শাস্ত্রীয় নাম হচ্ছে সার্স-কভ-২। সব ভাইরাসই সময়ের সঙ্গে স্বভাবতই বদলাতে থাকে। সার্স-কোভ-২-এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ২০২০ সালের শুরুর দিকে ভাইরাসটি প্রথম চিহ্নিত হয়। এরপর এটির হাজার হাজার মিউটেশন হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বেশির ভাগ মিউটেশনের ফলে ভাইরাসটির মূল গঠনের ওপর খুব কম বা একেবারেই কোনো প্রভাব পড়ে না। সময়ের সঙ্গে এটি বিলুপ্তও হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কোনো মিউটেশন এমনভাবে ঘটে, যা ভাইরাসটিকে টিকে থাকতে এবং বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সার্স-কভ-২-এর এখন পর্যন্ত অসংখ্যবার মিউটেশন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ভ্যারিয়েন্টগুলো হচ্ছে, আলফা (প্রথম ধরা পড়ে ব্রিটেনে), বেটা (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) ও ডেল্টা (ভারত)। এছাড়া ল্যাম্বডা ও মিউ প্রথম শনাক্ত হয় যথাক্রমে পেরু ও কলম্বিয়ায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম করোনার ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়। দ্রুত এই ধরনটি রূপ বদলাতে থাকে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভারতের সীমানার বাইরেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাসের জিনবিন্যাসের ৯৯.৫ শতাংশ নমুনাই ডেল্টা ধরনের। শুধু ডেল্টা নয়, করোনার এই ধরনটি রূপ বদলে আরও শক্তিশালী হয়েছে ব্রিটেনে। দেশটিতে ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে করোনার ডেল্টা প্লাস ধরন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেল্টার তুলনায় ডেল্টা প্লাস ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
টিকা সংক্রমণ রোধ করে না-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : করোনাভাইরাস নিয়ে আবারও সতর্কতা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বড়দিনের উৎসবকে সামনে রেখে সংস্থাটি নতুন হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বলেছে, সামাজিক মেলামেশা আবারও মহামারি শুরুর আগের অবস্থায় গিয়েছে।
এর ফলে সামনে ছুটির দিনগুলোয় এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, আমাদের মধ্যে একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার ফলে বুঝি এই মহামারি শেষ হয়ে গেছে। যেসব মানুষ টিকা নিয়েছেন তারা মনে করছেন, তাদেরকে আর কোনো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে না। মূলত টিকা জীবন বাঁচায়, সংক্রমণ রোধ করে না।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাবধান, আসছে করোনার ‘সুপার ভ্যারিয়েন্ট’
করোনাভাইরাসের আরও একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি ব্রিটিশ গবেষকদের। নতুন এই ধরনটিকে বলা হচ্ছে ‘সুপার ভ্যারিয়েন্ট’।
গবেষকরা বলছেন, এটা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করোনার ধরনগুলোর মধ্যে সর্বাধিক রূপান্তরিত ধরন এবং এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। আফ্রিকার মরুপ্রধান দেশ বতসোয়ানায় এটি প্রথম শনাক্ত হয়।
বর্তমানে তিনটি দেশে ১০ জন এতে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, টিকা জীবন বাঁচায়মাত্র, সংক্রমণ রোধ করে না। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও এএফপিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।
করোনার নতুন ওই ধরনটি প্রথমে বতসোয়ানায় শনাক্ত হওয়ায় একে বতসোয়ানা ভ্যারিয়েন্ট বলে ডাকা হচ্ছে। তবে আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে এর নামকরণ করা হবে। এটি একই সঙ্গে ৩২ মিউটেশন বা রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে কয়েকটি রূপ অতি সংক্রামক। এমনকি সেগুলো টিকা প্রতিরোধী।
করোনা মূলত একটি সার্স ভাইরাস। এর শাস্ত্রীয় নাম হচ্ছে সার্স-কভ-২। সব ভাইরাসই সময়ের সঙ্গে স্বভাবতই বদলাতে থাকে। সার্স-কোভ-২-এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ২০২০ সালের শুরুর দিকে ভাইরাসটি প্রথম চিহ্নিত হয়। এরপর এটির হাজার হাজার মিউটেশন হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বেশির ভাগ মিউটেশনের ফলে ভাইরাসটির মূল গঠনের ওপর খুব কম বা একেবারেই কোনো প্রভাব পড়ে না। সময়ের সঙ্গে এটি বিলুপ্তও হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কোনো মিউটেশন এমনভাবে ঘটে, যা ভাইরাসটিকে টিকে থাকতে এবং বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সার্স-কভ-২-এর এখন পর্যন্ত অসংখ্যবার মিউটেশন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ভ্যারিয়েন্টগুলো হচ্ছে, আলফা (প্রথম ধরা পড়ে ব্রিটেনে), বেটা (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) ও ডেল্টা (ভারত)। এছাড়া ল্যাম্বডা ও মিউ প্রথম শনাক্ত হয় যথাক্রমে পেরু ও কলম্বিয়ায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম করোনার ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়। দ্রুত এই ধরনটি রূপ বদলাতে থাকে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভারতের সীমানার বাইরেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাসের জিনবিন্যাসের ৯৯.৫ শতাংশ নমুনাই ডেল্টা ধরনের। শুধু ডেল্টা নয়, করোনার এই ধরনটি রূপ বদলে আরও শক্তিশালী হয়েছে ব্রিটেনে। দেশটিতে ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে করোনার ডেল্টা প্লাস ধরন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেল্টার তুলনায় ডেল্টা প্লাস ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
টিকা সংক্রমণ রোধ করে না-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : করোনাভাইরাস নিয়ে আবারও সতর্কতা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বড়দিনের উৎসবকে সামনে রেখে সংস্থাটি নতুন হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বলেছে, সামাজিক মেলামেশা আবারও মহামারি শুরুর আগের অবস্থায় গিয়েছে।
এর ফলে সামনে ছুটির দিনগুলোয় এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, আমাদের মধ্যে একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার ফলে বুঝি এই মহামারি শেষ হয়ে গেছে। যেসব মানুষ টিকা নিয়েছেন তারা মনে করছেন, তাদেরকে আর কোনো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে না। মূলত টিকা জীবন বাঁচায়, সংক্রমণ রোধ করে না।