ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রস্তুতি
বন্দরে নির্দেশনা আছে সক্ষমতা নেই
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকিতে
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় দেশের বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে তা বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন, স্ক্রিনিং মেশিং বসানো এবং সুরক্ষা সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। এতে যাত্রীরা দীর্ঘভোগান্তিতে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও ন্যূনতম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। বিশেষ করে বেনাপোল বন্দরের অবস্থা ভয়াবহ। বিভিন্ন প্রতিনিধির পাঠানো রিপোর্টে এসব তথ্য পাওয়া গেছে-
শাহজালাল বিমানবন্দর : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। এখানে প্রবাসীরা নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এখানে প্রতিদিন দুই-তিন হাজার প্রবাসী নমুনা পরীক্ষা করতে আসেন। তাদের অভিযোগ-বিমানবন্দরে ৬টি প্রতিষ্ঠানের ১৬টি বুথে নমুনা সংগ্রহ করায় তাদের দীর্ঘ সময় লাইনে থাকতে হচ্ছে। বুথ বাড়ানো উচিত। পরীক্ষার ফল পেতেও বেশি সময় লাগছে। তাই যাত্রার আগে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা তাদের বিমানবন্দরেই কাটাতে হচ্ছে। তারা বোর্ডিং পাশ, ইমিগ্রেশনসহ আনুষঙ্গিক কাজে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় অনেকে বাধ্য হয়ে যাত্রার একদিন আগেই বিমানবন্দর এলাকায় চলে আসছেন। দিনাজপুরের বাসিন্দা আলী আকবর জানান, করোনায় দেশে এসে টিকিট সংকটসহ নানা কারণে আটকা ছিলাম। এর মধ্যে আরব আমিরাত শর্ত দিয়েছে যে, র্যাপিড পিসিআর পরীক্ষা ছাড়া সে দেশে তারা প্রবেশ করতে দেবে না। এজন্য সোমবার বিকালেই তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে বিমানবন্দরে চলে এসেছেন। তিনি জানান, নমুনা রিপোর্ট পেতে তার সাড়ে ৫ ঘণ্টা লেগেছে। চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা সুমন সিকদার জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে হাতে বিমানবন্দরে আসার জন্য তাকে বলা হয়। তবে তার রিপোর্ট পেতে ৫ ঘণ্টা সময় লেগেছে। দীর্ঘ লাইনে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল (যশোর) : ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বেনাপোল বন্দর ও চেকপোস্টে তেমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখানে ট্রাকচালক ও হেলপারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ১০ হাজার বন্দর ব্যবহারকারী রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার থার্মার স্কেনার থাকলেও সেটি মনিটর করা হচ্ছে না। বেনাপোল বন্দরে ভারত থেকে আসা ট্রাক ড্রাইভার ও খালাসিদের মুখে নেই মাস্ক । আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাক রেখে প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্দরের ভেতর ও বাইরে। বুধবার দুপুর ১২টায় সরেজমিন এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার দেবনাথ দাস যার ট্রাক নং ৪৮৭৩ ও বিশ্বজিত দাস যার ট্রাক নং ৮৫১২ জানান, আমাদের কাছে কোনো মাস্ক নেই। বন্দর থেকে মাস্ক দেওয়া হয়নি। জিরো পয়েন্ট দিয়ে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে যেসব ট্রাক ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশ করছে, তাতে জীবাণুনাশক কোনো স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে না। মেডিকেল টিমের কোনো সদস্যকেও জিরো পয়েন্টে দেখা যায়নি। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা আছে। ট্রাকচালক ও হেলপারদের মাস্ক ব্যবহারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিন্তু তারা মানছেন না। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে, এখন থেকে শুধু ভারতীয় ট্রাকের চালক বন্দরে প্রবেশ করবে। কোনো খালাসিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু আহমেদ বলেন, ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রবেশের আগে মাস্ক ব্যবহার ও সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাক্স ছাড়া কাউকে ইমিগ্রেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ভোমরা (সাতক্ষীরা) : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে নানা ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই বন্দর দিয়ে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। এর মধ্যে ভারত থেকে আসে গড়ে ৩০০ পণ্যবাহী ট্রাক। তার সঙ্গে থাকে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকও। তারা যাতে কোনোভাবে ভারত থেকে ওমিক্রন নিয়ে বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটাতে না পারে সেজন্যই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আগত প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাকের চাকায় ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে ওয়াশ করা হচ্ছে। তাদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে। চালক ও তাদের সহকারীদের হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা এবং বন্দরের নির্দিষ্ট স্থানে তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও ঘোরাফেরা করতে পারবেন না বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা ওমিক্রন সংক্রমণমুক্ত থাকতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপপরিচালক আরও জানান, ভোমরা বন্দরে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য আমরা সবাইকে নিয়ে একটি বৈঠক করেছি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বন্দর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং কাস্টমস প্রতিনিধিরা। গত মঙ্গলবার থেকে ওমিক্রন প্রতিরোধে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মোংলা (বাগেরহাট) : ওমিক্রন ও করোনা সংক্রমণ রোধে মোংলা সমুদ্রবন্দরে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিকদের চলাচলের ওপর দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা এবং বন্দরে জাহাজ ভেড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দরের পাইলট ও কর্মচারীদের মাক্স ব্যবহার বাধ্যতামূলকসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিদেশি নাবিকদের সঙ্গে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, মোংলা বন্দরে প্রতিদিনই নিত্যনতুন পণ্যবাহী বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসে। আর এ বিদেশি জাহাজের নাবিকদের মাধ্যমে যাতে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ না ছড়াতে পারে এ কারণে সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে ইতোমধ্যে বন্দর এলাকায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিদেশি নাবিকরা যাতে বন্দর এলাকা এবং লোকালয় না আসতে পারে সে বিষয় পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বুধবার দুপুর নাগাদ পশুর চ্যানেল ও বন্দর জেটিতে পণ্যবাহী ১৯টি বিদেশি জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজে ৪ শতাধিক নাবিক আছে। এদের লোকালয় ও বন্দর এলাকায় যাতায়াতের ওপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার মো. আব্দুল হামিদ বলেন, বন্দর হাসপাতালে ২টি আইসোলেশন কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্দর জেটিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতে কড়াকড়ি আরোপসহ শারীরিক তামমাত্রা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়ছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব ও মাক্স ব্যবহার নিশ্চিত করতে বন্দর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।
বন্দরে নির্দেশনা আছে সক্ষমতা নেই
ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রস্তুতি
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকিতে
যুগান্তর প্রতিবেদন
১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় দেশের বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে তা বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন, স্ক্রিনিং মেশিং বসানো এবং সুরক্ষা সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। এতে যাত্রীরা দীর্ঘভোগান্তিতে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও ন্যূনতম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। বিশেষ করে বেনাপোল বন্দরের অবস্থা ভয়াবহ। বিভিন্ন প্রতিনিধির পাঠানো রিপোর্টে এসব তথ্য পাওয়া গেছে-
শাহজালাল বিমানবন্দর : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। এখানে প্রবাসীরা নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এখানে প্রতিদিন দুই-তিন হাজার প্রবাসী নমুনা পরীক্ষা করতে আসেন। তাদের অভিযোগ-বিমানবন্দরে ৬টি প্রতিষ্ঠানের ১৬টি বুথে নমুনা সংগ্রহ করায় তাদের দীর্ঘ সময় লাইনে থাকতে হচ্ছে। বুথ বাড়ানো উচিত। পরীক্ষার ফল পেতেও বেশি সময় লাগছে। তাই যাত্রার আগে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা তাদের বিমানবন্দরেই কাটাতে হচ্ছে। তারা বোর্ডিং পাশ, ইমিগ্রেশনসহ আনুষঙ্গিক কাজে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় অনেকে বাধ্য হয়ে যাত্রার একদিন আগেই বিমানবন্দর এলাকায় চলে আসছেন। দিনাজপুরের বাসিন্দা আলী আকবর জানান, করোনায় দেশে এসে টিকিট সংকটসহ নানা কারণে আটকা ছিলাম। এর মধ্যে আরব আমিরাত শর্ত দিয়েছে যে, র্যাপিড পিসিআর পরীক্ষা ছাড়া সে দেশে তারা প্রবেশ করতে দেবে না। এজন্য সোমবার বিকালেই তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে বিমানবন্দরে চলে এসেছেন। তিনি জানান, নমুনা রিপোর্ট পেতে তার সাড়ে ৫ ঘণ্টা লেগেছে। চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা সুমন সিকদার জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে হাতে বিমানবন্দরে আসার জন্য তাকে বলা হয়। তবে তার রিপোর্ট পেতে ৫ ঘণ্টা সময় লেগেছে। দীর্ঘ লাইনে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল (যশোর) : ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বেনাপোল বন্দর ও চেকপোস্টে তেমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখানে ট্রাকচালক ও হেলপারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ১০ হাজার বন্দর ব্যবহারকারী রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার থার্মার স্কেনার থাকলেও সেটি মনিটর করা হচ্ছে না। বেনাপোল বন্দরে ভারত থেকে আসা ট্রাক ড্রাইভার ও খালাসিদের মুখে নেই মাস্ক । আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাক রেখে প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্দরের ভেতর ও বাইরে। বুধবার দুপুর ১২টায় সরেজমিন এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার দেবনাথ দাস যার ট্রাক নং ৪৮৭৩ ও বিশ্বজিত দাস যার ট্রাক নং ৮৫১২ জানান, আমাদের কাছে কোনো মাস্ক নেই। বন্দর থেকে মাস্ক দেওয়া হয়নি। জিরো পয়েন্ট দিয়ে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে যেসব ট্রাক ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশ করছে, তাতে জীবাণুনাশক কোনো স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে না। মেডিকেল টিমের কোনো সদস্যকেও জিরো পয়েন্টে দেখা যায়নি। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা আছে। ট্রাকচালক ও হেলপারদের মাস্ক ব্যবহারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিন্তু তারা মানছেন না। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে, এখন থেকে শুধু ভারতীয় ট্রাকের চালক বন্দরে প্রবেশ করবে। কোনো খালাসিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু আহমেদ বলেন, ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রবেশের আগে মাস্ক ব্যবহার ও সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাক্স ছাড়া কাউকে ইমিগ্রেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ভোমরা (সাতক্ষীরা) : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে নানা ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই বন্দর দিয়ে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। এর মধ্যে ভারত থেকে আসে গড়ে ৩০০ পণ্যবাহী ট্রাক। তার সঙ্গে থাকে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকও। তারা যাতে কোনোভাবে ভারত থেকে ওমিক্রন নিয়ে বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটাতে না পারে সেজন্যই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আগত প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাকের চাকায় ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে ওয়াশ করা হচ্ছে। তাদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে। চালক ও তাদের সহকারীদের হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা এবং বন্দরের নির্দিষ্ট স্থানে তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও ঘোরাফেরা করতে পারবেন না বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা ওমিক্রন সংক্রমণমুক্ত থাকতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপপরিচালক আরও জানান, ভোমরা বন্দরে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য আমরা সবাইকে নিয়ে একটি বৈঠক করেছি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বন্দর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং কাস্টমস প্রতিনিধিরা। গত মঙ্গলবার থেকে ওমিক্রন প্রতিরোধে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মোংলা (বাগেরহাট) : ওমিক্রন ও করোনা সংক্রমণ রোধে মোংলা সমুদ্রবন্দরে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিকদের চলাচলের ওপর দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা এবং বন্দরে জাহাজ ভেড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দরের পাইলট ও কর্মচারীদের মাক্স ব্যবহার বাধ্যতামূলকসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিদেশি নাবিকদের সঙ্গে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, মোংলা বন্দরে প্রতিদিনই নিত্যনতুন পণ্যবাহী বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসে। আর এ বিদেশি জাহাজের নাবিকদের মাধ্যমে যাতে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ না ছড়াতে পারে এ কারণে সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে ইতোমধ্যে বন্দর এলাকায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিদেশি নাবিকরা যাতে বন্দর এলাকা এবং লোকালয় না আসতে পারে সে বিষয় পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বুধবার দুপুর নাগাদ পশুর চ্যানেল ও বন্দর জেটিতে পণ্যবাহী ১৯টি বিদেশি জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজে ৪ শতাধিক নাবিক আছে। এদের লোকালয় ও বন্দর এলাকায় যাতায়াতের ওপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার মো. আব্দুল হামিদ বলেন, বন্দর হাসপাতালে ২টি আইসোলেশন কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্দর জেটিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতে কড়াকড়ি আরোপসহ শারীরিক তামমাত্রা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়ছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব ও মাক্স ব্যবহার নিশ্চিত করতে বন্দর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023