দুর্নীতি অর্থ লোপাটসহ ৪২ উচ্চ ঝুঁকি শনাক্ত
jugantor
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স
দুর্নীতি অর্থ লোপাটসহ ৪২ উচ্চ ঝুঁকি শনাক্ত
অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল

  মিজান চৌধুরী  

২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডসহ ৪২ ধরনের উচ্চ ঝুঁকিতে পড়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানে বিরাজ করছে আরও ২৩ ধরনের মধ্যম এবং দুই ধরনের নিম্ন ঝুঁকি। প্রতিষ্ঠানটির ওপর বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য।

সম্প্রতি এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল আইডিআরএর কাছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

এ প্রতিবেদনটি পাঠায় আইডিআরএ। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আইডিআরএর কাছে এ প্রতিবেদন চাওয়া হয়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদনটি সম্প্রতি অর্থ বিভাগে দাখিল করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্ল্যাহ হারুন পাশা যুগান্তরকে জানান, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ওপর প্রাথমিক অডিট রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে। তা পর্যালোচনা করে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ প্রতিষ্ঠানটি যাতে ধ্বংস বা পরিচালনায় সমস্যা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। কারণ বিমা খাতে কয়েকটি ভালো কোম্পানির মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানটিও একটি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন খুবই আশাব্যঞ্জক। এখন এ প্রতিবেদনের মধ্যেই যাতে বিষয়টি সীমাবদ্ধ না থাকে। যারা এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কারণ দুর্নীতির টাকাগুলো সাধারণ মানুষের।

প্রতিবেদনে উচ্চ ঝুঁকির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-প্রধান কার্যালয় থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ খরচের হিসাব না থাকা, আর্থিক বিবরণীতে টাকার হিসাবে গরমিল ও প্রভাব বিস্তার, এজেন্টদের কম কমিশন দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। এছাড়া প্রিমিয়াম খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বড় অঙ্কের কর ফাঁকি, পারিবারিকভাবে অধিক শেয়ার ধরে রাখা, নিয়ম ভেঙে একাধিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার বিষয়টিও রয়েছে। এছাড়া কোরাম ছাড়াই মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, প্রতিষ্ঠানে পরিচালক নিয়োগের সঠিক তথ্য শেয়ার হোল্ডারদের অবহিত না করা, প্রতিষ্ঠানের সিইও আর্থিক সুবিধা নেওয়ার পর তা আর্থিক বিবরণীতে গোপন করা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে ডেল্টা সিকিউরিটি লিমিটেডের আর্থিক লেনদেনের তথ্য আর্থিক বিবরণীতে গোপন করার মতো ঘাটনা এ প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলছে।

উচ্চ ঝুঁকির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়, নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০টি প্রাইভেট কার ক্রয়, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার একাধিক গাড়ি বিলাসিতা, ডেল্টা লাইফ সিকিউরিটিজ কর্তৃক উচ্চ মূল্যে দুটি কার ক্রয়, গাড়ির মেইনটেন্যান্স ও খরচের হিসাব বোর্ড সভায় উপস্থাপন না করা, কাজ না করে বেতন গ্রহণ, কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন না করা, লাইসেন্সবিহীন এজেন্টকে কমিশন প্রদান ও কমিশনের টাকা নগদ প্রদান ও বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গরমিল রয়েছে।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইওর মৌখিক নির্দেশে কর অফিসের খরচের জন্য ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা উত্তোলন করলেও খরচের হিসাব দেখানো হয়নি। এছাড়া আর্থিক বিবরণীতে ১২৪ কোটি টাকার গরমিল পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত ২৪৪ কোটি টাকার প্রিমিয়াম বাবদ অর্থ আদায় করা হয়েছে। এজেন্ট কমিশন ৫ শতাংশ কম দেওয়ার ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে হিসাবের বাইরে। ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত সরকারের ভ্যাট বাবদ ৩৫ কোটি টাকা এবং ট্যাক্স বাবদ ৩৩০ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি।

এ দায় কোম্পানির হিসাবে যুক্ত না করে উদ্বৃত্ত বাড়িয়ে দেখানোর মাধ্যমে অতিরিক্ত লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এতে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিমা দাবির পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। এ কৌশল অবলম্বন করে অতিরিক্ত ২৮ কোটি টাকা বেশি মুনাফা দেখানো হয়। একইভাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বকেয়া পুনঃবিমা দাবির দায় থাকা সত্ত্বেও তা হিসাবভুক্ত করা হয়নি। আর্থিক হিসাবের এ কারচুপির মাধ্যমে কোম্পানির ৪৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত (সারপ্লাস) দেখিয়ে মুনাফা দেখানো হয়েছে। ওই মুনাফা থেকে লভ্যাংশের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। যা প্রকৃত পক্ষে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি। আইনত কোম্পানিতে একই পরিবারে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করা আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু দেখা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমানের পরিবারের শেয়ারের পরিমাণ ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

মধ্য মেয়াদি ঝুঁকির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১১ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের সিইও পদ খালি পড়ে আছে। এছাড়া প্রধান হিসাবরক্ষকের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকা ও দায় না থাকা, চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সিইও কর্তৃক বিনিয়োগ কমিটি গঠনকে মধ্য মেয়াদি ঝুঁকিতে ফেলছে প্রতিষ্ঠানকে।

অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দুর্নীতি ও অনিয়ম বিষয়ক প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অবহিত আছেন। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রশাসক নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলছে। এ জন্য সর্তকতার সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স

দুর্নীতি অর্থ লোপাটসহ ৪২ উচ্চ ঝুঁকি শনাক্ত

অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল
 মিজান চৌধুরী 
২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডসহ ৪২ ধরনের উচ্চ ঝুঁকিতে পড়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানে বিরাজ করছে আরও ২৩ ধরনের মধ্যম এবং দুই ধরনের নিম্ন ঝুঁকি। প্রতিষ্ঠানটির ওপর বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য।

সম্প্রতি এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল আইডিআরএর কাছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

এ প্রতিবেদনটি পাঠায় আইডিআরএ। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আইডিআরএর কাছে এ প্রতিবেদন চাওয়া হয়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদনটি সম্প্রতি অর্থ বিভাগে দাখিল করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্ল্যাহ হারুন পাশা যুগান্তরকে জানান, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ওপর প্রাথমিক অডিট রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে। তা পর্যালোচনা করে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ প্রতিষ্ঠানটি যাতে ধ্বংস বা পরিচালনায় সমস্যা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। কারণ বিমা খাতে কয়েকটি ভালো কোম্পানির মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানটিও একটি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন খুবই আশাব্যঞ্জক। এখন এ প্রতিবেদনের মধ্যেই যাতে বিষয়টি সীমাবদ্ধ না থাকে। যারা এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কারণ দুর্নীতির টাকাগুলো সাধারণ মানুষের।

প্রতিবেদনে উচ্চ ঝুঁকির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-প্রধান কার্যালয় থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ খরচের হিসাব না থাকা, আর্থিক বিবরণীতে টাকার হিসাবে গরমিল ও প্রভাব বিস্তার, এজেন্টদের কম কমিশন দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। এছাড়া প্রিমিয়াম খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বড় অঙ্কের কর ফাঁকি, পারিবারিকভাবে অধিক শেয়ার ধরে রাখা, নিয়ম ভেঙে একাধিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার বিষয়টিও রয়েছে। এছাড়া কোরাম ছাড়াই মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, প্রতিষ্ঠানে পরিচালক নিয়োগের সঠিক তথ্য শেয়ার হোল্ডারদের অবহিত না করা, প্রতিষ্ঠানের সিইও আর্থিক সুবিধা নেওয়ার পর তা আর্থিক বিবরণীতে গোপন করা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে ডেল্টা সিকিউরিটি লিমিটেডের আর্থিক লেনদেনের তথ্য আর্থিক বিবরণীতে গোপন করার মতো ঘাটনা এ প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলছে।

উচ্চ ঝুঁকির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়, নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০টি প্রাইভেট কার ক্রয়, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার একাধিক গাড়ি বিলাসিতা, ডেল্টা লাইফ সিকিউরিটিজ কর্তৃক উচ্চ মূল্যে দুটি কার ক্রয়, গাড়ির মেইনটেন্যান্স ও খরচের হিসাব বোর্ড সভায় উপস্থাপন না করা, কাজ না করে বেতন গ্রহণ, কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন না করা, লাইসেন্সবিহীন এজেন্টকে কমিশন প্রদান ও কমিশনের টাকা নগদ প্রদান ও বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গরমিল রয়েছে।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইওর মৌখিক নির্দেশে কর অফিসের খরচের জন্য ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা উত্তোলন করলেও খরচের হিসাব দেখানো হয়নি। এছাড়া আর্থিক বিবরণীতে ১২৪ কোটি টাকার গরমিল পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত ২৪৪ কোটি টাকার প্রিমিয়াম বাবদ অর্থ আদায় করা হয়েছে। এজেন্ট কমিশন ৫ শতাংশ কম দেওয়ার ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে হিসাবের বাইরে। ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত সরকারের ভ্যাট বাবদ ৩৫ কোটি টাকা এবং ট্যাক্স বাবদ ৩৩০ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি।

এ দায় কোম্পানির হিসাবে যুক্ত না করে উদ্বৃত্ত বাড়িয়ে দেখানোর মাধ্যমে অতিরিক্ত লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এতে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিমা দাবির পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। এ কৌশল অবলম্বন করে অতিরিক্ত ২৮ কোটি টাকা বেশি মুনাফা দেখানো হয়। একইভাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বকেয়া পুনঃবিমা দাবির দায় থাকা সত্ত্বেও তা হিসাবভুক্ত করা হয়নি। আর্থিক হিসাবের এ কারচুপির মাধ্যমে কোম্পানির ৪৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত (সারপ্লাস) দেখিয়ে মুনাফা দেখানো হয়েছে। ওই মুনাফা থেকে লভ্যাংশের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। যা প্রকৃত পক্ষে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি। আইনত কোম্পানিতে একই পরিবারে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করা আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু দেখা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমানের পরিবারের শেয়ারের পরিমাণ ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

মধ্য মেয়াদি ঝুঁকির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১১ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের সিইও পদ খালি পড়ে আছে। এছাড়া প্রধান হিসাবরক্ষকের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকা ও দায় না থাকা, চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সিইও কর্তৃক বিনিয়োগ কমিটি গঠনকে মধ্য মেয়াদি ঝুঁকিতে ফেলছে প্রতিষ্ঠানকে।

অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দুর্নীতি ও অনিয়ম বিষয়ক প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অবহিত আছেন। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রশাসক নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলছে। এ জন্য সর্তকতার সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন