উৎসবে কোটি টাকা খরচ করলেও ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যার্তরা: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
২৫ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাচ্ছে না। অথচ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য আনন্দ উৎসবে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। স্কুলগুলোতে ছুটি দেওয়া হয়েছে। আশপাশের জেলাগুলোতে সাজানো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু পাশের জেলাগুলোতে দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এমনভাবে সব জেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ১০ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্যায় মানুষ যে মারা যাচ্ছে তাদের বাঁচাতে সেভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সরকার যে ত্রাণ দিচ্ছে তা অত্যন্ত অপ্রতুল। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার। প্রত্যন্ত অনেক এলাকার মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। এতেই বোঝা যায়, এই সরকার জনগণের কল্যাণে নয়।
রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা সবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। তিনি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার এসব কথা সত্যের অপলাপ, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এ পর্যন্ত সিলেটে ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় শুকনো খাবার দিয়েছি ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯২টি পরিবারকে। রান্না করা খাবার, পানি দিয়েছি ৪ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের কাছে। নগদ অর্থ প্রদান করেছি ২৫ হাজার ৪শ পরিবারের কাছে। সুনামগঞ্জে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ওপরে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনাসহ অন্যান্য জেলায় বন্যার্তদের মাঝেও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ‘গুম’ হওয়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, চৌধুরী আলমের স্ত্রী হাসিনা চৌধুরী, বড় ছেলে আবু সাঈদ চৌধুরী, বড় মেয়ে মাহমুদা আক্তার, ছোট মেয়ে মাহফুজা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পরে মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান লন্ডনে গেছেন এবং তিনি আর রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন-আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুচলেকা দিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের পর কে আমেরিকা গিয়েছিলেন, সেটা আমরা সবাই জানি। নামটা নিতে চাই না।’
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, তারা ছাড়া বন্যার্তদের পাশে আর কেউ নেই, বিএনপির নেতারা ত্রাণকাজে নেই, শুধু বক্তৃতা করছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, নেতাদের কথা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। তারা প্রত্যেকে একেকজন জাহাবাজ মিথ্যাবাদী এবং তাদের মতো মিথ্যা কেউ বলতে পারে না। অনর্গল মিথ্যাচার করে। বন্যাদুগর্ত এলাকা দেখতে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে সিলেট যাওয়ার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষ যে কষ্টে আছে, তাদের বাঁচানোর ব্যবস্থা করা, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা-তার কোনো ব্যবস্থাই তারা করেনি। অথচ অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে গিয়ে ওপর দিয়ে ঘুরলেন। তিনি সার্কিট হাউসে হ্যালিপ্যাডে নেমেছেন, ১০ জন লোককে টোকেন ত্রাণ দিয়েছেন, তার পরে বলেছেন সব হয়ে যাবে।
বিএনপির ত্রাণ ফান্ডে ইউট্যাবের অর্থ সহায়তা : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বিএনপির জাতীয় ত্রাণ ফান্ডে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর হাতে ত্রাণের অর্থ তুলে দেন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
উৎসবে কোটি টাকা খরচ করলেও ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যার্তরা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাচ্ছে না। অথচ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য আনন্দ উৎসবে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। স্কুলগুলোতে ছুটি দেওয়া হয়েছে। আশপাশের জেলাগুলোতে সাজানো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু পাশের জেলাগুলোতে দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এমনভাবে সব জেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ১০ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্যায় মানুষ যে মারা যাচ্ছে তাদের বাঁচাতে সেভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সরকার যে ত্রাণ দিচ্ছে তা অত্যন্ত অপ্রতুল। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার। প্রত্যন্ত অনেক এলাকার মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। এতেই বোঝা যায়, এই সরকার জনগণের কল্যাণে নয়।
রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা সবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। তিনি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার এসব কথা সত্যের অপলাপ, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এ পর্যন্ত সিলেটে ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় শুকনো খাবার দিয়েছি ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯২টি পরিবারকে। রান্না করা খাবার, পানি দিয়েছি ৪ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের কাছে। নগদ অর্থ প্রদান করেছি ২৫ হাজার ৪শ পরিবারের কাছে। সুনামগঞ্জে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ওপরে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনাসহ অন্যান্য জেলায় বন্যার্তদের মাঝেও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ‘গুম’ হওয়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, চৌধুরী আলমের স্ত্রী হাসিনা চৌধুরী, বড় ছেলে আবু সাঈদ চৌধুরী, বড় মেয়ে মাহমুদা আক্তার, ছোট মেয়ে মাহফুজা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পরে মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান লন্ডনে গেছেন এবং তিনি আর রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন-আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুচলেকা দিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের পর কে আমেরিকা গিয়েছিলেন, সেটা আমরা সবাই জানি। নামটা নিতে চাই না।’
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, তারা ছাড়া বন্যার্তদের পাশে আর কেউ নেই, বিএনপির নেতারা ত্রাণকাজে নেই, শুধু বক্তৃতা করছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, নেতাদের কথা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। তারা প্রত্যেকে একেকজন জাহাবাজ মিথ্যাবাদী এবং তাদের মতো মিথ্যা কেউ বলতে পারে না। অনর্গল মিথ্যাচার করে। বন্যাদুগর্ত এলাকা দেখতে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে সিলেট যাওয়ার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষ যে কষ্টে আছে, তাদের বাঁচানোর ব্যবস্থা করা, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা-তার কোনো ব্যবস্থাই তারা করেনি। অথচ অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে গিয়ে ওপর দিয়ে ঘুরলেন। তিনি সার্কিট হাউসে হ্যালিপ্যাডে নেমেছেন, ১০ জন লোককে টোকেন ত্রাণ দিয়েছেন, তার পরে বলেছেন সব হয়ে যাবে।
বিএনপির ত্রাণ ফান্ডে ইউট্যাবের অর্থ সহায়তা : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বিএনপির জাতীয় ত্রাণ ফান্ডে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর হাতে ত্রাণের অর্থ তুলে দেন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।