দুষ্ট আমলারা পুরোনো বিধিবিধান কাজে লাগাচ্ছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
৩০ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, প্রশাসনের অনেক বিধি অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকরা এসব করেছেন, যদিও এখন বাস্তবতা নেই।
কিন্তু অনেক দুষ্ট আমলা পুরোনো বিধান চাতুরীর সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে এসব বদলানোর, তা সত্ত্বেও এসব পরিবর্তন করা যাচ্ছে না, নানা প্রতিবন্ধকতা এসে হাজির হয়। তবে আইনকে আইন দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বুধবার ‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ-সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এবং সংসদ-সদস্য এনামুল হক। প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু দেখা যায়, পঞ্চগড়ের কোনো প্রকল্পের পরিচালক ঢাকায় থাকছেন, এটা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজের এলাকায় কেউ থাকতে চাচ্ছেন না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীকে পাওয়া যায় না। তাদের নাটাই ঢাকায়। কিন্তু সুতা কাটা যাচ্ছে না।
অবকাঠামোকে দেশের প্রাণ বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অবকাঠামো আমাদের মূল লক্ষ্য। এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব হওয়ার দরকার। এছাড়া দেশের গ্রামীণ এলাকায় সড়কের নিচ দিয়ে আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা আছে। যাতে কৃষক নির্বিঘ্নে গরু নিয়ে রাস্তা পার হতে পারেন।
সংসদ-সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে দুর্নীতি ঢেকে রাখার প্রয়োজন নেই। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে। অনেক প্রকল্পের পরিচালক নতুন গাড়ি কিনছেন, যদিও তিনি এমনিতে গাড়ি পান। এমনকি প্রকল্প এলাকায় তাকে প্রতিদিন যেতেও হয় না। ফলে যেখানে তেলের খরচ নিলেই যথেষ্ট, সেখানে নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে।
এনামুল হক বলেন, প্রকল্প প্রণয়নের সময় প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই বা কস্ট-বেনিফিট অ্যানালাইসিস হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় মানুষের যাপিত জীবনের পরিবর্তনের বিষয়টি আমলে নেওয়া হচ্ছে না। উদাহরণ হিসাবে নিজ সংসদীয় এলাকা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার উদাহরণ দেন তিনি। বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার আগে সেখানে পাকা সড়ক ছিল ৫০ কিলোমিটার, এখন তা ৪০০ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এরপরও সেখানে সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। যদিও একসময় এত সড়ক হয়তো কাজে আসবে না। কারণ, সবাই যেভাবে শহরের দিকে চলে আসছে, তাতে একসময় ওখানে অত মানুষই থাকবে না।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এক্ষেত্রে পদ্মা সেতু আমাদের জন্য বড় নজির, যা নির্ধারিত (বর্ধিত) সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও বেশ কটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য আছে সরকারের। কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে এগুলো সুশাসনের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যাবে। এক্ষেত্রে ওইসিডির কাঠামো অনুসরণ করা যেতে পারে।
প্রকল্প তদারকির জন্য আইএমইডিকে শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
দুষ্ট আমলারা পুরোনো বিধিবিধান কাজে লাগাচ্ছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, প্রশাসনের অনেক বিধি অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকরা এসব করেছেন, যদিও এখন বাস্তবতা নেই।
কিন্তু অনেক দুষ্ট আমলা পুরোনো বিধান চাতুরীর সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে এসব বদলানোর, তা সত্ত্বেও এসব পরিবর্তন করা যাচ্ছে না, নানা প্রতিবন্ধকতা এসে হাজির হয়। তবে আইনকে আইন দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বুধবার ‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ-সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এবং সংসদ-সদস্য এনামুল হক। প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু দেখা যায়, পঞ্চগড়ের কোনো প্রকল্পের পরিচালক ঢাকায় থাকছেন, এটা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজের এলাকায় কেউ থাকতে চাচ্ছেন না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীকে পাওয়া যায় না। তাদের নাটাই ঢাকায়। কিন্তু সুতা কাটা যাচ্ছে না।
অবকাঠামোকে দেশের প্রাণ বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অবকাঠামো আমাদের মূল লক্ষ্য। এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব হওয়ার দরকার। এছাড়া দেশের গ্রামীণ এলাকায় সড়কের নিচ দিয়ে আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা আছে। যাতে কৃষক নির্বিঘ্নে গরু নিয়ে রাস্তা পার হতে পারেন।
সংসদ-সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে দুর্নীতি ঢেকে রাখার প্রয়োজন নেই। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে। অনেক প্রকল্পের পরিচালক নতুন গাড়ি কিনছেন, যদিও তিনি এমনিতে গাড়ি পান। এমনকি প্রকল্প এলাকায় তাকে প্রতিদিন যেতেও হয় না। ফলে যেখানে তেলের খরচ নিলেই যথেষ্ট, সেখানে নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে।
এনামুল হক বলেন, প্রকল্প প্রণয়নের সময় প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই বা কস্ট-বেনিফিট অ্যানালাইসিস হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় মানুষের যাপিত জীবনের পরিবর্তনের বিষয়টি আমলে নেওয়া হচ্ছে না। উদাহরণ হিসাবে নিজ সংসদীয় এলাকা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার উদাহরণ দেন তিনি। বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার আগে সেখানে পাকা সড়ক ছিল ৫০ কিলোমিটার, এখন তা ৪০০ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এরপরও সেখানে সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। যদিও একসময় এত সড়ক হয়তো কাজে আসবে না। কারণ, সবাই যেভাবে শহরের দিকে চলে আসছে, তাতে একসময় ওখানে অত মানুষই থাকবে না।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এক্ষেত্রে পদ্মা সেতু আমাদের জন্য বড় নজির, যা নির্ধারিত (বর্ধিত) সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও বেশ কটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য আছে সরকারের। কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে এগুলো সুশাসনের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যাবে। এক্ষেত্রে ওইসিডির কাঠামো অনুসরণ করা যেতে পারে।
প্রকল্প তদারকির জন্য আইএমইডিকে শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।