চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ম্যাক্সনের ভারতে রহস্যজনক মৃত্যু
চট্টগ্রাম ব্যুরো
০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামে একসময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার নূর নবী ওরফে ম্যাক্সনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ভারতের দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর এলাকায় সে মারা যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ম্যাক্সন ওই এলাকায় অর্পিতা পাল নামে এক নারীর সঙ্গে বসবাস করত। লাশ দেশে আনতে বৃহস্পতিবার ম্যাক্সনের পরিবারের দুই সদস্য চট্টগ্রামের ভারতীয় হাইকমিশনে ভিসার আবেদন করেছেন।
ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে সিএমপির পাঁচলাইশ থানা, বায়েজিদ বোস্তামি থানা ও চান্দগাঁও থানায় ২১টি মামলা রয়েছে। এসবের ১১টিতে ওয়ারেন্ট জারি রয়েছে। চট্টগ্রামে ২০১১ সালে গ্রেফতারের পর এই শিবির ক্যাডার ২০১৭ সাল পর্যন্ত জেলে ছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রথমে ওমান পরে ভারতে আত্মগোপন করে সে।
ম্যাক্সনের পরিবার সূত্র জানায়, দক্ষিণ কলকাতার অর্পিতা পাল নামে এক নারীর সঙ্গে ম্যাক্সনের চুক্তিভিত্তিক বিয়ে হয়েছিল। এক সপ্তাহ ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল।
মঙ্গলবার বিকালে ম্যাক্সন বাংলাদেশে তার ভাই নুরুল আবসারকে ফোন করে জানান, ভারতের পাসপোর্ট পেলেও অর্পিতা সেটা আটকে রেখেছে। তাকে চার লাখ টাকা দেওয়ার পরও আরও আড়াই লাখ টাকার জন্য পাসপোর্ট দিচ্ছে না। সোমবার রাতে এ নিয়ে ঝগড়া হলে ম্যাক্সন ওই নারীকে থাপ্পড় মারেন। তখন ওই নারী বাসা থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে আবার ফোন দিলে ম্যাক্সনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। গভীর রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ম্যাক্সনের ভাই আবসার আরও বলেন, ‘কলকাতার থানা থেকে জানানো হয়েছে ম্যাক্সন আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু সে আত্মহত্যা করতে পারে না। আমাদের ধারণা অর্পিতাই তাকে কৌশলে মেরে ফেলেছে।’
জানা যায়, ম্যাক্সন দেশ থেকে ওমানে পালিয়ে গিয়ে রংমিস্ত্রির কাজ করত। সেখানে নিজের পরিচয় ফাঁস হলে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ভারতের পশ্চিমবাংলার উত্তর চব্বিশ পরগনা এলাকায়। নাম পালটে তমাল চৌধুরীর ছদ্মনামে বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় বসবাস করে মাছের ব্যবসা করছিল ম্যাক্সন। এমনকি দালাল ধরে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টও জোগাড় করে। অর্পিতা নামে এক ভারতীয় নারীকেও নিজের বন্ধু হিসাবে রাখত তার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনার বারানগর থানার ডানলপ এলাকা থেকে দেশটির সিআইডি ম্যাক্সনকে গ্রেফতার করেছিল। তার বিরুদ্ধে ওইদিনই স্থানীয় বারানগর থানায় বিদেশি নাগরিকত্ব আইনে মামলা হয়।
দক্ষিণ কলকাতার অর্পিতা নামে ওই নারীর সঙ্গে ম্যাক্সনের চুক্তিভিত্তিক বিয়ে হয়েছিল। ওই নারী বিয়ের প্রমাণপত্র আদালতে দাখিল করলে গ্রেফতারের তিন দিনের মধ্যে সে জামিন পায়। এরপর থেকে তারা বর্ধমান জেলার কালীগঞ্জে একটি বাসায় একসঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ম্যাক্সনের ভারতে রহস্যজনক মৃত্যু
চট্টগ্রামে একসময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার নূর নবী ওরফে ম্যাক্সনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ভারতের দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর এলাকায় সে মারা যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ম্যাক্সন ওই এলাকায় অর্পিতা পাল নামে এক নারীর সঙ্গে বসবাস করত। লাশ দেশে আনতে বৃহস্পতিবার ম্যাক্সনের পরিবারের দুই সদস্য চট্টগ্রামের ভারতীয় হাইকমিশনে ভিসার আবেদন করেছেন।
ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে সিএমপির পাঁচলাইশ থানা, বায়েজিদ বোস্তামি থানা ও চান্দগাঁও থানায় ২১টি মামলা রয়েছে। এসবের ১১টিতে ওয়ারেন্ট জারি রয়েছে। চট্টগ্রামে ২০১১ সালে গ্রেফতারের পর এই শিবির ক্যাডার ২০১৭ সাল পর্যন্ত জেলে ছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রথমে ওমান পরে ভারতে আত্মগোপন করে সে।
ম্যাক্সনের পরিবার সূত্র জানায়, দক্ষিণ কলকাতার অর্পিতা পাল নামে এক নারীর সঙ্গে ম্যাক্সনের চুক্তিভিত্তিক বিয়ে হয়েছিল। এক সপ্তাহ ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল।
মঙ্গলবার বিকালে ম্যাক্সন বাংলাদেশে তার ভাই নুরুল আবসারকে ফোন করে জানান, ভারতের পাসপোর্ট পেলেও অর্পিতা সেটা আটকে রেখেছে। তাকে চার লাখ টাকা দেওয়ার পরও আরও আড়াই লাখ টাকার জন্য পাসপোর্ট দিচ্ছে না। সোমবার রাতে এ নিয়ে ঝগড়া হলে ম্যাক্সন ওই নারীকে থাপ্পড় মারেন। তখন ওই নারী বাসা থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে আবার ফোন দিলে ম্যাক্সনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। গভীর রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ম্যাক্সনের ভাই আবসার আরও বলেন, ‘কলকাতার থানা থেকে জানানো হয়েছে ম্যাক্সন আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু সে আত্মহত্যা করতে পারে না। আমাদের ধারণা অর্পিতাই তাকে কৌশলে মেরে ফেলেছে।’
জানা যায়, ম্যাক্সন দেশ থেকে ওমানে পালিয়ে গিয়ে রংমিস্ত্রির কাজ করত। সেখানে নিজের পরিচয় ফাঁস হলে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ভারতের পশ্চিমবাংলার উত্তর চব্বিশ পরগনা এলাকায়। নাম পালটে তমাল চৌধুরীর ছদ্মনামে বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় বসবাস করে মাছের ব্যবসা করছিল ম্যাক্সন। এমনকি দালাল ধরে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টও জোগাড় করে। অর্পিতা নামে এক ভারতীয় নারীকেও নিজের বন্ধু হিসাবে রাখত তার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনার বারানগর থানার ডানলপ এলাকা থেকে দেশটির সিআইডি ম্যাক্সনকে গ্রেফতার করেছিল। তার বিরুদ্ধে ওইদিনই স্থানীয় বারানগর থানায় বিদেশি নাগরিকত্ব আইনে মামলা হয়।
দক্ষিণ কলকাতার অর্পিতা নামে ওই নারীর সঙ্গে ম্যাক্সনের চুক্তিভিত্তিক বিয়ে হয়েছিল। ওই নারী বিয়ের প্রমাণপত্র আদালতে দাখিল করলে গ্রেফতারের তিন দিনের মধ্যে সে জামিন পায়। এরপর থেকে তারা বর্ধমান জেলার কালীগঞ্জে একটি বাসায় একসঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন।