৩৮ ঘণ্টা পর রিংকুকে জীবিত উদ্ধার
jugantor
তুরস্কে ভূমিকম্প
৩৮ ঘণ্টা পর রিংকুকে জীবিত উদ্ধার

  কূটনৈতিক প্রতিবেদক  

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন নিখোঁজ বাংলাদেশি গোলাম সাঈদ রিংকু (২৬)। ৩৮ ঘণ্টা পর তাকে তুরস্কের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ইস্তাম্বুলে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নূরে আলম মঙ্গলবার রাতে টেলিফোনে যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কনসাল জেনারেল জানান, উদ্ধারকারী দলকে দুপুরে রিংকু নামের বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন বলে বাংলাদেশের তরফে জানানো হয়। এরপর তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর আগে বগুড়া ব্যুরো জানায়, গাবতলী উপজেলায় রিংকুর নিখোঁজ হওয়ার খবরে তার বাবা-মা ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কাহরামানমারাসের একটি ভবনে বন্ধুদের সঙ্গে রিংকু থাকতেন। ভূমিকম্পে ভবনটি বিধ্বস্ত হলে বন্ধু নূরে আলম সেখান থেকে বের হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তিনি রিংকুর কোনো খোঁজ পাননি। সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি তিনি রিংকুর পরিবারকে অবহিত করেন। রিংকুর খোঁজ না পাওয়ায় তার গাবতলীর কাগইল গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় শোকের মাতম। রিংকুর নিখোঁজের বিষয়টি তার ছোট ভাই রিফাত হাসান নিশ্চিত করেছেন। তবে রাতে রিংকুকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়ার পর তার গ্রামের বাড়িতে স্বস্তি নেমে আসে।

চাচা হাসান বিন জলিল জানান, ভূমিকম্পের পর রিংকুর সঙ্গে ফোন অথবা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। রিংকু কি অবস্থায় আছে তা জানতে পারছিলাম না। মঙ্গলবার তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে তারা ফোন দিয়েছিলেন। সেখানকার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বিধ্বস্ত ভবনের বসবাসকারী নূরে আলমের সন্ধান পাওয়া গেলেও রিংকুর খোঁজ মেলেনি। তার সন্ধান জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। জলিল জানান, জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

গাবতলীর কাগইল ইউনিয়নের দেওনাই গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানীর দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় রিংকু। ২০১১ সালে কাগইল করুণাকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে রিংকু ২০১৩ সালে বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১৫ সালে বৃত্তি নিয়ে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে তুরস্কে পাড়ি জমান। সেখানকার কারামানমারাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগে তিনি অনার্স কোর্স শেষ করেন। মাস্টার্স শেষবর্ষে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি কলেজে তিনি পার্টটাইম শিক্ষকতা শুরু করেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খাহরামানমারাসের একটি ভবনে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি বসবাস করতেন। সোমবারের ভূমিকম্পের পর রিংকুর খোঁজ পাননি বন্ধুরা। সোমবার সন্ধ্যায় তার বন্ধু নূরে আলম বিষয়টি রিংকুর পরিবারকে অবহিত করেন। তার নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। রিংকুর সন্ধান পেতে বাবা ও মা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তা চেয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে রিংকু বাড়িতে এসেছিলেন।

তুরস্কে ভূমিকম্প

৩৮ ঘণ্টা পর রিংকুকে জীবিত উদ্ধার

 কূটনৈতিক প্রতিবেদক 
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন নিখোঁজ বাংলাদেশি গোলাম সাঈদ রিংকু (২৬)। ৩৮ ঘণ্টা পর তাকে তুরস্কের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ইস্তাম্বুলে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নূরে আলম মঙ্গলবার রাতে টেলিফোনে যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কনসাল জেনারেল জানান, উদ্ধারকারী দলকে দুপুরে রিংকু নামের বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন বলে বাংলাদেশের তরফে জানানো হয়। এরপর তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর আগে বগুড়া ব্যুরো জানায়, গাবতলী উপজেলায় রিংকুর নিখোঁজ হওয়ার খবরে তার বাবা-মা ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কাহরামানমারাসের একটি ভবনে বন্ধুদের সঙ্গে রিংকু থাকতেন। ভূমিকম্পে ভবনটি বিধ্বস্ত হলে বন্ধু নূরে আলম সেখান থেকে বের হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তিনি রিংকুর কোনো খোঁজ পাননি। সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি তিনি রিংকুর পরিবারকে অবহিত করেন। রিংকুর খোঁজ না পাওয়ায় তার গাবতলীর কাগইল গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় শোকের মাতম। রিংকুর নিখোঁজের বিষয়টি তার ছোট ভাই রিফাত হাসান নিশ্চিত করেছেন। তবে রাতে রিংকুকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়ার পর তার গ্রামের বাড়িতে স্বস্তি নেমে আসে।

চাচা হাসান বিন জলিল জানান, ভূমিকম্পের পর রিংকুর সঙ্গে ফোন অথবা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। রিংকু কি অবস্থায় আছে তা জানতে পারছিলাম না। মঙ্গলবার তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে তারা ফোন দিয়েছিলেন। সেখানকার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বিধ্বস্ত ভবনের বসবাসকারী নূরে আলমের সন্ধান পাওয়া গেলেও রিংকুর খোঁজ মেলেনি। তার সন্ধান জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। জলিল জানান, জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

গাবতলীর কাগইল ইউনিয়নের দেওনাই গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানীর দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় রিংকু। ২০১১ সালে কাগইল করুণাকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে রিংকু ২০১৩ সালে বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১৫ সালে বৃত্তি নিয়ে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে তুরস্কে পাড়ি জমান। সেখানকার কারামানমারাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগে তিনি অনার্স কোর্স শেষ করেন। মাস্টার্স শেষবর্ষে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি কলেজে তিনি পার্টটাইম শিক্ষকতা শুরু করেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খাহরামানমারাসের একটি ভবনে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি বসবাস করতেন। সোমবারের ভূমিকম্পের পর রিংকুর খোঁজ পাননি বন্ধুরা। সোমবার সন্ধ্যায় তার বন্ধু নূরে আলম বিষয়টি রিংকুর পরিবারকে অবহিত করেন। তার নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। রিংকুর সন্ধান পেতে বাবা ও মা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তা চেয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে রিংকু বাড়িতে এসেছিলেন।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

ঘটনাপ্রবাহ : তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প