হতাশা বাড়ছে শেয়ারবাজারে
jugantor
ফ্লোর প্রাইসে আটকা বহু কোম্পানি
হতাশা বাড়ছে শেয়ারবাজারে
অধিকাংশ কোম্পানি ক্রেতাশূন্য * বিনিয়োগকারীরা আবারও রাস্তায়

  মনির হোসেন  

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

শেয়ারবাজারে সংকট বাড়ছেই। ক্রেতাশূন্য বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার। টানা সাত মাস ফ্লোর প্রাইসে (নিুসীমা) আটকে আছে বাজার। অর্থাৎ কৃত্রিম সাপোর্ট দিয়ে বাজার ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২ শতাধিক কোম্পানির শেয়ারে কোনো ক্রেতা নেই। ফলে লেনদেন ২০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। নতুন কোনো আশার আলো নেই। ফলে হতাশ হয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ আবারও রাস্তায় নেমে এসেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে, শেয়ারবাজারে তার প্রভাব পড়ছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে বর্তমান বাজারে সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে তেমন কিছুই করার নেই। ফলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়ে বাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে ভিন্ন কথা।

জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সোমবার যুগান্তরকে বলেন, আশা করছি শিগগিরই বাজার ইতিবাচক হবে। কারণ এই মুহূর্তে বিভিন্ন কোম্পানির মূল্যস্তর যেখানে রয়েছে, তা যেকোনো বিনিয়োগকারীর জন্য আকর্ষণীয়। তবে তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস আপাতত উঠানো হচ্ছে না। কারণ এটি তুলে দেওয়া হলে সূচক কমবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে আমরা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। তিনি বলেন, বাজারের উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনো বাধা নয়। কারণ সূচক কিছুটা বাড়লে এটি এমনিতে উঠে যাবে। এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে কমিশন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা অস্বাভাবিক, তবে অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে বাজারের অবস্থা এরকমই হওয়া উচিত। তাদের মতে, গত ১০ বছরের বাজারের সমস্যাগুলো একই রকম। সেখানে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা বলছেন, করোনার পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি বড় ধরনের চাপে রয়েছে। শেয়ারবাজারে সরাসরি এর প্রভাব পড়েছে। অর্থনীতির খারাপ অবস্থার কারণে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে কমিশন। এর মানে হলো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম এই সীমার নিচে নামতে পারবে না। এর বাইরে বাজারে আগের সমস্যাই রয়েছে। যেমন ২০১০ সালে বাজারে বিপর্যয় হয়েছিল। ওই সময়ের সঙ্গে বর্তমান বাজারের বেশ কয়েকটি জায়গার মিল রয়েছে। সে সময় বাজারে মার্জিন ঋণ ছিল সীমাহীন। ভালো কোম্পানির সংখ্যা ছিল কম। কোম্পানির মৌলভিত্তি নয়, বিনিয়োগ ছিল গুজবনির্ভর। সূচকের উত্থান ছিল খুব দ্রুত। দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে পুঁজিবাজারের উত্থানের মিল ছিল না। বর্তমানে এর সবই বাজারে রয়েছে। উলটো করোনা ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বেশ কিছু কোম্পানির আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

অপর দিকে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের প্রত্যাশা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করতে সরকার বাজারে সাপোর্ট দেবে। তবে সূত্র বলছে, সরকারের সামনে ১০টি অগ্রাধিকার খাত থাকলে শেয়ারবাজার ১০ নম্বরেও নেই। অর্থাৎ সরকারের কাছে শেয়ারবাজারের গুরুত্ব কমেছে। অন্যদিকে আরেকটি সূত্র বলছে, ফ্লোর প্রাইস না তুললে বাজার ইতিবাচক হবে না। উলটো সংকট আরও বাড়বে। তাদের মতে, যারা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে তাদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। কারণ ঋণের সুদ প্রতিদিন বাড়ছে। এ ছাড়াও যেসব মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ ঋণ দিয়েছে তারাও বিপদে পড়েছে। তবে বাজার উন্নয়নে বিকল্প ভাবছে কমিশন। এজন্য তহবিল সংগ্রহের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজারকে সহায়তা দিতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজড ফান্ডকে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, স্বাভাবিক নিয়মে এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে। অর্থাৎ আজ কোনো শেয়ারের দাম ১০০ টাকা থাকলে আগামীকাল তার দাম ১১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। আবার দাম কমলে তা ৯০ টাকার নিচে নামতে পারবে না। শেয়ারবাজারের পরিভাষায় একে সার্কিট ব্রেকার বলা হয়। কিন্তু অর্থনীতিতে অস্থিরতাসহ নানা কারণে বাজারে টানা পতন হয়েছে। এ কারণে করোনার সময় অস্থিরতা ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু করেছে। এর নাম শেয়ারের ‘ফ্লোর প্রাইস’। এ ক্ষেত্রে কোনো শেয়ারের দামের ভিত্তি হবে আগের ৫ দিনের সর্বশেষ লেনদেনের (ক্লোজিং প্রাইস) গড় দর। কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। কিন্তু দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। এরপর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দরপতন ঠেকাতে চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। আর ইতোমধ্যে ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুই শতাধিক কোম্পানির লেনদেন আটকে আছে।

সোমবারের বাজারচিত্র : ডিএসইতে সোমবার ৩১০টি কোম্পানির তিন কোটি ৪১ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৬১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৮ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ৯৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। ডিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

শীর্ষ ১০ কোম্পানি : সোমবার ডিএসইতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হলো-বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেনেক্স ইনফোসিস, সী পার্ল বিচ, এডিএন টেলিকম, শাইনপুকুর সিরামিক, ইস্টার্ন হাউজিং, মুন্নু এগ্রো, জেমিনী সী ফুড, ইনট্রাকো রিফুয়েলিং এবং আলহাজ্ব টেক্সটাইল। ডিএসইতে সোমবার যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হলো-মেট্রো স্পিনিং, আমরা নেটওয়ার্ক, জেমিনী সী ফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন, এডিএন টেলিকম, জেনেক্স ইনফোসিস, মনোস্পুল পেপার, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার, বসুন্ধরা পেপার এবং জেএমআই হাসপাতাল। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হলো-সী পার্ল বীচ, বিডিকম অনলাইন, সোনালী আঁশ, জিল বাংলা সুগার, আরামিট, রাহিম টেক্সটাইল, দুলামিয়া কটন, এএমসিএল (প্রাণ), রেনউইক যজ্ঞেশ্বর এবং মেঘনা ইন্স্যুরেন্স।

ফ্লোর প্রাইসে আটকা বহু কোম্পানি

হতাশা বাড়ছে শেয়ারবাজারে

অধিকাংশ কোম্পানি ক্রেতাশূন্য * বিনিয়োগকারীরা আবারও রাস্তায়
 মনির হোসেন 
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

শেয়ারবাজারে সংকট বাড়ছেই। ক্রেতাশূন্য বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার। টানা সাত মাস ফ্লোর প্রাইসে (নিুসীমা) আটকে আছে বাজার। অর্থাৎ কৃত্রিম সাপোর্ট দিয়ে বাজার ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২ শতাধিক কোম্পানির শেয়ারে কোনো ক্রেতা নেই। ফলে লেনদেন ২০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। নতুন কোনো আশার আলো নেই। ফলে হতাশ হয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ আবারও রাস্তায় নেমে এসেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে, শেয়ারবাজারে তার প্রভাব পড়ছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে বর্তমান বাজারে সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে তেমন কিছুই করার নেই। ফলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়ে বাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে ভিন্ন কথা।

জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সোমবার যুগান্তরকে বলেন, আশা করছি শিগগিরই বাজার ইতিবাচক হবে। কারণ এই মুহূর্তে বিভিন্ন কোম্পানির মূল্যস্তর যেখানে রয়েছে, তা যেকোনো বিনিয়োগকারীর জন্য আকর্ষণীয়। তবে তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস আপাতত উঠানো হচ্ছে না। কারণ এটি তুলে দেওয়া হলে সূচক কমবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে আমরা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। তিনি বলেন, বাজারের উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনো বাধা নয়। কারণ সূচক কিছুটা বাড়লে এটি এমনিতে উঠে যাবে। এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে কমিশন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা অস্বাভাবিক, তবে অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে বাজারের অবস্থা এরকমই হওয়া উচিত। তাদের মতে, গত ১০ বছরের বাজারের সমস্যাগুলো একই রকম। সেখানে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা বলছেন, করোনার পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি বড় ধরনের চাপে রয়েছে। শেয়ারবাজারে সরাসরি এর প্রভাব পড়েছে। অর্থনীতির খারাপ অবস্থার কারণে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে কমিশন। এর মানে হলো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম এই সীমার নিচে নামতে পারবে না। এর বাইরে বাজারে আগের সমস্যাই রয়েছে। যেমন ২০১০ সালে বাজারে বিপর্যয় হয়েছিল। ওই সময়ের সঙ্গে বর্তমান বাজারের বেশ কয়েকটি জায়গার মিল রয়েছে। সে সময় বাজারে মার্জিন ঋণ ছিল সীমাহীন। ভালো কোম্পানির সংখ্যা ছিল কম। কোম্পানির মৌলভিত্তি নয়, বিনিয়োগ ছিল গুজবনির্ভর। সূচকের উত্থান ছিল খুব দ্রুত। দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে পুঁজিবাজারের উত্থানের মিল ছিল না। বর্তমানে এর সবই বাজারে রয়েছে। উলটো করোনা ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বেশ কিছু কোম্পানির আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

অপর দিকে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের প্রত্যাশা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করতে সরকার বাজারে সাপোর্ট দেবে। তবে সূত্র বলছে, সরকারের সামনে ১০টি অগ্রাধিকার খাত থাকলে শেয়ারবাজার ১০ নম্বরেও নেই। অর্থাৎ সরকারের কাছে শেয়ারবাজারের গুরুত্ব কমেছে। অন্যদিকে আরেকটি সূত্র বলছে, ফ্লোর প্রাইস না তুললে বাজার ইতিবাচক হবে না। উলটো সংকট আরও বাড়বে। তাদের মতে, যারা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে তাদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। কারণ ঋণের সুদ প্রতিদিন বাড়ছে। এ ছাড়াও যেসব মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ ঋণ দিয়েছে তারাও বিপদে পড়েছে। তবে বাজার উন্নয়নে বিকল্প ভাবছে কমিশন। এজন্য তহবিল সংগ্রহের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজারকে সহায়তা দিতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজড ফান্ডকে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, স্বাভাবিক নিয়মে এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে। অর্থাৎ আজ কোনো শেয়ারের দাম ১০০ টাকা থাকলে আগামীকাল তার দাম ১১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। আবার দাম কমলে তা ৯০ টাকার নিচে নামতে পারবে না। শেয়ারবাজারের পরিভাষায় একে সার্কিট ব্রেকার বলা হয়। কিন্তু অর্থনীতিতে অস্থিরতাসহ নানা কারণে বাজারে টানা পতন হয়েছে। এ কারণে করোনার সময় অস্থিরতা ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু করেছে। এর নাম শেয়ারের ‘ফ্লোর প্রাইস’। এ ক্ষেত্রে কোনো শেয়ারের দামের ভিত্তি হবে আগের ৫ দিনের সর্বশেষ লেনদেনের (ক্লোজিং প্রাইস) গড় দর। কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। কিন্তু দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। এরপর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দরপতন ঠেকাতে চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। আর ইতোমধ্যে ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুই শতাধিক কোম্পানির লেনদেন আটকে আছে।

সোমবারের বাজারচিত্র : ডিএসইতে সোমবার ৩১০টি কোম্পানির তিন কোটি ৪১ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৬১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৮ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ৯৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। ডিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

শীর্ষ ১০ কোম্পানি : সোমবার ডিএসইতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হলো-বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেনেক্স ইনফোসিস, সী পার্ল বিচ, এডিএন টেলিকম, শাইনপুকুর সিরামিক, ইস্টার্ন হাউজিং, মুন্নু এগ্রো, জেমিনী সী ফুড, ইনট্রাকো রিফুয়েলিং এবং আলহাজ্ব টেক্সটাইল। ডিএসইতে সোমবার যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হলো-মেট্রো স্পিনিং, আমরা নেটওয়ার্ক, জেমিনী সী ফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন, এডিএন টেলিকম, জেনেক্স ইনফোসিস, মনোস্পুল পেপার, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার, বসুন্ধরা পেপার এবং জেএমআই হাসপাতাল। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হলো-সী পার্ল বীচ, বিডিকম অনলাইন, সোনালী আঁশ, জিল বাংলা সুগার, আরামিট, রাহিম টেক্সটাইল, দুলামিয়া কটন, এএমসিএল (প্রাণ), রেনউইক যজ্ঞেশ্বর এবং মেঘনা ইন্স্যুরেন্স।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন