এলাকাভেদে বদলে যায় ফলের দাম
ঢাকার ইফতার বাজার
হক ফারুক আহমেদ
২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সারা দিন রোজা রাখার পর এক টুকরো আপেল বা তরমুজ, এক কোষ কমলা কিংবা একমুঠো আনার যে পরিতৃপ্তি এনে দেয়, তা অন্যকিছুতে পাওয়া যায় না। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে পেয়ারা ছাড়া কোনো কিছুই যেন মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে নেই।
তাই ইফতারে ফলের চাহিদা থাকলেও মনভরে এখন আর কেউ ফল খেতে পারেন না। এর ওপর এলাকাভেদে একই মানের ফলের দাম হেরফের হয়ে যায়।
রোজার এ সময় সবার অতিপ্রিয় একটি ফল তরমুজ। আড়ত থেকে পিস হিসাবে কেনা হলেও খুচরা বাজারে তরমুজ বিক্রি হয় কেজি দরে। রাজধানীর বাদামতলী ও মিরপুরে ফলের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে বর্তমানে ৫ থেকে সাড়ে ৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
সেই তরমুজ রাজধানীর ফল বিক্রেতারা বর্তমানে বিক্রি করছেন এলাকাভেদে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৬০ টাকায়। যে তরমুজ পুরান ঢাকা বা মোহাম্মদপুরে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, সেই একই তরমুজ বারিধারা বা গুলশানে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে। চেইন শপগুলোয় এ দাম অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি।
খুচরা বিক্রেতা হাশেম বলেন, এখন আমরা তরমুজে খুব বেশি লাভ করতে পারি না। কারণ, আড়তে তরমুজের দাম বেড়ে গেছে। গরম বাড়লে এ দাম সামনের দিনগুলোয় আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে যে দামে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে, তখন এ দামে পাওয়া যাবে না।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একই মানের ফল একেক এলাকায় একেক রকম, বিশেষ করে আমদানি করা ফল। চাইনিজ আপেল এলাকাভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবুজ আপেলসহ আরও কয়েক পদের আপেল বাজারে পাওয়া যায়, যেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৫০ টাকা কেজি দরে। কমলার দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ২২০-৩০০ টাকা। সেদিক থেকে আঙুরের দাম তুলনামূলক কিছুটা কম।
এক কেজি আঙুর ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন ফল। মজাদার কিউই ফলের দাম আকারভেদে ৮০০-১১০০ টাকা কেজি। স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকা কেজিতে। আনারের কেজি আকারভেদে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি।
রোজায় দেশি ফলে মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় কলা। কিন্তু সেই কলার দামও হাতের নাগালে নেই। চিনিচম্পা, বাংলা বা সবরি, যে কলাই হোক না কেন ৮০ টাকা ডজন দামের কমে কোনো কলা নেই। আনারসের দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা পিস।
ছোট পাকা বেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকায়। বড় বেল প্রতি পিস ১৫০-২০০ টাকা। মাঝারি সাইজের একটি ডাবের দামও এখন ১০০ টাকা। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে খুব ছোট আকারের চাইনিজ কমলা বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। এ কমলার দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০-২২০ টাকা। ফলের মধ্যে পেয়ারার দামই কিছুটা কম। ৬০-৮০ টাকা কেজিতে কিনতে পারছেন সবাই।
বারিধারায় ফল কিনতে আসা নাহিদ পারভেজ বলেন, একটি ডাবের দাম এবার শীতেও ১০০ টাকা ছিল। দাম একবার বেড়ে গেলে সেটা আর কমতে দেখি না। এখানে মানসম্মত ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সব ফলের দামই রাজধানীর অনেক এলাকা থেকে এখানে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ঢাকার ইফতার বাজার
এলাকাভেদে বদলে যায় ফলের দাম
সারা দিন রোজা রাখার পর এক টুকরো আপেল বা তরমুজ, এক কোষ কমলা কিংবা একমুঠো আনার যে পরিতৃপ্তি এনে দেয়, তা অন্যকিছুতে পাওয়া যায় না। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে পেয়ারা ছাড়া কোনো কিছুই যেন মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে নেই।
তাই ইফতারে ফলের চাহিদা থাকলেও মনভরে এখন আর কেউ ফল খেতে পারেন না। এর ওপর এলাকাভেদে একই মানের ফলের দাম হেরফের হয়ে যায়।
রোজার এ সময় সবার অতিপ্রিয় একটি ফল তরমুজ। আড়ত থেকে পিস হিসাবে কেনা হলেও খুচরা বাজারে তরমুজ বিক্রি হয় কেজি দরে। রাজধানীর বাদামতলী ও মিরপুরে ফলের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে বর্তমানে ৫ থেকে সাড়ে ৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
সেই তরমুজ রাজধানীর ফল বিক্রেতারা বর্তমানে বিক্রি করছেন এলাকাভেদে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৬০ টাকায়। যে তরমুজ পুরান ঢাকা বা মোহাম্মদপুরে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, সেই একই তরমুজ বারিধারা বা গুলশানে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে। চেইন শপগুলোয় এ দাম অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি।
খুচরা বিক্রেতা হাশেম বলেন, এখন আমরা তরমুজে খুব বেশি লাভ করতে পারি না। কারণ, আড়তে তরমুজের দাম বেড়ে গেছে। গরম বাড়লে এ দাম সামনের দিনগুলোয় আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে যে দামে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে, তখন এ দামে পাওয়া যাবে না।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একই মানের ফল একেক এলাকায় একেক রকম, বিশেষ করে আমদানি করা ফল। চাইনিজ আপেল এলাকাভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবুজ আপেলসহ আরও কয়েক পদের আপেল বাজারে পাওয়া যায়, যেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৫০ টাকা কেজি দরে। কমলার দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ২২০-৩০০ টাকা। সেদিক থেকে আঙুরের দাম তুলনামূলক কিছুটা কম।
এক কেজি আঙুর ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন ফল। মজাদার কিউই ফলের দাম আকারভেদে ৮০০-১১০০ টাকা কেজি। স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকা কেজিতে। আনারের কেজি আকারভেদে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি।
রোজায় দেশি ফলে মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় কলা। কিন্তু সেই কলার দামও হাতের নাগালে নেই। চিনিচম্পা, বাংলা বা সবরি, যে কলাই হোক না কেন ৮০ টাকা ডজন দামের কমে কোনো কলা নেই। আনারসের দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা পিস।
ছোট পাকা বেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকায়। বড় বেল প্রতি পিস ১৫০-২০০ টাকা। মাঝারি সাইজের একটি ডাবের দামও এখন ১০০ টাকা। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে খুব ছোট আকারের চাইনিজ কমলা বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। এ কমলার দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০-২২০ টাকা। ফলের মধ্যে পেয়ারার দামই কিছুটা কম। ৬০-৮০ টাকা কেজিতে কিনতে পারছেন সবাই।
বারিধারায় ফল কিনতে আসা নাহিদ পারভেজ বলেন, একটি ডাবের দাম এবার শীতেও ১০০ টাকা ছিল। দাম একবার বেড়ে গেলে সেটা আর কমতে দেখি না। এখানে মানসম্মত ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সব ফলের দামই রাজধানীর অনেক এলাকা থেকে এখানে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি।