আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
০৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
ফাইল ছবি

মৌসুম শেষ হতে না হতেই লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। কাটা হচ্ছে ভোক্তার পকেট। শেষ পর্যন্ত দামের লাগাম টানতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজের বাজার সহনীয় করতে আমদানির বিকল্প নেই জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল। এর দুই সপ্তাহ পর দাম ১০০ টাকায় পৌঁছলে এই সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। রোববার বিকালে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (আজ) থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বা আইপি দেওয়া হবে। পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৮০ টাকায় পৌঁছে গেছে। ১০ মে প্রথমবারের মতো পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দাম না কমলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। তবে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই। প্রথমবারের মতো আমদানির কথা বলার ৯ দিন পর বাণিজ্যমন্ত্রী ফের একই কথা বলেন। কিন্তু নয় দিন পর ঢাকার বড় বাজারে পেঁয়াজ ৮০ টাকা, গলির বাজারে তা ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। একই দিন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এখনো বাজারটা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। আমরাও দেখছি পেঁয়াজের দামটা বাড়ছে। আমরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

২১ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেদিন রাজধানীতে এক আলোচনায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন পর্যাপ্ত হয়েছে। কিন্তু বেশি মুনাফা লাভের আশায় অনেকে পেঁয়াজ মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করছে। ভোক্তা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কয়েকদিনের ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান বাজার বিবেচনায় আমরা পেঁয়াজ আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।

কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে জানান, বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক পেঁয়াজ চাষি মুনাফা পাচ্ছেন, এটি ছিল আরও অপেক্ষার পেছনে তার যুক্তি। তবে বছরের এই সময়ে পেঁয়াজের দাম কোনোভাবেই প্রতিকেজি ৪৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে এ ধরনের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তারা খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন। ভেতরে ভেতরে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত জানানোর দিন রোববার রাজধানীতে দেশি পেঁয়াজের দর মানভেদে ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছিল বলে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ভেতরে ভেতরে যে ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন, তা আর প্রকাশ পায়নি। যে কারসাজির কথা বলা হয়েছে তার জন্য কেউ শাস্তিও পায়নি। সরকারি হিসাবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি এবার উৎপাদন ৩৪ লাখ টনের কাছাকাছি, যা বার্ষিক চাহিদার চেয়ে বেশি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন