টেকনাফে ৫ রোহিঙ্গা অপহরণ

কিশোরের কবজি কেটে অন্যদের হত্যার হুমকি

 কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি 
০৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
কিশোরের কবজি কেটে অন্যদের হত্যার হুমকি
প্রতীকী ছবি

মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে না আনায় অপহৃত পাঁচ রোহিঙ্গার মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক কিশোরের বাঁ হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাসায় পাঠিয়েছে অপহরণকারীরা। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা। শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে এ ঘটনা ঘটে।

জাহাঙ্গীর আলমের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার খবর পেয়ে ক্যাম্পের লোকজন শনিবার সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে এনজিও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে আলীখালী ক্যাম্প থেকে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিককে অপহরণ করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালীর ২৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সামসু আলমের ছেলে। অপহৃত অন্য ব্যক্তিরা হলেন-একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান, আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ এবং মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম এ তথ্য জানান।

ওই ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিককে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে জাহাঙ্গীর আলমকে একটি হাত বিচ্ছিন্ন করে, কাটা হাতসহ তাকে ফেলে রেখে যায়। তিনি জানান, অপহরণকারী চক্রটি অপহৃত অন্য চারজনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। না দিলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন সদস্য ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অপহরণের শিকার রোহিঙ্গাদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, আলীখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।

গেল আট মাসে টেকনাফে ৬৫ জন ব্যক্তি অপহরণের ঘটনা ঘটে। যেখানে গত ২৮ এপ্রিলে পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজার চৌফলদন্ডী উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগরপাড়ার মোহাম্মদ ইউছুপ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান। ২৪ মে টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিরা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন