ভুয়া সনদে দুই পদে চাকরি
কোম্পানীগঞ্জে হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
২৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ভুয়া সনদে অবৈধভাবে একই ক্যাম্পাসে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত থেকে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করে ফেঁসে যাওয়া অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় দেশ থেকে পালিয়ে আমেরিকা চলে গেছেন। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ। একই সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন তিনি। যোগ্যতা না থাকার পরও ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ পদে থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন এবং সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ইতোপূর্বে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর তার ব্যাখ্যা চাওয়ায় তিনি এর জবাব দিয়েছিলেন। গত ২২ নভেম্বর কারিগরি শিক্ষা অধিফতর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক মো. রিহান উদ্দিন সরেজমিন তদন্ত করে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ বিষয়ে অধিদফতরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থেকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে উভয় পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিধিমালায় আছে শিক্ষা জীবনে একটির অধিক তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। ১৯৯৫ সালের ২৪ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র এবং ১৯৯৬ সালের ১১ জুন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালায় বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্তাবলী অনুযায়ী তার কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না। এজন্য অধ্যক্ষ পদে তার নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি। বেসরকারি জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত প্রধান শিক্ষক স্ববেতনে নিয়োজিত থাকবেন। তার পদটি কোনো কারণে শূন্য হলে পদটি বিলুপ্ত হবে।
তবে প্রধান শিক্ষক কর্মরত থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষ নিয়োগ করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে। সে মোতাবেক সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুলের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থেকে ২০০৬ সালে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক পদের এমপিও গ্রহণ বিধিসম্মত হয়নি। প্রাপ্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অধ্যক্ষ সুলতানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা মোতাবেক তার এমপিও কেন স্থগিত, কর্তন বা বাতিল করা হবে না- সে বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণসহ তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল আমেরিকা যাওয়ার সময় কমিটির কাছে ছুটির কোনো আবেদন করেননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামাল পারভেজ জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরীকে পুনরায় শোকজ করেছে। তিনি দেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো কিছু অবহিত করেননি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কোম্পানীগঞ্জে হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ
ভুয়া সনদে দুই পদে চাকরি
ভুয়া সনদে অবৈধভাবে একই ক্যাম্পাসে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত থেকে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করে ফেঁসে যাওয়া অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় দেশ থেকে পালিয়ে আমেরিকা চলে গেছেন। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ। একই সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন তিনি। যোগ্যতা না থাকার পরও ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ পদে থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন এবং সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ইতোপূর্বে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর তার ব্যাখ্যা চাওয়ায় তিনি এর জবাব দিয়েছিলেন। গত ২২ নভেম্বর কারিগরি শিক্ষা অধিফতর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক মো. রিহান উদ্দিন সরেজমিন তদন্ত করে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ বিষয়ে অধিদফতরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থেকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে উভয় পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিধিমালায় আছে শিক্ষা জীবনে একটির অধিক তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। ১৯৯৫ সালের ২৪ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র এবং ১৯৯৬ সালের ১১ জুন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালায় বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্তাবলী অনুযায়ী তার কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না। এজন্য অধ্যক্ষ পদে তার নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি। বেসরকারি জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত প্রধান শিক্ষক স্ববেতনে নিয়োজিত থাকবেন। তার পদটি কোনো কারণে শূন্য হলে পদটি বিলুপ্ত হবে।
তবে প্রধান শিক্ষক কর্মরত থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষ নিয়োগ করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে। সে মোতাবেক সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুলের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থেকে ২০০৬ সালে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক পদের এমপিও গ্রহণ বিধিসম্মত হয়নি। প্রাপ্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অধ্যক্ষ সুলতানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা মোতাবেক তার এমপিও কেন স্থগিত, কর্তন বা বাতিল করা হবে না- সে বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণসহ তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। হাজারীহাট হাইস্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরী বাবুল আমেরিকা যাওয়ার সময় কমিটির কাছে ছুটির কোনো আবেদন করেননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামাল পারভেজ জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মদ চৌধুরীকে পুনরায় শোকজ করেছে। তিনি দেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো কিছু অবহিত করেননি।