মুক্তিপণ না পেলে অপহৃতকে হত্যা করা হতো
তিন অপহরণকারীর স্বীকারোক্তি
যুগান্তর প্রতিবেদন, সাভার
০২ মার্চ ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মহাসড়কের পাশের বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলে হাত-পা বেঁধে ও চোখে কালো চশমা পরিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেওয়া হতো। বাধা দিলে প্রচণ্ড মারধর করা হতো। এছাড়া যাত্রীকে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। মুক্তিপণ না পেলে অপহৃতকে হত্যা করে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হতো। সাভারে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ফজলুল হকের হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তিন অপহরণকারী সম্প্রতি পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ তথ্য জানায়।
ডিবি পরিদর্শক নাজমুল হাসান বলেন, ফজলুল হক হত্যার ঘটনার তদন্তভার ডিবি পুলিশের হাতে এলে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও জব্দ করা হয়। গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের মহাসড়কে প্রাইভেটকারে যাত্রী অপহরণ, মারধর ও হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা অপহরণকারীরা দিয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চশমার কাচে কালো টেপ মারা থাকত যাতে অপহৃতরা কিছু দেখতে না পায়। এরপর যাত্রীর নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নিয়ে অপহরণকারীরা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত।
আর মুক্তিপণ না পেলে ভুক্তভোগীদের হত্যা করে সড়কের পাশে লাশ ফেলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করত।
ডিবি পুলিশ জানায়, ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের উথুলি বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজধানীর মতিঝিল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফজলুলকে প্রাইভোটকারে ওঠায় আসামিরা। এরপর তার মোবাইল ফোনসেট ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা। এতে ফজলুল বাধা দিলে তার হাত-পা বেঁধে কালো চশমা পরিয়ে দেয় তারা। চিৎকার-চেঁচামেচি করলে তার গলায় মাফলার পেঁচিয়ে দুজন দুই দিক থেকে টেনে ধরলে তিনি মারা যান। সাভারের কমলাপুর এলাকার গোলাপ গ্রামে তার লাশ ফেলে মিরপুরের দিকে তারা চলে যায়। পরদিন খবর পেয়ে সাভার থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
গ্রেফতাররা হলো : পাবনার আমিনপুর থানার টাংবাড়ি গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে মাসুম শেখ (৩৫) ও সুজানগর থানার উদয়পুর মিয়াবাড়ি গ্রামের আশু মিয়ার ছেলে আব্দুর রব মিয়া (৪২) এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার রায়েরমহল গ্রামের শেখ কিসলু রহমানের ছেলে মোহাম্মদ জনি (৩২)। তারা সবাই রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করত। মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বাসিন্দা ফজলুল হক পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ছিলেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তিন অপহরণকারীর স্বীকারোক্তি
মুক্তিপণ না পেলে অপহৃতকে হত্যা করা হতো
মহাসড়কের পাশের বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলে হাত-পা বেঁধে ও চোখে কালো চশমা পরিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেওয়া হতো। বাধা দিলে প্রচণ্ড মারধর করা হতো। এছাড়া যাত্রীকে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। মুক্তিপণ না পেলে অপহৃতকে হত্যা করে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হতো। সাভারে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ফজলুল হকের হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তিন অপহরণকারী সম্প্রতি পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ তথ্য জানায়।
ডিবি পরিদর্শক নাজমুল হাসান বলেন, ফজলুল হক হত্যার ঘটনার তদন্তভার ডিবি পুলিশের হাতে এলে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও জব্দ করা হয়। গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের মহাসড়কে প্রাইভেটকারে যাত্রী অপহরণ, মারধর ও হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা অপহরণকারীরা দিয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চশমার কাচে কালো টেপ মারা থাকত যাতে অপহৃতরা কিছু দেখতে না পায়। এরপর যাত্রীর নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নিয়ে অপহরণকারীরা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত।
আর মুক্তিপণ না পেলে ভুক্তভোগীদের হত্যা করে সড়কের পাশে লাশ ফেলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করত।
ডিবি পুলিশ জানায়, ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের উথুলি বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজধানীর মতিঝিল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফজলুলকে প্রাইভোটকারে ওঠায় আসামিরা। এরপর তার মোবাইল ফোনসেট ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা। এতে ফজলুল বাধা দিলে তার হাত-পা বেঁধে কালো চশমা পরিয়ে দেয় তারা। চিৎকার-চেঁচামেচি করলে তার গলায় মাফলার পেঁচিয়ে দুজন দুই দিক থেকে টেনে ধরলে তিনি মারা যান। সাভারের কমলাপুর এলাকার গোলাপ গ্রামে তার লাশ ফেলে মিরপুরের দিকে তারা চলে যায়। পরদিন খবর পেয়ে সাভার থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
গ্রেফতাররা হলো : পাবনার আমিনপুর থানার টাংবাড়ি গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে মাসুম শেখ (৩৫) ও সুজানগর থানার উদয়পুর মিয়াবাড়ি গ্রামের আশু মিয়ার ছেলে আব্দুর রব মিয়া (৪২) এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার রায়েরমহল গ্রামের শেখ কিসলু রহমানের ছেলে মোহাম্মদ জনি (৩২)। তারা সবাই রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করত। মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বাসিন্দা ফজলুল হক পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ছিলেন।