চুয়াডাঙ্গার নারী মাদক ব্যবসায়ী শিপরা

৩২ বছরে ৫৩ মামলা গ্রেফতার হয়েছেন শতবার

 চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি 
২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

চুয়াডাঙ্গার আলোচিত মাদক ব্যবসায়ীর নাম শিপরা বেগম। ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা শিপরার অর্ধেক জীবনই পার হয়েছে মাদক ব্যবসা করে। ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৫৩টি। একবার-দুবার নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শতবার। অস্ত্রসহও গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। চুয়াডাঙ্গা জেলার আশপাশ এলাকার বহুল আলোচিত শিপরা বেগমকে ‘মাদক সম্রাজ্ঞী শিপরা’ নামেই সবাই চেনেন। জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম তিনি। পরিবারে শুধু তিনি একা নন, স্বামী-সন্তানসহ সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। শিপরা কারামুক্ত হয়ে আবার শুরু করেন মাদক ব্যবসা। সর্বশেষ মঙ্গলবার ভোরে শিপরা বেগমকে এক হাজার ৩৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। গ্রেফতার শিপরা বেগম চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বুজরুকগড়গড়ি গ্রামের প্রয়াত বাবুল হোসেনের স্ত্রী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পর্যবেক্ষণ, এক সময় গাঁজার ব্যবসা করতেন শিপরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার মাদক ব্যবসার ধরন বদলেছে। এখন তিনি মূলত ইয়াবা বিক্রি করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন জেলায়। ছড়িয়ে দেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। গোটা জেলার ইয়াবা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন শিপরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান বলেন, শিপরার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। তার বাড়িতে অসংখ্যবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। বেশিরভাগ সময়ই তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তার ঘরের ভেতরে রয়েছে গোপন দরজা। সেদিক দিয়ে তিনি কৌশলে পালিয়ে যেতে পারেন। একবার ঘরের ভেতরে ঢুকলে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শরীয়ত উল্লাহ বলেন, তার মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে জেলার সব প্রান্তে ইয়াবা পৌঁছে দেন তিনি। এতে তার নিয়ন্ত্রণে থাকেন জেলার অন্য ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। শিপরা কেন বারবার গ্রেফতারের পরেও ছাড়া পান এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, শিপরার মাদক ব্যবসা বিশাল। সে অনেক টাকার মালিক। অধিকাংশ মামলার জামিন সে হাইকোর্ট থেকে নিয়ে আসে। এছাড়া একজন নারী হিসাবে সে আইনে কিছুটা ছাড় পায়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন