কাহালুতে পুকুরের পাড় কেটে ড্রেন নির্মাণ
ময়লা পানিতে মরে যাচ্ছে মাছের রেণু * ১০ লাখ টাকার ক্ষতি
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়ার কাহালুর বুড়ইল গ্রামে আদালতে মামলা থাকার পরও জোরপূর্বক ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরপাড় কেটে ড্রেন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে ড্রেনের ময়লা পানি পুকুরে প্রবেশ করছে। যে কারণে অক্সিজেন লেভেল কমে রেণু মাছ মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ড্রেন দিয়ে রেণু মাছও বাইরে চলে যাচ্ছে। ড্রেন খোঁড়ার সময় ১০-১২টি ফলজ গাছ উপড়ে ফেলা হয়। এতে পুকুর মালিকের অন্তত ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে কাহালু উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার মেলেনি। উপরন্তু ড্রেন খননে জড়িতরা সরকারি ওই কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ভুক্তভোগী কামাল হোসেন ও তার পরিবার এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কাহালুর এসিল্যান্ড আবু মুসা জানান, পুকুর পাড়ে আগে থেকে পাঁচ ফুট চওড়া ড্রেন ছিল। অভিযোগকারী ২-৩ মাস আগে মাটি ফেলে ড্রেন বন্ধ করে সেখানে কয়েকটি গাছের চারা রোপণ করেন। এতে ২০-২৫টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পরিবারগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে। তাই মানবিক কারণে সাময়িকভাবে ড্রেনটি খনন করে দেওয়া হয়েছে।
পুকুরের মালিক কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, তাদের বাড়ির পূর্ব পাশে পাশাপাশি দুটি পুকুর ও মুরগির খামার রয়েছে। পুকুরে মাছ চাষ ও খামারে মুরগি পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। দক্ষিণ পাশে একটি ডোবার কাছে আগে ৮-১০টি বাড়ি ছিল। বর্তমানে অন্তত ২০টি বাড়ি হয়েছে। এসব বাড়ির ময়লা, মলমূত্রের পানি ও বৃষ্টির পানি ডোবায় গিয়ে পড়ে। ডোবাতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নোংরা পানি তাদের (কামাল) বাড়ির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ অবস্থায় প্রতিবেশী শাহজাহান আলী, জিয়াউল হক জিয়া, মো. মিলন, আবু সাঈদ ও ইয়াদ আলী পরস্পর যোগসাজশে তাদের ক্ষতি করতে পুকুর পাড়ের ওপর দিয়ে জোড়পূর্বক ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তারা ভবিষ্যতে ড্রেন নির্মাণ করার ব্যাপারে হুমকি দিয়ে যান। এ ব্যাপারে তার (কামাল) বাবা তোছাদ্দেক হোসেন বগুড়ার কাহালু সহকারী জজ আদালতে উল্লিখিত পাঁচজন ছাড়াও কাহালু সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পিএম বেলাল ও কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করে মামলা করেন। আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। মামলা চলমান থাকার বিষয়টি এসিল্যান্ড ও থানার ওসিকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। এরপরও ১৬ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এসিল্যান্ড ও কাহালু সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে উল্লিখিত পাঁচ বিবাদীসহ আরও ৩০-৪০ জন মিলে পুকুরপাড়ে জোরপূর্বক ড্রেন নির্মাণ করেন। এখন ড্রেনের ময়লা পানি পুকুরে ঢুকে রেণু মাছ মারা যাচ্ছে। ড্রেন দিয়ে পুকুরের মাছের রেণু বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে তাদের অন্তত ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
কামাল হোসেন আরও জানান, ওইসব বাড়ির পানি নিষ্কাশনে ড্রেন নির্মাণের বিকল্প জায়গা থাকলেও তা করা হয়নি। তারা জোরপূর্বক তাদের (কামাল) পুকুরের পাড় খনন করে ড্রেন নির্মাণ করেছেন। তিনি দাবি করেন, সেখানে আগে কোনো ড্রেন ছিল না। প্রতিবেশীরা শত্রুতাবশত তার ক্ষতি করতেই ড্রেন নির্মাণ করেন। কাহালু এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৭ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। বরং বিবাদীরা এসিল্যান্ডের দোহাই দিয়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।