রাতে হল থেকে বেরিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চাইলেন ছাত্রীরা
ঢাবির কুয়েত মৈত্রী হলে অসন্তোষ
ভিসির সঙ্গে আলোচনার পর ফিরে যান হলে
ঢাবি প্রতিনিধি
২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আবাসন সংকট, ক্যান্টিনে নিুমানের খাবার ও ছাত্রীদের নিত্য-নৈমিত্তিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে। দিনে দিনে জমা এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। বিভিন্ন বর্ষ ও বিভাগের অর্ধশত ছাত্রী সাড়ে ৯টায় হল থেকে বেরিয়ে অবস্থান নেন ভিসির বাসভবনের সামনে। খামখেয়ালি আচরণ ও দায়িত্বে উদাসীনতার জন্য প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। খবর পেয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিরা সেখানে ছুটে গিয়ে সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে আলোচনার জন্য ভিসির বাসভবনে প্রবেশ করে ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধি দল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসভবন থেকে বেরিয়ে হলে ফিরে যান ছাত্রীরা।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা জানান, হল প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করছেন না। অনেক ছাত্রী সময়মতো সিট পান না। আবার অনেকের কাছ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকা নিয়ে সিট দেওয়া হয়। অনেক সময় সিনিয়দের সিট না দিয়েই পক্ষপাতিত্ব করে জুনিয়রদের আগে সিট দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কোনো কথা বললেও তিনি শোনেন না। অনেক সময় কিছু কথা শুনলেও তার বাস্তবায়ন না করে, কেবল আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন।
তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের অন্য হলগুলোতে যেসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয় তা তাদের দেওয়া হয় না। ২৪ জানুয়ারি হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তাদের অত্যন্ত নিুমানের টিশার্ট, জুতা ও খাবার দেওয়া হয়। এ নিয়ে অন্যান্য হলের ছাত্রীদের টিকা-টিপ্পনির শিকার হন তারা। সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে মেয়েদের অন্য চারটি হল সাজানো হলেও কুয়েত মৈত্রী হল সাজানো হয়নি। এসবের পাশাপাশি রয়েছে ক্যান্টিনে নিুমানের খাবার। সর্বশেষ ক্ষোভ দানা বাঁধে ওই হলে আগুন লাগলে প্রাধ্যক্ষের উদাসীন ভূমিকার কারণে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষুব্ধ এক ছাত্রী বলেন, ‘আমি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী। আমার পরে আরও দুই ব্যাচ রয়েছে। তাদের অনেকেই সিট পেয়েছে। অথচ আমরা এখনো গণরুমে পড়ে আছি। তার (প্রাধ্যক্ষ) কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে কর্ণপাত করেন না। উলটো আমাদের শাসান। ক্যান্টিনের খাবারের মান খুব বাজে, খাওয়া যায় না। এসব বললেই আমরা তার চক্ষুশূলে পরিণত হয়ে যাই।’
শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক শাহীন খানসহ আরও অনেকে। তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। আলোচনা শেষ ভিসির বাসভবন থেকে ছাত্রীরা বের হলে তাদের হলে পৌঁছে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল তারা ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। এরপর ভিসি সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের কথা শুনেছেন।’ ছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুন নাহারকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ঢাবির কুয়েত মৈত্রী হলে অসন্তোষ
রাতে হল থেকে বেরিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চাইলেন ছাত্রীরা
ভিসির সঙ্গে আলোচনার পর ফিরে যান হলে
আবাসন সংকট, ক্যান্টিনে নিুমানের খাবার ও ছাত্রীদের নিত্য-নৈমিত্তিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে। দিনে দিনে জমা এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। বিভিন্ন বর্ষ ও বিভাগের অর্ধশত ছাত্রী সাড়ে ৯টায় হল থেকে বেরিয়ে অবস্থান নেন ভিসির বাসভবনের সামনে। খামখেয়ালি আচরণ ও দায়িত্বে উদাসীনতার জন্য প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। খবর পেয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিরা সেখানে ছুটে গিয়ে সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে আলোচনার জন্য ভিসির বাসভবনে প্রবেশ করে ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধি দল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসভবন থেকে বেরিয়ে হলে ফিরে যান ছাত্রীরা।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা জানান, হল প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করছেন না। অনেক ছাত্রী সময়মতো সিট পান না। আবার অনেকের কাছ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকা নিয়ে সিট দেওয়া হয়। অনেক সময় সিনিয়দের সিট না দিয়েই পক্ষপাতিত্ব করে জুনিয়রদের আগে সিট দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কোনো কথা বললেও তিনি শোনেন না। অনেক সময় কিছু কথা শুনলেও তার বাস্তবায়ন না করে, কেবল আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন।
তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের অন্য হলগুলোতে যেসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয় তা তাদের দেওয়া হয় না। ২৪ জানুয়ারি হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তাদের অত্যন্ত নিুমানের টিশার্ট, জুতা ও খাবার দেওয়া হয়। এ নিয়ে অন্যান্য হলের ছাত্রীদের টিকা-টিপ্পনির শিকার হন তারা। সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে মেয়েদের অন্য চারটি হল সাজানো হলেও কুয়েত মৈত্রী হল সাজানো হয়নি। এসবের পাশাপাশি রয়েছে ক্যান্টিনে নিুমানের খাবার। সর্বশেষ ক্ষোভ দানা বাঁধে ওই হলে আগুন লাগলে প্রাধ্যক্ষের উদাসীন ভূমিকার কারণে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষুব্ধ এক ছাত্রী বলেন, ‘আমি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী। আমার পরে আরও দুই ব্যাচ রয়েছে। তাদের অনেকেই সিট পেয়েছে। অথচ আমরা এখনো গণরুমে পড়ে আছি। তার (প্রাধ্যক্ষ) কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে কর্ণপাত করেন না। উলটো আমাদের শাসান। ক্যান্টিনের খাবারের মান খুব বাজে, খাওয়া যায় না। এসব বললেই আমরা তার চক্ষুশূলে পরিণত হয়ে যাই।’
শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক শাহীন খানসহ আরও অনেকে। তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। আলোচনা শেষ ভিসির বাসভবন থেকে ছাত্রীরা বের হলে তাদের হলে পৌঁছে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল তারা ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। এরপর ভিসি সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের কথা শুনেছেন।’ ছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুন নাহারকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।