জাতীয় কাবাডি কোচ জলিল এখন ব্রাত্য!
জাতীয় কাবাডিতে খেলে দেশকে পদক এনে দিয়েছেন। কোচ হিসেবেও বিদেশের মাটি থেকে ছিনিয়ে এনেছেন অনেক সাফল্য। দেশের অন্যতম সেরা সেই কোচ আবদুল জলিল এখন ব্রাত্য! অন্যদিকে জুনিয়র দলের কোচ হিসেবে কাজ করছেন আরেক সেরা কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস। বিদেশি কোচিং স্টাফের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন সফল দেশি কোচেরা।
খলিল উদ্দিন মিয়া ছিলেন কাবাডি খেলোয়াড়। তার বড় ছেলে আবদুল জলিল ১৯৮৮ সালে জাতীয় কাবাডি দলে সুযোগ পান। বাবার কাছে কাবাডিতে তার হাতেখড়ি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়। বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাবাডি দলের সাফল্যের অংশীদার ছিলেন জলিল। ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ সাফ গেমসে পান দলের অধিনায়কত্ব। আন্তর্জাতিক আসরে সেটাই ছিল তার শেষ খেলা। দেশকে রুপা এনে দেন। ১৯৯৫ সালে অধিনায়ক হিসেবে অবসর নেন জলিল। এরপর দেশের পুরুষ ও নারী দলকে বহুবার কোচিং করিয়ে সাফল্য তুলে এনেছেন। তার হাতে গড়া বাংলাদেশের বর্তমান দলের বেশির ভাগ কাবাডি খেলোয়াড়। সর্বশেষ ২০১৬ দক্ষিণ এশীয় গেমসে নারী কাবাডি দলের কোচ ছিলেন আবদুল জলিল। দেশকে এনে দেন রুপা। এছাড়াও কোচ হিসেবে ২০০২ বুসান এশিয়াডে রুপা, ২০০৬ সালে দোহা এশিয়াড থেকে ব্রোঞ্জ, ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ কাবাডিতে বাংলাদেশকে ব্রোঞ্জপদক এনে দেন। একই বছর ম্যাকাওতে অনুষ্ঠিত ইনডোর এশিয়ান গেমসেও ব্রোঞ্জ জেতান জলিল। ২০১০ সালে ঢাকা সাউথ এশিয়ান গেমসেও তার হাত ধরেই ব্রোঞ্জপদক জেতে বাংলাদেশ পুরুষ কাবাডি দল।
কোচিং ক্যারিয়ারের সাফল্যে জলিলকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যার
হাত ধরে দেশের জাতীয় খেলা কাবাডি এত পদক জিতেছে, আজ মূল্যহীন তিনিই! বিদেশি কোচিং স্টাফ আনা হয়েছে নেপাল এসএ গেমসের জন্য। ভারত থেকে আনা হয়েছে কোচ সাজু রামকে।
এসেছেন ভারতীয় টেকনিক্যাল ডিরেক্টর প্রাসাদ রাও এবং ইরানের ফিজিও হাসান এস্তাখর। প্রাসাদ রাও আবার এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশরে অন্যতম কর্তাও। ভারতীয় কোচ কিংবা কোচিং স্টাফ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। কাবাডির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের মনে রাখা উচিত যে, ২০১৬ সালে ভারতের গুয়াহাটি-শিলং এসএ গেমসে পুরুষ দলের কোচ হিসেবে আনা হয়েছিল ভারতের জগমোহনকে। কিন্তু আট দেশের ওই টুর্নামেন্টে চতুর্থ হয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ। যেখানে নারী দলকে রুপা জিতিয়েছিলেন জলিল।’ তিনি যোগ করেন, ‘ভারতীয়রা শুধু অর্থ হজম করেই চলে যাবেন। দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য কোনো দেশকেই সেরা হতে দেবেন না এ কোচেরা।’
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
জাতীয় কাবাডি কোচ জলিল এখন ব্রাত্য!
জাতীয় কাবাডিতে খেলে দেশকে পদক এনে দিয়েছেন। কোচ হিসেবেও বিদেশের মাটি থেকে ছিনিয়ে এনেছেন অনেক সাফল্য। দেশের অন্যতম সেরা সেই কোচ আবদুল জলিল এখন ব্রাত্য! অন্যদিকে জুনিয়র দলের কোচ হিসেবে কাজ করছেন আরেক সেরা কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস। বিদেশি কোচিং স্টাফের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন সফল দেশি কোচেরা।
খলিল উদ্দিন মিয়া ছিলেন কাবাডি খেলোয়াড়। তার বড় ছেলে আবদুল জলিল ১৯৮৮ সালে জাতীয় কাবাডি দলে সুযোগ পান। বাবার কাছে কাবাডিতে তার হাতেখড়ি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়। বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাবাডি দলের সাফল্যের অংশীদার ছিলেন জলিল। ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ সাফ গেমসে পান দলের অধিনায়কত্ব। আন্তর্জাতিক আসরে সেটাই ছিল তার শেষ খেলা। দেশকে রুপা এনে দেন। ১৯৯৫ সালে অধিনায়ক হিসেবে অবসর নেন জলিল। এরপর দেশের পুরুষ ও নারী দলকে বহুবার কোচিং করিয়ে সাফল্য তুলে এনেছেন। তার হাতে গড়া বাংলাদেশের বর্তমান দলের বেশির ভাগ কাবাডি খেলোয়াড়। সর্বশেষ ২০১৬ দক্ষিণ এশীয় গেমসে নারী কাবাডি দলের কোচ ছিলেন আবদুল জলিল। দেশকে এনে দেন রুপা। এছাড়াও কোচ হিসেবে ২০০২ বুসান এশিয়াডে রুপা, ২০০৬ সালে দোহা এশিয়াড থেকে ব্রোঞ্জ, ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ কাবাডিতে বাংলাদেশকে ব্রোঞ্জপদক এনে দেন। একই বছর ম্যাকাওতে অনুষ্ঠিত ইনডোর এশিয়ান গেমসেও ব্রোঞ্জ জেতান জলিল। ২০১০ সালে ঢাকা সাউথ এশিয়ান গেমসেও তার হাত ধরেই ব্রোঞ্জপদক জেতে বাংলাদেশ পুরুষ কাবাডি দল।
কোচিং ক্যারিয়ারের সাফল্যে জলিলকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যার
হাত ধরে দেশের জাতীয় খেলা কাবাডি এত পদক জিতেছে, আজ মূল্যহীন তিনিই! বিদেশি কোচিং স্টাফ আনা হয়েছে নেপাল এসএ গেমসের জন্য। ভারত থেকে আনা হয়েছে কোচ সাজু রামকে।
এসেছেন ভারতীয় টেকনিক্যাল ডিরেক্টর প্রাসাদ রাও এবং ইরানের ফিজিও হাসান এস্তাখর। প্রাসাদ রাও আবার এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশরে অন্যতম কর্তাও। ভারতীয় কোচ কিংবা কোচিং স্টাফ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। কাবাডির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের মনে রাখা উচিত যে, ২০১৬ সালে ভারতের গুয়াহাটি-শিলং এসএ গেমসে পুরুষ দলের কোচ হিসেবে আনা হয়েছিল ভারতের জগমোহনকে। কিন্তু আট দেশের ওই টুর্নামেন্টে চতুর্থ হয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ। যেখানে নারী দলকে রুপা জিতিয়েছিলেন জলিল।’ তিনি যোগ করেন, ‘ভারতীয়রা শুধু অর্থ হজম করেই চলে যাবেন। দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য কোনো দেশকেই সেরা হতে দেবেন না এ কোচেরা।’