ম্যারাডোনার মৃত্যু ঘিরে রহস্য
মরদেহ চুরির আশঙ্কায় সমাধিতে ২০০ সশস্ত্র পুলিশের পাহারা
স্পোর্টস ডেস্ক
০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
৬০ বছরের ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ জীবনে বিতর্ক ছিল তার ছায়াসঙ্গী। মৃত্যুর পরেও বুঝি সমস্যা থেকে নিস্তার নেই দিয়েগো ম্যারাডোনার। গত সপ্তাহে বুয়েনস এইরেসে নিজের বাসায় হৃদরোগে মৃত্যু হয় আর্জেন্টাইন ফুটবল নক্ষত্রের।
তার সেবিকার দাবি, মারা যাওয়ার আগে ম্যারাডোনা পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। সেই অবস্থায় তিনদিন তাকে একা ফেলে রাখা হয়। কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
এদিকে ম্যারাডোনার মরদেহ চুরি হতে পারে, এই আশঙ্কায় তার সমাধি পাহারা দেয়ার জন্য ২০০ সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের উপশহরে সমাধিস্থল ভেলা ভিস্তায় মা-বাবার পাশে ম্যারাডোনাকে সমাহিত করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর তিনি মারা যান। আর্জেন্টিনার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই খবর নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য সান।
কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, পাঁড় সমর্থকরা ম্যারাডোনার সমাধি ভেঙে ফেলতে পারে। প্রিয় তারকাকে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নিজের কাছে মমি করে রাখতে চুরি করতে পারে তার মরদেহ কিংবা দেহের কোনো অংশবিশেষ। এ কারণে পাহারা বসানো হয়েছে।
১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হুয়ান পেরনের সমাধি ভেঙে তার মরদেহ চুরি করেছিল কিছু অন্ধ ভক্ত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আর্জেন্টাইন পুলিশ। ম্যারাডোনার মৃত্যু চিকিৎসকের অবহেলার কারণে হয়েছে, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তার আইনজীবী এই অভিযোগ এনেছেন। এরই মাঝে সেবিকার নতুন অভিযোগ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পড়ে গিয়ে মাথার ডান দিকে আঘাত পাওয়ার পর এমআরআই স্ক্যানের জন্য ম্যারাডোনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অ্যাটর্নি রদোলফো বাকুয়ের দাবি, ‘ম্যারাডোনার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ছিল না। পড়ে যাওয়ার পর তিনদিন বাসায় নিজের কক্ষে একা ছিলেন তিনি। কেউ তার খোঁজখবর নেয়নি।’
প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, ম্যারাডোনার ২৪ বছরের এক ভাতিজা আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে শেষবার জীবিত দেখেছিলেন মৃত্যুর দিন সকালের নাশতার সময়। ম্যারাডোনা তখন ভাতিজাকে বলেছিলেন, ‘আমার ভালো লাগছে না।’ এরপরই তিনি বিছানায় যান এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রাতের পালায় দায়িত্বে থাকা সেবিকা পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, মৃত্যুর দিন সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে তিনি ম্যারাডোনাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেছিলেন।
সেসময় আর্জেন্টাইন লিজেন্ডের শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল স্বাভাবিক। এরপর তার দাবি, সকাল ৯টা ২০ মিনিটেও তিনি ম্যারাডোনাকে জীবিত দেখেছিলেন। অথচ এখন সেই সেবিকা বলছেন যে, তিনি ম্যারাডোনার রুমেই যাননি। তাকে মিথ্যা বলতে বলা হয়েছিল।
সেবিকার দু’রকমের কথায় রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। সারা জীবন যিনি বিতর্কের সঙ্গে সখ্য করেছিলেন, মৃত্যুর পর রহস্য যেন ম্যারাডোনার সঙ্গে বন্ধুতা করার পণ করেছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ম্যারাডোনার মৃত্যু ঘিরে রহস্য
মরদেহ চুরির আশঙ্কায় সমাধিতে ২০০ সশস্ত্র পুলিশের পাহারা
৬০ বছরের ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ জীবনে বিতর্ক ছিল তার ছায়াসঙ্গী। মৃত্যুর পরেও বুঝি সমস্যা থেকে নিস্তার নেই দিয়েগো ম্যারাডোনার। গত সপ্তাহে বুয়েনস এইরেসে নিজের বাসায় হৃদরোগে মৃত্যু হয় আর্জেন্টাইন ফুটবল নক্ষত্রের।
তার সেবিকার দাবি, মারা যাওয়ার আগে ম্যারাডোনা পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। সেই অবস্থায় তিনদিন তাকে একা ফেলে রাখা হয়। কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
এদিকে ম্যারাডোনার মরদেহ চুরি হতে পারে, এই আশঙ্কায় তার সমাধি পাহারা দেয়ার জন্য ২০০ সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের উপশহরে সমাধিস্থল ভেলা ভিস্তায় মা-বাবার পাশে ম্যারাডোনাকে সমাহিত করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর তিনি মারা যান। আর্জেন্টিনার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই খবর নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য সান।
কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, পাঁড় সমর্থকরা ম্যারাডোনার সমাধি ভেঙে ফেলতে পারে। প্রিয় তারকাকে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নিজের কাছে মমি করে রাখতে চুরি করতে পারে তার মরদেহ কিংবা দেহের কোনো অংশবিশেষ। এ কারণে পাহারা বসানো হয়েছে।
১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হুয়ান পেরনের সমাধি ভেঙে তার মরদেহ চুরি করেছিল কিছু অন্ধ ভক্ত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আর্জেন্টাইন পুলিশ। ম্যারাডোনার মৃত্যু চিকিৎসকের অবহেলার কারণে হয়েছে, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তার আইনজীবী এই অভিযোগ এনেছেন। এরই মাঝে সেবিকার নতুন অভিযোগ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পড়ে গিয়ে মাথার ডান দিকে আঘাত পাওয়ার পর এমআরআই স্ক্যানের জন্য ম্যারাডোনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অ্যাটর্নি রদোলফো বাকুয়ের দাবি, ‘ম্যারাডোনার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ছিল না। পড়ে যাওয়ার পর তিনদিন বাসায় নিজের কক্ষে একা ছিলেন তিনি। কেউ তার খোঁজখবর নেয়নি।’
প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, ম্যারাডোনার ২৪ বছরের এক ভাতিজা আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে শেষবার জীবিত দেখেছিলেন মৃত্যুর দিন সকালের নাশতার সময়। ম্যারাডোনা তখন ভাতিজাকে বলেছিলেন, ‘আমার ভালো লাগছে না।’ এরপরই তিনি বিছানায় যান এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রাতের পালায় দায়িত্বে থাকা সেবিকা পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, মৃত্যুর দিন সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে তিনি ম্যারাডোনাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেছিলেন।
সেসময় আর্জেন্টাইন লিজেন্ডের শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল স্বাভাবিক। এরপর তার দাবি, সকাল ৯টা ২০ মিনিটেও তিনি ম্যারাডোনাকে জীবিত দেখেছিলেন। অথচ এখন সেই সেবিকা বলছেন যে, তিনি ম্যারাডোনার রুমেই যাননি। তাকে মিথ্যা বলতে বলা হয়েছিল।
সেবিকার দু’রকমের কথায় রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। সারা জীবন যিনি বিতর্কের সঙ্গে সখ্য করেছিলেন, মৃত্যুর পর রহস্য যেন ম্যারাডোনার সঙ্গে বন্ধুতা করার পণ করেছে।