সত্য খবরকে প্রাধান্য দেয়
‘যুগান্তর’ শব্দটি যুগ-যুগান্তরের ঐতিহ্যের ছাপ বসিয়ে দেয় মননে, মস্তিষ্কে। পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা পড়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। নামটা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম কলকাতার ‘যুগান্তর’ বাংলাদেশে প্রকাশিত হওয়া শুরু হলো নাকি! ধীরে ধীরে বুঝলাম, গুণে-মানে, নিরপেক্ষতা আর দুরন্ত সাহস প্রকাশে কলকাতার যুগান্তরকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের ‘যুগান্তর’। যুগান্তরের লোগোটাও অসাধারণ শৈল্পিক, নান্দনিক এবং চুম্বকের মতো টানে পত্রিকা বিক্রির স্টলে সাজানো অসংখ্য পত্রিকার মধ্য থেকে।
কখনো কখনো মনে হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব আছে পত্রিকাটির ওপর। আবার কখনো মনে হয়েছে, বিকৃত না করে, বিশেষ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে প্রভাবিত না হয়ে সত্য খবরকে প্রাধান্য দেয় যুগান্তর। এটাও মনে হয়েছে, খবর-বিশ্লেষণে মুখ দেখে ছাড় দেয় না যুগান্তর। এ ধরনের মিশ্র অনুভব থেকে বুঝতে পারি যুগান্তর ঘিরে কোনো মিডিয়া-সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠতে পারেনি।
এটাও এ পত্রিকার একটি বড় সাফল্য। গণতন্ত্র বিকাশে সুস্পষ্ট পথে চলার চেষ্টা করে যুগান্তর, এমনটাও মনে হয়েছে।
যুগান্তরের ‘সাহিত্য সাময়িকী’ আমার প্রিয় একটি বিভাগ। দেখেছি মুখচেনা লেখকদের গল্প-প্রবন্ধ-কবিতাই কেবল এখানে ছাপা হয় না, নানা অঞ্চলের প্রতিভাবান লেখক-কবি-সাহিত্যিকগণ সাহিত্য সাময়িকীতে লেখালেখি করে ভূমিকা রাখতে পারছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হলো, সাহিত্য-প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হরিশংকর জলদাসের মতো প্রান্তিক প্রতিভাবান কথাসাহিত্যিককে তুলে আনা। ‘জলপুত্র’ যুগান্তরের সেরা উপন্যাস হিসাবে বিবেচিত হওয়ার পর থেকে আলোর দিকে ছুটে যাচ্ছেন তিনি। এখন জলদাস বাংলা সাহিত্যের হিমালয় চূড়ায় ওঠা একজন সফল ঔপন্যাসিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। স্মরণ করছি যুগান্তরের সাহিত্য বিভাগের সেই প্রতিযোগিতার কথা। তখন সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কবি মারুফ রায়হান।
একসময় আমার গল্প কিংবা বইয়ের বিশ্লেষণ ছাপা হতো। সাক্ষাৎকারও প্রকাশিত হয়েছে। ঈদ সংখ্যায়ও ডাক পেয়েছি। এখন তেমন একটা আহ্বান না পেলেও বুঝতে পারি বিপুলসংখ্যক কবি-সাহিত্যিককে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে বিভাগীয় সম্পাদক। এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
ঝকঝকে ছাপা পত্রিকাটির প্রথম পাতা, শেষ পাতা, খেলা, দশদিগন্ত, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, আনন্দনগর, বাতায়ন, বাংলার মুখ, নগর মহানগর ও আইটি বিশ্ব-প্রতিটি বিভাগই অসাধারণ। এমন একটি ভালো পত্রিকার যে ধরনের সার্কুলেশন হওয়ার কথা, তা হচ্ছে কি না জানি না। তবে পত্রিকার মানের মূল্যায়ন করে বলা যায়, দৈনিক যুগান্তর বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোর মধ্যে অনন্য একটি পত্রিকা।
পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অভিনন্দন জানাই সম্পাদক মহোদয় এবং এ প্রতিষ্ঠানের সব সংবাদকর্মীকে।
মোহিত কামাল : কথাসাহিত্যিক, বাংলা একাডেমি ফেলো, সম্পাদক, শব্দঘর
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সত্য খবরকে প্রাধান্য দেয়
‘যুগান্তর’ শব্দটি যুগ-যুগান্তরের ঐতিহ্যের ছাপ বসিয়ে দেয় মননে, মস্তিষ্কে। পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা পড়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। নামটা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম কলকাতার ‘যুগান্তর’ বাংলাদেশে প্রকাশিত হওয়া শুরু হলো নাকি! ধীরে ধীরে বুঝলাম, গুণে-মানে, নিরপেক্ষতা আর দুরন্ত সাহস প্রকাশে কলকাতার যুগান্তরকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের ‘যুগান্তর’। যুগান্তরের লোগোটাও অসাধারণ শৈল্পিক, নান্দনিক এবং চুম্বকের মতো টানে পত্রিকা বিক্রির স্টলে সাজানো অসংখ্য পত্রিকার মধ্য থেকে।
কখনো কখনো মনে হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব আছে পত্রিকাটির ওপর। আবার কখনো মনে হয়েছে, বিকৃত না করে, বিশেষ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে প্রভাবিত না হয়ে সত্য খবরকে প্রাধান্য দেয় যুগান্তর। এটাও মনে হয়েছে, খবর-বিশ্লেষণে মুখ দেখে ছাড় দেয় না যুগান্তর। এ ধরনের মিশ্র অনুভব থেকে বুঝতে পারি যুগান্তর ঘিরে কোনো মিডিয়া-সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠতে পারেনি।
এটাও এ পত্রিকার একটি বড় সাফল্য। গণতন্ত্র বিকাশে সুস্পষ্ট পথে চলার চেষ্টা করে যুগান্তর, এমনটাও মনে হয়েছে।
যুগান্তরের ‘সাহিত্য সাময়িকী’ আমার প্রিয় একটি বিভাগ। দেখেছি মুখচেনা লেখকদের গল্প-প্রবন্ধ-কবিতাই কেবল এখানে ছাপা হয় না, নানা অঞ্চলের প্রতিভাবান লেখক-কবি-সাহিত্যিকগণ সাহিত্য সাময়িকীতে লেখালেখি করে ভূমিকা রাখতে পারছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হলো, সাহিত্য-প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হরিশংকর জলদাসের মতো প্রান্তিক প্রতিভাবান কথাসাহিত্যিককে তুলে আনা। ‘জলপুত্র’ যুগান্তরের সেরা উপন্যাস হিসাবে বিবেচিত হওয়ার পর থেকে আলোর দিকে ছুটে যাচ্ছেন তিনি। এখন জলদাস বাংলা সাহিত্যের হিমালয় চূড়ায় ওঠা একজন সফল ঔপন্যাসিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। স্মরণ করছি যুগান্তরের সাহিত্য বিভাগের সেই প্রতিযোগিতার কথা। তখন সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কবি মারুফ রায়হান।
একসময় আমার গল্প কিংবা বইয়ের বিশ্লেষণ ছাপা হতো। সাক্ষাৎকারও প্রকাশিত হয়েছে। ঈদ সংখ্যায়ও ডাক পেয়েছি। এখন তেমন একটা আহ্বান না পেলেও বুঝতে পারি বিপুলসংখ্যক কবি-সাহিত্যিককে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে বিভাগীয় সম্পাদক। এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
ঝকঝকে ছাপা পত্রিকাটির প্রথম পাতা, শেষ পাতা, খেলা, দশদিগন্ত, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, আনন্দনগর, বাতায়ন, বাংলার মুখ, নগর মহানগর ও আইটি বিশ্ব-প্রতিটি বিভাগই অসাধারণ। এমন একটি ভালো পত্রিকার যে ধরনের সার্কুলেশন হওয়ার কথা, তা হচ্ছে কি না জানি না। তবে পত্রিকার মানের মূল্যায়ন করে বলা যায়, দৈনিক যুগান্তর বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোর মধ্যে অনন্য একটি পত্রিকা।
পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অভিনন্দন জানাই সম্পাদক মহোদয় এবং এ প্রতিষ্ঠানের সব সংবাদকর্মীকে।
মোহিত কামাল : কথাসাহিত্যিক, বাংলা একাডেমি ফেলো, সম্পাদক, শব্দঘর