নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
পেনশন, সঞ্চয়পত্র, বৃত্তি কেন সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে?
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে, যার সমাধান দরকার। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার আগে ‘সংজ্ঞাগত’ (ডেফিনেশন) কিছু আলোচনা দরকার। কারণ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ‘সংজ্ঞাগত’ সমস্যায় আক্রান্ত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা বাংলাদেশিরা সংজ্ঞা সমস্যায় ভীষণভাবে আক্রান্ত।
যেমন বেকারের সংজ্ঞা। বেকার কে? সারা দিন কাজ নেই, বছরের অর্ধেক সময় কাজ, অর্ধেক সময় বিনা কাজে, মাস্টার্স পাশ করে ঘরের কাজে ব্যাপৃত-এসব লোক কি বেকার/কর্মহীন? কারা পুরো বেকার, কারা অর্ধবেকার? কী কী শর্ত পূরণ করলে সরকারের বিবেচনায় একজনকে বেকার বলা হবে? বলা হয়ে থাকে, সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বেকারত্বের সংজ্ঞা অনুসরণ করে। সেই মোতাবেকই সমীক্ষা হয়। আমাদের বলা হয়-বেকারত্ব কমেছে অথবা বেড়েছে।
তাহলে দেখা যাক আইএলও’র বেকারের সংজ্ঞা কী। তাদের মতে, ‘৩০ দিন ধরে কাজের প্রত্যাশী একজন। তবে এরই মধ্যে মাত্র শেষ ৭ দিনে মজুরির বিনিময়ে কাজ করছে মাত্র ১ ঘণ্টা-বাকি সময় কাজ ছিল না’-এমন লোক হলে তিনি বেকার নন। অর্থাৎ মাসে ১ ঘণ্টা কাজ করলে তিনি ‘বেকার’ নন। প্রথম ধাক্কাতেই সমস্যা শেষ। আমাদের দেশে ঘণ্টাভিত্তিক কাজ হয় না। এখানে দৈনিক, মাসিক চুক্তিভিত্তিক কাজ হয়।
এ প্রেক্ষাপটে বলা চলে এই ‘সংজ্ঞা’ আমাদের ক্ষেত্রে একান্ত অবাস্তব একটা বিষয়। অথচ এটাই মানা হচ্ছে এবং তার ভিত্তিতেই তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যেমন বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের হিসাবায়ন। রিজার্ভ থেকে ডলার নিয়ে আলাদাভাবে ‘ফান্ড’ করে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অথচ সেই ডলার রিজার্ভে ধরে হিসাব করা হচ্ছে। এখানেও সংজ্ঞায় ভুল, যা আইএমএফ’র চাপে আমাদের বদলাতে হয়েছে। এ রকম বহু ক্ষেত্রে আমরা ‘সংজ্ঞাগত’ সমস্যায় ভুগছি। এতে ভুল বা অসত্য তথ্য প্রচারিত হচ্ছে।
মানুষ প্রকৃত সত্য জানতে পারছে না। লুকোচুরি হচ্ছে। এসব কাজ সাধারণত হিসাবরক্ষকরা করে থাকেন। তারা ‘আয়’ লুকাতে পারেন, ব্যয় বাড়াতে-কমাতে পারেন। মুনাফা কম-বেশি দেখাতে পারেন। একই পরিসংখ্যানকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে দারুণ দারুণ ‘লাভ-ক্ষতির হিসাব’, ‘ব্যালেন্স সিট’ তৈরি করতে পারেন। এক খাতের খরচকে ‘ডেবিট’ করতে গিয়ে আরেক খাতে ‘ডেবিট’ করতেও তারা পারদর্শী। এর ফলে অনেক সময় কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক চিত্র পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় না। মুশকিল হচ্ছে, এটা কোম্পানির বিষয়। তা হোক। কিন্তু সরকারি বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় যদি তা করে, তাহলে তো সমূহ বিপদ।
অথচ এমনটি ঘটেই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রের কথা বাদ দিলাম; এ কথা ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’ বা ‘সোশ্যাল সেফটি নেটের’ বেলায় একান্তভাবে প্রযোজ্য। ‘সামাজিক নিরাপত্তা’কে আবার কেউ কেউ ‘সামাজিক সুরক্ষা’ও বলে থাকে। যে যেভাবেই ডাকুক না কেন, এতে রয়েছে ‘সংজ্ঞাগত’ মারাÍক সব ভুল এবং তা করছে মন্ত্রণালয়/বিভাগ। জেনেবুঝে তারা তা করছে, নাকি না বুঝে করছে, এটা বলা মুশকিল। তবে যেহেতু বছরের পর বছর ধরে এ কাজটি করা হচ্ছে, তাই ধরেই নেওয়া যায় এ কাজে সবারই সম্মতি আছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সন্নিবেশিত পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, সামাজিক সুরক্ষা/সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এই অঙ্ক মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। বাজেট তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে সামাজিক খাতে বরাদ্দ ছিল মোট ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। এভাবে দেখলে বোঝা যায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রতিবছরই বরাদ্দ বাড়ছে এবং বাড়ছে মোটামুটি ভালোভাবেই, যদিও তা আশানুরূপ নয়। প্রশ্ন বরাদ্দের অঙ্ক নিয়ে নয়। প্রশ্ন ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ অধীনে কী কী পড়ে?
সাধারণত আমরা বুঝি এ কর্মসূচিটি গরিব ও অতিদরিদ্রদের জন্য, দুস্থদের জন্য-যাদের চলার কোনো ব্যবস্থা নেই। অসহায় নর-নারী, অসচ্ছল বিধবা ইত্যাদি শ্রেণির লোক এতে পড়বে, তারা খেয়ে-পরে বাঁচবে-এটাই আমাদের চাওয়া এবং তা ন্যায্য চাওয়া। কারণ রাষ্ট্র সবার ভাত-কাপড়-স্বাস্থ্য-গৃহ-শিক্ষা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। বলাই বাহুল্য, এটা হলে সবাই তা মেনে নেবে। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে কী হচ্ছে? কারা পাচ্ছে এসব টাকা? যারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এর সুবিধা নিচ্ছে, আমি তাদের কথা বলছি না। আমি বলছি সরকারের হিসাবেই কারা কত টাকা পাচ্ছে এ কর্মসূচির অধীনে? এর কি কোনো হিসাব আছে? আছে।
৪ মার্চ খবরের কাগজে প্রকাশিত তথ্যের আশ্রয় আমরা নিতে পারি। এসব তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, যারা দরিদ্র তাদের বাইরেও নানা শ্রেণির লোক সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে টাকা পাচ্ছেন। যেমন, অবসরভোগীদের ভাতা। অর্থাৎ পেনশনের টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। এই টাকাকে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে দেখানো হয়েছে। এটা কী করে হয়? সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা সারাজীবন চাকরি করে পেনশনে গেছেন। এটা চাকরির শর্ত। তাদের প্রাপ্য। এটা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্যের বিষয় নয়।
তারা দরিদ্র, অতিদরিদ্র বা দুস্থ বলে তাদের তা দেওয়া হচ্ছে না। যদি তা-ই হয় তাহলে ‘পেনশন’র টাকা ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে কীভাবে দেখানো হয়? এর যুক্তি কী, তা সরকারের উচিত বুঝিয়ে বলা। এটা কি ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতের বরাদ্দকে স্ফীত করে দেখানোর উদ্যোগ? যদি তাই হয়, তাহলে আইএমএফ’র বড় সাহেবরা কী করল? অন্যান্য ভুল ধরল অথচ এটা ধরল না কেন? নাকি তারাও মনে করে, অবসরভোগী/পেনশনাররা সরকারের দয়ায় বেঁচে আছে-প্রতি মাসে ভাতা পাচ্ছে?
এখানেই শেষ নয়। দেখা যাচ্ছে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে আছে সঞ্চয়পত্রে প্রদত্ত সুদ সহায়তা। সঞ্চয়পত্র তারাই কিনে যাদের সঞ্চয় আছে। তাতে সুদ দেওয়া হয় সরকার নির্ধারিত হারে, যা বাজার থেকে কখনো বেশি-কম হয়। সঞ্চয়পত্র না কিনলে তারা সেই টাকা ব্যাংকে আমানত হিসাবে রাখতে পারত। সরকার চায় সঞ্চয়পত্রে সঞ্চয় হোক। মানুষও তা চায়। এখন সঞ্চয়পত্রে আবার সুদ সহায়তা কী জিনিস? সরকার হয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি করবে একটা সুদে, অথবা করবে না।
প্রশ্ন আরও আছে। বলা হচ্ছে, সুদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর অগ্রিম আয়কর কেটে রাখা হচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। প্রশ্ন, কত সহায়তা দেওয়া হলো, আর কত আয়কর কাটা হলো? এসব তো গোঁজামিলের কথা। সঞ্চয়পত্র ৫ বছরের জন্য-এটা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। এসব ক্ষেত্রে সুদের হার বেশি হয় সব সময়ই। আমাদের ক্ষেত্রে কি তাই? মূল্যস্ফীতির তুলনায় কি সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি? সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে যে সুদ দেওয়া হয়, সঞ্চয়পত্রে কি তার চেয়ে বেশি সুদ দেওয়া হয়? অনেক প্রশ্ন।
আসা যাক আরেক ইস্যুতে। করোনা অতিমারিকালে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সুদ-ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। সুদ মওকুফ হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এটাও ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ কর্মসূচির অধীনে পড়ে। কোন যুক্তিতে এসব সুদ-ভর্তুকিকে এই খাতে দেখানো হচ্ছে, তা আমাদের বোঝানো দরকার সরকারের। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের যে বৃত্তি দেওয়া হয়, তাও নাকি ‘সামাজিক নিরাপত্তার’ অংশ। বৃত্তি তো ‘বৃত্তিই’। এটা কী করে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ কর্মসূচি হয়, তাও বোঝা যাচ্ছে না। ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতের হিসাবায়নে এসব করা হচ্ছে। কেন, কী কারণে, কারা এসব সরকারকে দিয়ে করাচ্ছে, তা জানা দরকার।
মোটা দাগে দেখা যায়, দরিদ্র ও অতিদরিদ্ররা গড়ে বরাদ্দের প্রায় ৬০ শতাংশের মতো পায়। বাকিটা পায় যারা দরিদ্র/অতিদরিদ্র ক্যাটাগরিতে কোনোভাবেই পড়ে না, তারা। সম্প্রতি একটি গবেষণা রিপোর্ট কাগজে প্রকাশিত (০৪.০৬.২৩) হয়েছে। এতে দেখা যায়, ২২ শতাংশ বরাদ্দের টাকা পায় পেনশনধারীরা। সঞ্চয়পত্রের সুদে যায় ১১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। এসএমই খাতে সুদ-ভর্তুকিতে যায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকিতে যায় ২১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পেছনে খরচ হিসাবে যায় ২ হাজার ও ৮ হাজার কোটি টাকা।
এভাবে দেখলে বোঝা যায় ‘সামাজিক সুরক্ষা’ খাতে যে খরচ দেখানো হয়, তার কিছু অংশ ‘সামাজিক সুরক্ষা’, বাকিটা নয়। অবশ্য আমরা জানি, পরিকল্পনা কমিশনের জরিপেও উঠে এসেছে যে, দরিদ্র ও অতিদরিদ্রদের যে তালিকার ভিত্তিতে সামাজিক সুরক্ষার টাকা প্রদান করা হয়, তা খুবই ত্রুটিপূর্ণ। এর ফলে যারা প্রকৃত দরিদ্র, অতিদরিদ্র, তারা ভাতা পায় না; যারা প্রকৃত দুস্থ, তারা ভাতা পায় না। পায় রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত লোকজন। এসব কারণে সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এবং জিডিপির যে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বরাদ্দ এ খাতে, তাও প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ তা হওয়া উচিত নয়।
দেখা যাচ্ছে, ঢাকা শহরে নতুন করে মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। অনেক নিুবিত্তও দুস্থের পর্যায়ে পড়েন। মধ্যবিত্তেরও কষ্টের সীমা নেই। মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ খবর খুবই খারাপ। এটা এখন কার্যত ১০ শতাংশ, যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মানুষের কষ্টের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এ অবস্থায় সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। উন্নয়নের পাশাপাশি এর চাহিদা বাড়ছে।
মনে হচ্ছে, উন্নয়নের সহযোগী বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি; সেই সঙ্গে তাই বাড়ছে সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা। অবশ্য কেউ কেউ একে অপছন্দ করছেন। তারা বলছেন, আমরা বাঁচার জন্য সরকারের দয়া-দাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছি। স্বনির্ভর হতে পারছি না। যার যার ভাত-কাপড় সে সে রোজগার করে নেবে, তা হচ্ছে না। কথাটা বড়ই সত্যি। কিন্তু তাহলেও বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা ভর্তুকি ও ভাতানির্ভর ‘জাতি’তে পরিণত হয়েছি। এর কারণ, সরকারের হাতে পর্যাপ্ত রাজস্ব নেই। যা আয় হচ্ছে তার বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে সরকারের দৈনন্দিন কাজ চালাতে, সুদে ও ভর্তুকিতে। উন্নয়নের টাকা হাতে নেই। উন্নয়নের কাজ চলে দেশি-বিদেশি ঋণে, যা দিন দিন বাড়ছে।
এ অবস্থায় রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই-এ কথা সবাই বলছে। সরকারও তা-ই চায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে সরকার কোনো পথ না পেয়ে সাধারণ মানুষের হাত থেকে কর নিতে উদ্যত হয়েছে। আয়কর আইন আছে। তাতে করযোগ্য আয়ের কথা আছে। যাদের আয় এর উপরে তারা কর দেবে। কিন্তু হচ্ছে উলটোটা; যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদেরও ২ হাজার টাকা করে কর দিতে হবে। আরও আছে। করযোগ্য যাদের আয় নেই, তাদের আমানতের ওপর যে সুদ পাওয়া যায়, তাতেও উৎসে ১৫ শতাংশ কর কেটে নেওয়া হচ্ছে। এসব তো অবিচার ছাড়া কিছু নয়। সাধারণ মানুষ ধনীদের সঙ্গে সমান হারে ভ্যাট দিতে যাচ্ছে, আমদানি শুল্কের বোঝা বহন করছে, তারপরও দেশ গঠনে তাদের নতুন করে ‘অবদান’ রাখতে হবে-এর যুক্তি কী?
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেনশন, সঞ্চয়পত্র, বৃত্তি কেন সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে?
নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
ড. আর এম দেবনাথ
১০ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে, যার সমাধান দরকার। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার আগে ‘সংজ্ঞাগত’ (ডেফিনেশন) কিছু আলোচনা দরকার। কারণ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ‘সংজ্ঞাগত’ সমস্যায় আক্রান্ত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা বাংলাদেশিরা সংজ্ঞা সমস্যায় ভীষণভাবে আক্রান্ত।
যেমন বেকারের সংজ্ঞা। বেকার কে? সারা দিন কাজ নেই, বছরের অর্ধেক সময় কাজ, অর্ধেক সময় বিনা কাজে, মাস্টার্স পাশ করে ঘরের কাজে ব্যাপৃত-এসব লোক কি বেকার/কর্মহীন? কারা পুরো বেকার, কারা অর্ধবেকার? কী কী শর্ত পূরণ করলে সরকারের বিবেচনায় একজনকে বেকার বলা হবে? বলা হয়ে থাকে, সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বেকারত্বের সংজ্ঞা অনুসরণ করে। সেই মোতাবেকই সমীক্ষা হয়। আমাদের বলা হয়-বেকারত্ব কমেছে অথবা বেড়েছে।
তাহলে দেখা যাক আইএলও’র বেকারের সংজ্ঞা কী। তাদের মতে, ‘৩০ দিন ধরে কাজের প্রত্যাশী একজন। তবে এরই মধ্যে মাত্র শেষ ৭ দিনে মজুরির বিনিময়ে কাজ করছে মাত্র ১ ঘণ্টা-বাকি সময় কাজ ছিল না’-এমন লোক হলে তিনি বেকার নন। অর্থাৎ মাসে ১ ঘণ্টা কাজ করলে তিনি ‘বেকার’ নন। প্রথম ধাক্কাতেই সমস্যা শেষ। আমাদের দেশে ঘণ্টাভিত্তিক কাজ হয় না। এখানে দৈনিক, মাসিক চুক্তিভিত্তিক কাজ হয়।
এ প্রেক্ষাপটে বলা চলে এই ‘সংজ্ঞা’ আমাদের ক্ষেত্রে একান্ত অবাস্তব একটা বিষয়। অথচ এটাই মানা হচ্ছে এবং তার ভিত্তিতেই তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যেমন বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের হিসাবায়ন। রিজার্ভ থেকে ডলার নিয়ে আলাদাভাবে ‘ফান্ড’ করে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অথচ সেই ডলার রিজার্ভে ধরে হিসাব করা হচ্ছে। এখানেও সংজ্ঞায় ভুল, যা আইএমএফ’র চাপে আমাদের বদলাতে হয়েছে। এ রকম বহু ক্ষেত্রে আমরা ‘সংজ্ঞাগত’ সমস্যায় ভুগছি। এতে ভুল বা অসত্য তথ্য প্রচারিত হচ্ছে।
মানুষ প্রকৃত সত্য জানতে পারছে না। লুকোচুরি হচ্ছে। এসব কাজ সাধারণত হিসাবরক্ষকরা করে থাকেন। তারা ‘আয়’ লুকাতে পারেন, ব্যয় বাড়াতে-কমাতে পারেন। মুনাফা কম-বেশি দেখাতে পারেন। একই পরিসংখ্যানকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে দারুণ দারুণ ‘লাভ-ক্ষতির হিসাব’, ‘ব্যালেন্স সিট’ তৈরি করতে পারেন। এক খাতের খরচকে ‘ডেবিট’ করতে গিয়ে আরেক খাতে ‘ডেবিট’ করতেও তারা পারদর্শী। এর ফলে অনেক সময় কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক চিত্র পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় না। মুশকিল হচ্ছে, এটা কোম্পানির বিষয়। তা হোক। কিন্তু সরকারি বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় যদি তা করে, তাহলে তো সমূহ বিপদ।
অথচ এমনটি ঘটেই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রের কথা বাদ দিলাম; এ কথা ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’ বা ‘সোশ্যাল সেফটি নেটের’ বেলায় একান্তভাবে প্রযোজ্য। ‘সামাজিক নিরাপত্তা’কে আবার কেউ কেউ ‘সামাজিক সুরক্ষা’ও বলে থাকে। যে যেভাবেই ডাকুক না কেন, এতে রয়েছে ‘সংজ্ঞাগত’ মারাÍক সব ভুল এবং তা করছে মন্ত্রণালয়/বিভাগ। জেনেবুঝে তারা তা করছে, নাকি না বুঝে করছে, এটা বলা মুশকিল। তবে যেহেতু বছরের পর বছর ধরে এ কাজটি করা হচ্ছে, তাই ধরেই নেওয়া যায় এ কাজে সবারই সম্মতি আছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সন্নিবেশিত পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, সামাজিক সুরক্ষা/সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এই অঙ্ক মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। বাজেট তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে সামাজিক খাতে বরাদ্দ ছিল মোট ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। এভাবে দেখলে বোঝা যায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রতিবছরই বরাদ্দ বাড়ছে এবং বাড়ছে মোটামুটি ভালোভাবেই, যদিও তা আশানুরূপ নয়। প্রশ্ন বরাদ্দের অঙ্ক নিয়ে নয়। প্রশ্ন ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ অধীনে কী কী পড়ে?
সাধারণত আমরা বুঝি এ কর্মসূচিটি গরিব ও অতিদরিদ্রদের জন্য, দুস্থদের জন্য-যাদের চলার কোনো ব্যবস্থা নেই। অসহায় নর-নারী, অসচ্ছল বিধবা ইত্যাদি শ্রেণির লোক এতে পড়বে, তারা খেয়ে-পরে বাঁচবে-এটাই আমাদের চাওয়া এবং তা ন্যায্য চাওয়া। কারণ রাষ্ট্র সবার ভাত-কাপড়-স্বাস্থ্য-গৃহ-শিক্ষা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। বলাই বাহুল্য, এটা হলে সবাই তা মেনে নেবে। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে কী হচ্ছে? কারা পাচ্ছে এসব টাকা? যারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এর সুবিধা নিচ্ছে, আমি তাদের কথা বলছি না। আমি বলছি সরকারের হিসাবেই কারা কত টাকা পাচ্ছে এ কর্মসূচির অধীনে? এর কি কোনো হিসাব আছে? আছে।
৪ মার্চ খবরের কাগজে প্রকাশিত তথ্যের আশ্রয় আমরা নিতে পারি। এসব তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, যারা দরিদ্র তাদের বাইরেও নানা শ্রেণির লোক সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে টাকা পাচ্ছেন। যেমন, অবসরভোগীদের ভাতা। অর্থাৎ পেনশনের টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। এই টাকাকে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে দেখানো হয়েছে। এটা কী করে হয়? সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা সারাজীবন চাকরি করে পেনশনে গেছেন। এটা চাকরির শর্ত। তাদের প্রাপ্য। এটা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্যের বিষয় নয়।
তারা দরিদ্র, অতিদরিদ্র বা দুস্থ বলে তাদের তা দেওয়া হচ্ছে না। যদি তা-ই হয় তাহলে ‘পেনশন’র টাকা ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে কীভাবে দেখানো হয়? এর যুক্তি কী, তা সরকারের উচিত বুঝিয়ে বলা। এটা কি ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতের বরাদ্দকে স্ফীত করে দেখানোর উদ্যোগ? যদি তাই হয়, তাহলে আইএমএফ’র বড় সাহেবরা কী করল? অন্যান্য ভুল ধরল অথচ এটা ধরল না কেন? নাকি তারাও মনে করে, অবসরভোগী/পেনশনাররা সরকারের দয়ায় বেঁচে আছে-প্রতি মাসে ভাতা পাচ্ছে?
এখানেই শেষ নয়। দেখা যাচ্ছে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতে আছে সঞ্চয়পত্রে প্রদত্ত সুদ সহায়তা। সঞ্চয়পত্র তারাই কিনে যাদের সঞ্চয় আছে। তাতে সুদ দেওয়া হয় সরকার নির্ধারিত হারে, যা বাজার থেকে কখনো বেশি-কম হয়। সঞ্চয়পত্র না কিনলে তারা সেই টাকা ব্যাংকে আমানত হিসাবে রাখতে পারত। সরকার চায় সঞ্চয়পত্রে সঞ্চয় হোক। মানুষও তা চায়। এখন সঞ্চয়পত্রে আবার সুদ সহায়তা কী জিনিস? সরকার হয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি করবে একটা সুদে, অথবা করবে না।
প্রশ্ন আরও আছে। বলা হচ্ছে, সুদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর অগ্রিম আয়কর কেটে রাখা হচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। প্রশ্ন, কত সহায়তা দেওয়া হলো, আর কত আয়কর কাটা হলো? এসব তো গোঁজামিলের কথা। সঞ্চয়পত্র ৫ বছরের জন্য-এটা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। এসব ক্ষেত্রে সুদের হার বেশি হয় সব সময়ই। আমাদের ক্ষেত্রে কি তাই? মূল্যস্ফীতির তুলনায় কি সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি? সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে যে সুদ দেওয়া হয়, সঞ্চয়পত্রে কি তার চেয়ে বেশি সুদ দেওয়া হয়? অনেক প্রশ্ন।
আসা যাক আরেক ইস্যুতে। করোনা অতিমারিকালে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সুদ-ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। সুদ মওকুফ হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এটাও ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ কর্মসূচির অধীনে পড়ে। কোন যুক্তিতে এসব সুদ-ভর্তুকিকে এই খাতে দেখানো হচ্ছে, তা আমাদের বোঝানো দরকার সরকারের। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের যে বৃত্তি দেওয়া হয়, তাও নাকি ‘সামাজিক নিরাপত্তার’ অংশ। বৃত্তি তো ‘বৃত্তিই’। এটা কী করে ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ কর্মসূচি হয়, তাও বোঝা যাচ্ছে না। ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ খাতের হিসাবায়নে এসব করা হচ্ছে। কেন, কী কারণে, কারা এসব সরকারকে দিয়ে করাচ্ছে, তা জানা দরকার।
মোটা দাগে দেখা যায়, দরিদ্র ও অতিদরিদ্ররা গড়ে বরাদ্দের প্রায় ৬০ শতাংশের মতো পায়। বাকিটা পায় যারা দরিদ্র/অতিদরিদ্র ক্যাটাগরিতে কোনোভাবেই পড়ে না, তারা। সম্প্রতি একটি গবেষণা রিপোর্ট কাগজে প্রকাশিত (০৪.০৬.২৩) হয়েছে। এতে দেখা যায়, ২২ শতাংশ বরাদ্দের টাকা পায় পেনশনধারীরা। সঞ্চয়পত্রের সুদে যায় ১১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। এসএমই খাতে সুদ-ভর্তুকিতে যায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকিতে যায় ২১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পেছনে খরচ হিসাবে যায় ২ হাজার ও ৮ হাজার কোটি টাকা।
এভাবে দেখলে বোঝা যায় ‘সামাজিক সুরক্ষা’ খাতে যে খরচ দেখানো হয়, তার কিছু অংশ ‘সামাজিক সুরক্ষা’, বাকিটা নয়। অবশ্য আমরা জানি, পরিকল্পনা কমিশনের জরিপেও উঠে এসেছে যে, দরিদ্র ও অতিদরিদ্রদের যে তালিকার ভিত্তিতে সামাজিক সুরক্ষার টাকা প্রদান করা হয়, তা খুবই ত্রুটিপূর্ণ। এর ফলে যারা প্রকৃত দরিদ্র, অতিদরিদ্র, তারা ভাতা পায় না; যারা প্রকৃত দুস্থ, তারা ভাতা পায় না। পায় রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত লোকজন। এসব কারণে সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এবং জিডিপির যে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বরাদ্দ এ খাতে, তাও প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ তা হওয়া উচিত নয়।
দেখা যাচ্ছে, ঢাকা শহরে নতুন করে মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। অনেক নিুবিত্তও দুস্থের পর্যায়ে পড়েন। মধ্যবিত্তেরও কষ্টের সীমা নেই। মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ খবর খুবই খারাপ। এটা এখন কার্যত ১০ শতাংশ, যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মানুষের কষ্টের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এ অবস্থায় সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। উন্নয়নের পাশাপাশি এর চাহিদা বাড়ছে।
মনে হচ্ছে, উন্নয়নের সহযোগী বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি; সেই সঙ্গে তাই বাড়ছে সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা। অবশ্য কেউ কেউ একে অপছন্দ করছেন। তারা বলছেন, আমরা বাঁচার জন্য সরকারের দয়া-দাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছি। স্বনির্ভর হতে পারছি না। যার যার ভাত-কাপড় সে সে রোজগার করে নেবে, তা হচ্ছে না। কথাটা বড়ই সত্যি। কিন্তু তাহলেও বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা ভর্তুকি ও ভাতানির্ভর ‘জাতি’তে পরিণত হয়েছি। এর কারণ, সরকারের হাতে পর্যাপ্ত রাজস্ব নেই। যা আয় হচ্ছে তার বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে সরকারের দৈনন্দিন কাজ চালাতে, সুদে ও ভর্তুকিতে। উন্নয়নের টাকা হাতে নেই। উন্নয়নের কাজ চলে দেশি-বিদেশি ঋণে, যা দিন দিন বাড়ছে।
এ অবস্থায় রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই-এ কথা সবাই বলছে। সরকারও তা-ই চায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে সরকার কোনো পথ না পেয়ে সাধারণ মানুষের হাত থেকে কর নিতে উদ্যত হয়েছে। আয়কর আইন আছে। তাতে করযোগ্য আয়ের কথা আছে। যাদের আয় এর উপরে তারা কর দেবে। কিন্তু হচ্ছে উলটোটা; যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদেরও ২ হাজার টাকা করে কর দিতে হবে। আরও আছে। করযোগ্য যাদের আয় নেই, তাদের আমানতের ওপর যে সুদ পাওয়া যায়, তাতেও উৎসে ১৫ শতাংশ কর কেটে নেওয়া হচ্ছে। এসব তো অবিচার ছাড়া কিছু নয়। সাধারণ মানুষ ধনীদের সঙ্গে সমান হারে ভ্যাট দিতে যাচ্ছে, আমদানি শুল্কের বোঝা বহন করছে, তারপরও দেশ গঠনে তাদের নতুন করে ‘অবদান’ রাখতে হবে-এর যুক্তি কী?
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023