নতুন মিশনে সৌদি-কাতার ট্রাম্প জামাতা
গত সপ্তাহেই গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এক সপ্তাহ যেতে না-যেতেই এবার নতুন মিশন নিয়ে একসঙ্গে সৌদি ও কাতার সফরে আসছেন মার্কিন সরকারের সিনিয়র উপদেষ্টা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার ও তার দল।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনাই এ সফরের লক্ষ্য বলে জানিয়েছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। আলজাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে গুপ্তহত্যার শিকার হন ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে চরম উত্তেজনা। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সফরে বের হচ্ছেন কুশনার। ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান প্রভৃতি আরব দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে প্রধান কুশীলব তিনিই।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে রোববার বলেছেন, এ সফরে সৌদি আরবের নিওম শহরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক হবে জারেড কুশনার ও তার টিমের। অন্যদিকে আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে কাতারে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এক্সিওজ বলেছে, বেশ কিছু ইস্যুতে একমত করাতে এবং চুক্তিতে আসতে সৌদি আরব ও কাতারের নেতাদের রাজি করাতে তোড়জোড় করে এই সফরে আসছেন কুশনার।
সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালে কাতারের বিরুদ্ধে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর। এক্ষেত্রে তারা দোহা’র কাছে ১৩টি দাবি সংবলিত একটি তালিকা তুলে দিয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। তারা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ এবং এমন অভিযোগ হল তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত।
এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন বলেছেন, উপসাগরীয় সংকট সমাধানই প্রশাসনের অগ্রাধিকারে রয়েছে। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগেই এ সমাধান সম্ভব হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাজনীতির একজন বিশেষজ্ঞ এবং ‘দ্য গালফ রিজিয়ন অ্যান্ড ইসরাইল’ বইয়ের লেখক সিগার্ড নিউবাউয়ার বলেছেন, ওই অবরোধের একটি সমাধান দৃশ্যমান। আমরা জানি না সেটা ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগে ঘটবে নাকি বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ঘটবে। তবে এটা অসম্ভব নয়। প্রশ্ন হল, কখন ঘটবে তা।
গত সপ্তাহের (রোববার) অতি গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এ সফরে তিনি নিওম শহরে বৈঠক করেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে।
বৈঠক শেষেই ওই রাতেই তিনি ফিরে যান ইসরাইলে। তবে বিষয়টি এতই গোপন রাখা হয়েছিল যে, তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পর্যন্ত তিনি এ সম্পর্কে জানাননি। সৌদি আরব এমন গোপন বৈঠকের কথা অস্বীকার করলেও নেতানিয়াহু কিন্তু হ্যাঁ বা না কিছুই বলেননি। ওই গোপন বৈঠক নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা।
ট্রাম্প প্রশাসন এখন ক্ষমতার মেয়াদের শেষের দিকে। তিনি বড়জোর আর দুই মাসের মতো ক্ষমতায় আছেন। এ সময়ে এমন গোপন বৈঠক কেন! এ নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। আবার এই বৈঠকের পরে শুক্রবার ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাকরিজাদেহকে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
নতুন মিশনে সৌদি-কাতার ট্রাম্প জামাতা
গত সপ্তাহেই গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এক সপ্তাহ যেতে না-যেতেই এবার নতুন মিশন নিয়ে একসঙ্গে সৌদি ও কাতার সফরে আসছেন মার্কিন সরকারের সিনিয়র উপদেষ্টা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার ও তার দল।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনাই এ সফরের লক্ষ্য বলে জানিয়েছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। আলজাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে গুপ্তহত্যার শিকার হন ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে চরম উত্তেজনা। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সফরে বের হচ্ছেন কুশনার। ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান প্রভৃতি আরব দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে প্রধান কুশীলব তিনিই।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে রোববার বলেছেন, এ সফরে সৌদি আরবের নিওম শহরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক হবে জারেড কুশনার ও তার টিমের। অন্যদিকে আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে কাতারে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এক্সিওজ বলেছে, বেশ কিছু ইস্যুতে একমত করাতে এবং চুক্তিতে আসতে সৌদি আরব ও কাতারের নেতাদের রাজি করাতে তোড়জোড় করে এই সফরে আসছেন কুশনার।
সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালে কাতারের বিরুদ্ধে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর। এক্ষেত্রে তারা দোহা’র কাছে ১৩টি দাবি সংবলিত একটি তালিকা তুলে দিয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। তারা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ এবং এমন অভিযোগ হল তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত।
এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন বলেছেন, উপসাগরীয় সংকট সমাধানই প্রশাসনের অগ্রাধিকারে রয়েছে। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগেই এ সমাধান সম্ভব হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাজনীতির একজন বিশেষজ্ঞ এবং ‘দ্য গালফ রিজিয়ন অ্যান্ড ইসরাইল’ বইয়ের লেখক সিগার্ড নিউবাউয়ার বলেছেন, ওই অবরোধের একটি সমাধান দৃশ্যমান। আমরা জানি না সেটা ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগে ঘটবে নাকি বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ঘটবে। তবে এটা অসম্ভব নয়। প্রশ্ন হল, কখন ঘটবে তা।
গত সপ্তাহের (রোববার) অতি গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এ সফরে তিনি নিওম শহরে বৈঠক করেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে।
বৈঠক শেষেই ওই রাতেই তিনি ফিরে যান ইসরাইলে। তবে বিষয়টি এতই গোপন রাখা হয়েছিল যে, তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পর্যন্ত তিনি এ সম্পর্কে জানাননি। সৌদি আরব এমন গোপন বৈঠকের কথা অস্বীকার করলেও নেতানিয়াহু কিন্তু হ্যাঁ বা না কিছুই বলেননি। ওই গোপন বৈঠক নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা।
ট্রাম্প প্রশাসন এখন ক্ষমতার মেয়াদের শেষের দিকে। তিনি বড়জোর আর দুই মাসের মতো ক্ষমতায় আছেন। এ সময়ে এমন গোপন বৈঠক কেন! এ নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। আবার এই বৈঠকের পরে শুক্রবার ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাকরিজাদেহকে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে।