মহামারি চলে যাচ্ছে বলে টিকা নিচ্ছে না কেউ
ভারতে রাজ্যে রাজ্যে আতঙ্ক
যুগান্তর ডেস্ক
২৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মহামারি চলে যাচ্ছে মনে করে ভারতের মানুষ টিকা নিতে উৎসাহী হচ্ছেন না। এ কারণে করোনার টিকাদান কর্মসূচিও প্রত্যাশা মতো অগ্রসর হচ্ছে না।
টিকা নিলে কোনো সমস্যা হয় কি না, এমন ভয়-আতঙ্ক এবং নিরাপত্তা উদ্বেগে এক-তৃতীয়াংশ মানুষের টিকা নেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট না নেওয়ার কারণ। এছাড়া টেকনিক্যাল ত্রুটি-বিচ্যুতি, সর্বোপরি মহামারি চলে যাচ্ছে-এমন ধারণাও টিকা নিতে অনীহার জন্য দায়ী। এএফপি।
ভারত এক সপ্তাহ আগে টিকা দেওয়া শুরু করে। প্রাথমিকভাবে দৈনিক তিন লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, জুলাই মাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা।
কিন্তু প্রথম সাতদিনে দৈনিক দুই লাখ করে মোট ১৪ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। নয়াদিল্লির কাছের গ্রেটার নয়ডায় শারদা হসপিটালে টিকা নিতে আসা ১৭ বছর বয়সি ফার্মেসির শিক্ষার্থী খুশি ডিঙ্গরা ভয়ে ঘেমে গেছে ও তার বন্ধুকে জড়িয়ে ধরেছে। তার বক্তব্য ‘আমি খুবই ভীত। আমি সুঁইকে ঘৃণা করি এবং টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমার বাবাও খুবই উদ্বিগ্ন।
তিনি বার বার ফোন করে জানতে চাচ্ছেন আমি ঠিক আছি কি না।’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য বয়স ১৮ না হওয়ায় তাকে টিকা দেওয়া হয়নি। গ্রেটার নয়ডার ২১ বছর বয়সি নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী সাক্ষী শর্মা বলেন, ‘আমার ব্যাচে ৮০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে মাত্র দুজন টিকা নেওয়ার পথে অগ্রসর হয়েছে।
আমার বন্ধুরা বলছে, ‘টিকার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে। এমনকি তুমি প্যারালাইজডও হয়ে যেতে পার।’ ভারতে করোনার দুটি টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ভারতীয় সংস্করণ- কোভিশিল্ড। আরেকটি হচ্ছে ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত কোভ্যাক্সিন।
কোভিশিল্ড তৃতীয়পর্যায়ে মানুষের মধ্যে ট্রায়াল হয়ে আসার কারণে নিরাপদ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটির প্রয়োগ হচ্ছে।
অন্যদিকে কোভ্যাক্সিন এখনো মানবদেহে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পন্ন করেনি। ফলে মানুষ এই টিকা নিতে বেশি ভয় পাচ্ছে। কিন্তু সরকার জোর দিয়ে বলছে ‘এটি ১১০ ভাগ নিরাপদ’।
নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী আলিশা খান বলেন, ‘কোভ্যাক্সিন দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন দেওয়ায় টিকা নিতে মানুষ ইতস্তত করছে।’ পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য-প্রধান অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘টিকাদানের হার মাত্র ৭০ শতাংশ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মহামারি চলে যাচ্ছে বলে টিকা নিচ্ছে না কেউ
ভারতে রাজ্যে রাজ্যে আতঙ্ক
মহামারি চলে যাচ্ছে মনে করে ভারতের মানুষ টিকা নিতে উৎসাহী হচ্ছেন না। এ কারণে করোনার টিকাদান কর্মসূচিও প্রত্যাশা মতো অগ্রসর হচ্ছে না।
টিকা নিলে কোনো সমস্যা হয় কি না, এমন ভয়-আতঙ্ক এবং নিরাপত্তা উদ্বেগে এক-তৃতীয়াংশ মানুষের টিকা নেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট না নেওয়ার কারণ। এছাড়া টেকনিক্যাল ত্রুটি-বিচ্যুতি, সর্বোপরি মহামারি চলে যাচ্ছে-এমন ধারণাও টিকা নিতে অনীহার জন্য দায়ী। এএফপি।
ভারত এক সপ্তাহ আগে টিকা দেওয়া শুরু করে। প্রাথমিকভাবে দৈনিক তিন লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, জুলাই মাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা।
কিন্তু প্রথম সাতদিনে দৈনিক দুই লাখ করে মোট ১৪ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। নয়াদিল্লির কাছের গ্রেটার নয়ডায় শারদা হসপিটালে টিকা নিতে আসা ১৭ বছর বয়সি ফার্মেসির শিক্ষার্থী খুশি ডিঙ্গরা ভয়ে ঘেমে গেছে ও তার বন্ধুকে জড়িয়ে ধরেছে। তার বক্তব্য ‘আমি খুবই ভীত। আমি সুঁইকে ঘৃণা করি এবং টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমার বাবাও খুবই উদ্বিগ্ন।
তিনি বার বার ফোন করে জানতে চাচ্ছেন আমি ঠিক আছি কি না।’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য বয়স ১৮ না হওয়ায় তাকে টিকা দেওয়া হয়নি। গ্রেটার নয়ডার ২১ বছর বয়সি নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী সাক্ষী শর্মা বলেন, ‘আমার ব্যাচে ৮০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে মাত্র দুজন টিকা নেওয়ার পথে অগ্রসর হয়েছে।
আমার বন্ধুরা বলছে, ‘টিকার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে। এমনকি তুমি প্যারালাইজডও হয়ে যেতে পার।’ ভারতে করোনার দুটি টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ভারতীয় সংস্করণ- কোভিশিল্ড। আরেকটি হচ্ছে ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত কোভ্যাক্সিন।
কোভিশিল্ড তৃতীয়পর্যায়ে মানুষের মধ্যে ট্রায়াল হয়ে আসার কারণে নিরাপদ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটির প্রয়োগ হচ্ছে।
অন্যদিকে কোভ্যাক্সিন এখনো মানবদেহে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পন্ন করেনি। ফলে মানুষ এই টিকা নিতে বেশি ভয় পাচ্ছে। কিন্তু সরকার জোর দিয়ে বলছে ‘এটি ১১০ ভাগ নিরাপদ’।
নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী আলিশা খান বলেন, ‘কোভ্যাক্সিন দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন দেওয়ায় টিকা নিতে মানুষ ইতস্তত করছে।’ পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য-প্রধান অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘টিকাদানের হার মাত্র ৭০ শতাংশ।