জার্মানির হাতে ৭৫ দিনের গ্যাস
আর মাত্র আড়াই মাসের গ্যাস মজুত আছে জার্মানির হাতে। গ্যাসের দাম তিনগুণ বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে দেশটির গ্যাস-বিদ্যুৎ, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও রেলপরিবহণ নিয়ন্ত্রকবিষয়ক সরকারি সংস্থা ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সি। গার্ডিয়ান।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংস্থার প্রধান ক্লাউস মুলার জানান, ‘সমস্যা এখনই শুরু হবে না।
কিন্তু ‘জার্মান প্রশাসনের চিন্তার কারণ হলো, মাত্র আড়াই মাস (৭৫ দিন) চলার মতো গ্যাসের মজুত থাকায় রাশিয়া থেকে গ্যাস না পেলে বিপাকে পড়বে দেশটি।’
ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সির প্রধান বলেছেন, যদি জার্মানির কাছে গ্যাসের পুরো মজুত থাকত, তাহলে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর এখন নির্ভর করতে হতো না। কিন্তু মাত্র আড়াই মাস পরই ট্যাংকগুলো সব খালি হয়ে যাবে।
তার মতে, জার্মানিকে বাঁচাতে হবে এবং অন্য জায়গা থেকে গ্যাস আনার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্য একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, গ্যাসের দাম তিনগুণ বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি গ্যাস পরিকল্পনার দ্বিতীয়পর্বে প্রবেশ করেছে জার্মানি। সেখানে সরবরাহকারীদের ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দাম নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মুলার বলেছেন, যদি জার্মানিকে এই পরিকল্পনার তৃতীয় পর্যায় রূপায়ণ করতে হয়, তাহলে ভয়ংকর পরিণতি হবে।
তখন গ্যাস রেশন করা হবে, প্রয়োজনভিত্তিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। গত সপ্তাহে মস্কো নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ ৪০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। যান্ত্রিক কারণ উল্লেখ করে মস্কো এই সিদ্ধান্ত নিলেও বার্লিন তা অজুহাত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ সম্পর্কে ক্লাউস মুলার বলেছেন, রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত বাজারমূল্য চার থেকে ছয়গুণ বাড়ায় প্ররোচনা দেবে। এ ধরনের ‘মূল্যের বিশাল বৃদ্ধি’ সম্পূর্ণভাবে ভোক্তাদের ওপর চাপানোর আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু জার্মানদের নাটকীয়ভাবে ক্রমবর্ধমান খরচের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, কাতার থেকে গ্যাস আনার জন্য সম্প্রতি চুক্তি করেছে জার্মানি।
ইউক্রেনের বন্দর অবকাঠামো পুনরুদ্ধারে লাগবে এক দশক : ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো প্রতিস্থাপনের জন্য অবকাঠামো তৈরি করতে এক দশক সময় লেগে যাবে। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন দেশটির উপ-কৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোটস্কি। রাশিয়ার অবরোধে বিশ্বজুড়ে শস্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে এ কথা জানান তিনি। রুশ আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেনের বন্দরে লাখ লাখ টন গম এবং অন্যান্য শস্য আটকে আছে।
যে কারণে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষুধা ও খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য। মন্ত্রী তারাস জানান, খাদ্যশস্য রপ্তানির জন্য বিকল্প রুট তৈরিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রতিস্থাপনে ১০ বছর বিনিয়োগ করতে হবে। ধ্বংস হওয়া আগের কাঠামোটি তৈরিতে ২০ বছর সময় লেগেছিল বলে জানান মন্ত্রী। ‘তার পরও’, তারাব বলছিলেন, ‘এই বিকল্প রুটগুলো ইউক্রেনের মোট রপ্তানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে।’
বিশ্বজুড়ে চলছে খাদ্যসংকটের সুনামি : জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক দাবি করেন, শস্য রপ্তানি বন্ধ করে রাশিয়া খাদ্য সংকটের ঢেউকে সুনামিতে পরিণত করেছে।
শনিবার তিনি জি-সেভেন বৈঠকে বলেন, ইউক্রেনের বন্দর থেকে ২৫ মিলিয়ন টন শস্য রপ্তানি বন্ধ করে বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষকে খাদ্যসংকটে ফেলে দিয়েছে। এর অর্থ, ক্ষুধাকে ভয়ংকর যুদ্ধাস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। তিনি বলেন, এর ফলে ৪০টিরও বেশি দেশ এখন ১৫ শতাংশের বেশি খাদ্য মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছে।
জার্মানির হাতে ৭৫ দিনের গ্যাস
যুগান্তর ডেস্ক
২৬ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আর মাত্র আড়াই মাসের গ্যাস মজুত আছে জার্মানির হাতে। গ্যাসের দাম তিনগুণ বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে দেশটির গ্যাস-বিদ্যুৎ, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও রেলপরিবহণ নিয়ন্ত্রকবিষয়ক সরকারি সংস্থা ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সি। গার্ডিয়ান।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংস্থার প্রধান ক্লাউস মুলার জানান, ‘সমস্যা এখনই শুরু হবে না।
কিন্তু ‘জার্মান প্রশাসনের চিন্তার কারণ হলো, মাত্র আড়াই মাস (৭৫ দিন) চলার মতো গ্যাসের মজুত থাকায় রাশিয়া থেকে গ্যাস না পেলে বিপাকে পড়বে দেশটি।’
ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সির প্রধান বলেছেন, যদি জার্মানির কাছে গ্যাসের পুরো মজুত থাকত, তাহলে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর এখন নির্ভর করতে হতো না। কিন্তু মাত্র আড়াই মাস পরই ট্যাংকগুলো সব খালি হয়ে যাবে।
তার মতে, জার্মানিকে বাঁচাতে হবে এবং অন্য জায়গা থেকে গ্যাস আনার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্য একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, গ্যাসের দাম তিনগুণ বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি গ্যাস পরিকল্পনার দ্বিতীয়পর্বে প্রবেশ করেছে জার্মানি। সেখানে সরবরাহকারীদের ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দাম নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মুলার বলেছেন, যদি জার্মানিকে এই পরিকল্পনার তৃতীয় পর্যায় রূপায়ণ করতে হয়, তাহলে ভয়ংকর পরিণতি হবে।
তখন গ্যাস রেশন করা হবে, প্রয়োজনভিত্তিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। গত সপ্তাহে মস্কো নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ ৪০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। যান্ত্রিক কারণ উল্লেখ করে মস্কো এই সিদ্ধান্ত নিলেও বার্লিন তা অজুহাত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ সম্পর্কে ক্লাউস মুলার বলেছেন, রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত বাজারমূল্য চার থেকে ছয়গুণ বাড়ায় প্ররোচনা দেবে। এ ধরনের ‘মূল্যের বিশাল বৃদ্ধি’ সম্পূর্ণভাবে ভোক্তাদের ওপর চাপানোর আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু জার্মানদের নাটকীয়ভাবে ক্রমবর্ধমান খরচের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, কাতার থেকে গ্যাস আনার জন্য সম্প্রতি চুক্তি করেছে জার্মানি।
ইউক্রেনের বন্দর অবকাঠামো পুনরুদ্ধারে লাগবে এক দশক : ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো প্রতিস্থাপনের জন্য অবকাঠামো তৈরি করতে এক দশক সময় লেগে যাবে। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন দেশটির উপ-কৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোটস্কি। রাশিয়ার অবরোধে বিশ্বজুড়ে শস্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে এ কথা জানান তিনি। রুশ আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেনের বন্দরে লাখ লাখ টন গম এবং অন্যান্য শস্য আটকে আছে।
যে কারণে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষুধা ও খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য। মন্ত্রী তারাস জানান, খাদ্যশস্য রপ্তানির জন্য বিকল্প রুট তৈরিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রতিস্থাপনে ১০ বছর বিনিয়োগ করতে হবে। ধ্বংস হওয়া আগের কাঠামোটি তৈরিতে ২০ বছর সময় লেগেছিল বলে জানান মন্ত্রী। ‘তার পরও’, তারাব বলছিলেন, ‘এই বিকল্প রুটগুলো ইউক্রেনের মোট রপ্তানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে।’
বিশ্বজুড়ে চলছে খাদ্যসংকটের সুনামি : জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক দাবি করেন, শস্য রপ্তানি বন্ধ করে রাশিয়া খাদ্য সংকটের ঢেউকে সুনামিতে পরিণত করেছে।
শনিবার তিনি জি-সেভেন বৈঠকে বলেন, ইউক্রেনের বন্দর থেকে ২৫ মিলিয়ন টন শস্য রপ্তানি বন্ধ করে বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষকে খাদ্যসংকটে ফেলে দিয়েছে। এর অর্থ, ক্ষুধাকে ভয়ংকর যুদ্ধাস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। তিনি বলেন, এর ফলে ৪০টিরও বেশি দেশ এখন ১৫ শতাংশের বেশি খাদ্য মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023