খরা, দাবদাহকেও ছাড়িয়ে গেল দ্রব্যমূল্যের আগুন
ব্রিটেনে ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে মুদ্রাস্ফীতি
খরা আর দাবদাহে অতিষ্ঠ ব্রিটেনের নাগরিক জীবন। এরই মধ্যে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ১০ ছাড়িয়েছে। গত ৪০ বছরের মধ্যে এই প্রথম দেশটির মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। সর্বশেষ ১৯৮২ সালে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ১০ ছাড়িয়েছিল। খরা আর দাপদাহের কষ্টকে ম্লান করে দিয়েছে বিভিন্ন খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগুনমূল্য। রুটি আর দুধের বাড়তি মূল্য চোকাতে পরিবারের অন্যান্য বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন ব্রিটিশরা। একই সঙ্গে উচ্চ তাপমাত্রা আর খাদ্যমূল্যের ঝলসানো আঁচে নাকাল ব্রিটেনবাসী। সিএনএন।
গত সপ্তাহেই খরাপীড়িত হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ইংল্যান্ডের ৮ অঞ্চলকে। প্রচণ্ড তাপে গাছেই পুড়ে সেদ্ধ হচ্ছে গাছের ফল, খেতের ফসল। এর মধ্যেই বুধবার অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) এক তথ্যে জানিয়েছে, জুলাই মাসে বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ১০.১ শতাংশে পৌঁছেছে। ৭০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনের মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছাল চতুর্থবার। আগের তিনটি ছিল ১৯৫১-৫২, ১৯৭৩-৭৭, ১৯৭৯-৮২।
ওএনএস বলেছে, ব্রিটেনে জুলাই ২০২১ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ১২.৭ শতাংশ। মাসিক ভিত্তিতে ভোক্তা মূল্যসূচক জুলাই মাসে বেড়েছে ০.৬ শতাংশ। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের জরিপে বলা হয়, দেশটিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করছে। ওএনএসের হিসাব অনুযায়ী, ১১টি খাদ্য ও নন-অ্যালকোহলিক পানীয় বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হারকে ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। রুটি, দুধ, পনির, ডিম, চেডার পনির ও দইয়ের দাম বেড়েছে অভাবনীয় হারে। আরও বেড়েছে শাকসবজি, টুথব্রাশ, ডিওডোরেন্ট, টয়লেট পেপারসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। সার্বিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির জন্য পেট্রোল ও ডিজেলের উচ্চমূল্যকেই দায়ী করেছে ওএনএস।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের জিডিপি কমেছে ০.১ শতাংশ। আরও অবাক করার বিষয় যে, ২৭ বছরের মধ্যে গত মাসে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার বৃদ্ধি এবং তার প্রভাবে সৃষ্ট জনগণের গৃহস্থালি বাজেটের ওপর চাপ ব্রিটেনের অর্থনৈতিক মন্দারই ইঙ্গিত বহন করছে।
মঙ্গলবারের অফিশিয়াল শ্রমবাজারের প্রতিবেদন জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে বেতন চেক বেড়েছে ৪.৭ শতাংশ। যার অর্থ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে গড় আয় কমেছে ৩ শতাংশ। মজুরিতে এটা অনেক বড় পতন বলে অভিহিত করেছে ওএনএস।
অক্টোবরে নিয়ন্ত্রিত জ্বালানির খরচ আরও বাড়ছে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির হার ১৩ শতাংশ ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুতের দাম ৫৪ শতাংশ এবং গ্যাসের দাম ৯৫.৭ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় নাগরিকদের সহায়তা করতে বিকল্প খুঁজছে ব্রিটেন সরকার। সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রত্যাশিত প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস কর কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এ ছাড়া এ ধকল মোকাবিলার আর কোনো বড় ধরনের পরিকল্পনার কথা জানাননি তিনি। তবে বিরোধী
লেবার পার্টির দাবি, জনগণকে সাহায্য করতে হলে তেল ও গ্যাসের দাম কমাতে হবে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির এ পরিস্থিতি সরকার এবং রক্ষণশীল নেতৃত্বের প্রার্থীদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
খরা, দাবদাহকেও ছাড়িয়ে গেল দ্রব্যমূল্যের আগুন
ব্রিটেনে ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে মুদ্রাস্ফীতি
যুগান্তর ডেস্ক
১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
খরা আর দাবদাহে অতিষ্ঠ ব্রিটেনের নাগরিক জীবন। এরই মধ্যে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ১০ ছাড়িয়েছে। গত ৪০ বছরের মধ্যে এই প্রথম দেশটির মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। সর্বশেষ ১৯৮২ সালে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ১০ ছাড়িয়েছিল। খরা আর দাপদাহের কষ্টকে ম্লান করে দিয়েছে বিভিন্ন খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগুনমূল্য। রুটি আর দুধের বাড়তি মূল্য চোকাতে পরিবারের অন্যান্য বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন ব্রিটিশরা। একই সঙ্গে উচ্চ তাপমাত্রা আর খাদ্যমূল্যের ঝলসানো আঁচে নাকাল ব্রিটেনবাসী। সিএনএন।
গত সপ্তাহেই খরাপীড়িত হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ইংল্যান্ডের ৮ অঞ্চলকে। প্রচণ্ড তাপে গাছেই পুড়ে সেদ্ধ হচ্ছে গাছের ফল, খেতের ফসল। এর মধ্যেই বুধবার অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) এক তথ্যে জানিয়েছে, জুলাই মাসে বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ১০.১ শতাংশে পৌঁছেছে। ৭০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনের মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছাল চতুর্থবার। আগের তিনটি ছিল ১৯৫১-৫২, ১৯৭৩-৭৭, ১৯৭৯-৮২।
ওএনএস বলেছে, ব্রিটেনে জুলাই ২০২১ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ১২.৭ শতাংশ। মাসিক ভিত্তিতে ভোক্তা মূল্যসূচক জুলাই মাসে বেড়েছে ০.৬ শতাংশ। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের জরিপে বলা হয়, দেশটিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করছে। ওএনএসের হিসাব অনুযায়ী, ১১টি খাদ্য ও নন-অ্যালকোহলিক পানীয় বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হারকে ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। রুটি, দুধ, পনির, ডিম, চেডার পনির ও দইয়ের দাম বেড়েছে অভাবনীয় হারে। আরও বেড়েছে শাকসবজি, টুথব্রাশ, ডিওডোরেন্ট, টয়লেট পেপারসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। সার্বিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির জন্য পেট্রোল ও ডিজেলের উচ্চমূল্যকেই দায়ী করেছে ওএনএস।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের জিডিপি কমেছে ০.১ শতাংশ। আরও অবাক করার বিষয় যে, ২৭ বছরের মধ্যে গত মাসে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার বৃদ্ধি এবং তার প্রভাবে সৃষ্ট জনগণের গৃহস্থালি বাজেটের ওপর চাপ ব্রিটেনের অর্থনৈতিক মন্দারই ইঙ্গিত বহন করছে।
মঙ্গলবারের অফিশিয়াল শ্রমবাজারের প্রতিবেদন জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে বেতন চেক বেড়েছে ৪.৭ শতাংশ। যার অর্থ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে গড় আয় কমেছে ৩ শতাংশ। মজুরিতে এটা অনেক বড় পতন বলে অভিহিত করেছে ওএনএস।
অক্টোবরে নিয়ন্ত্রিত জ্বালানির খরচ আরও বাড়ছে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির হার ১৩ শতাংশ ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুতের দাম ৫৪ শতাংশ এবং গ্যাসের দাম ৯৫.৭ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় নাগরিকদের সহায়তা করতে বিকল্প খুঁজছে ব্রিটেন সরকার। সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রত্যাশিত প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস কর কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এ ছাড়া এ ধকল মোকাবিলার আর কোনো বড় ধরনের পরিকল্পনার কথা জানাননি তিনি। তবে বিরোধী
লেবার পার্টির দাবি, জনগণকে সাহায্য করতে হলে তেল ও গ্যাসের দাম কমাতে হবে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির এ পরিস্থিতি সরকার এবং রক্ষণশীল নেতৃত্বের প্রার্থীদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023