একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্র
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
সুচেতনা
-জীবনানন্দ দাশ
আধুনিক বাংলা কাব্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) কবিতায় সূক্ষ্ম ও গভীর অনুভবের এক জগৎ তৈরি করেন। বিশেষ করে গ্রামবাংলার নিসর্গের যে ছবি তিনি এঁকেছেন, বাংলা সাহিত্যে তার তুলনা চলে না। সেই নিসর্গের সঙ্গে অনুভব ও বোধের বহুতর মাত্রা যুক্ত হয়ে তার হাতে অনন্যসাধারণ কবিতাশিল্প রচিত হয়েছে। এই অসাধারণ কাব্য বৈশিষ্ট্যকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘চিররূপময়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিমানুষের নিঃসঙ্গতা, আধুনিক জীবনের বিচিত্র যন্ত্রণা ও হাহাকার এবং সর্বোপরি জীবন ও জগতের রহস্য-মাহাত্ম্য সন্ধানে তিনি এক অপ্রতিম কবিভাষা সৃষ্টি করেছেন। বুদ্ধদেব বসু তাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘নির্জমতম কবি’ বলে। উপমা, চিত্রকল্প, প্রতীক সৃজন, আলো-আঁধারের ব্যবহার, রঙের ব্যবহার এবং অনুভবের বিচিত্র মাত্রার ব্যবহারে তার কবিতা লাভ করেছে অসাধারণত্ব। তার নিসর্গবিষয়ক কবিতা বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতাকে তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক হিসাবেও বাংলা সাহিত্যে তার বিশেষ স্থান রয়েছে। ‘সুচেতনা’ কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এটি কবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। এ কবিতায় সুচেতনা সম্বোধনে কবি তার প্রার্থিত, আরাধ্য এক চেতনানিহিত বিশ্বাসকে শিল্পিত করেছেন। কবির বিশ্বাসমতে, সুচেতনা দূরতম দ্বীপসদৃশ একটি ধারণা, যা পৃথিবীর নির্জনতায়, যুদ্ধে, রক্তে নিঃশেষিত নয়। চেতনাগত এই সত্তা বর্তমান পৃথিবীর গভীরতর ব্যাধিকে অতিক্রম করে সুস্থ ইহলৌকিক পৃথিবীর মানুষকে জীবন্ময় করে রাখে। জীবন্মুক্তির এই চেতনাগত সত্যই পৃথিবীর ক্রমমুক্তির আলোকে প্রজ্বলিত রাখবে, মানবসমাজের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করবে। শাশ্বত রাত্রির বুকে অনন্ত সূর্যোদয়কে প্রকাশ করবে।
‘সুচেতনা’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে-
‘সুচেতনা’ কবি জীবনানন্দ দাশের মানব চেতনার গভীরে অনুভূতিমূলক একটি কবিতা। এ কবিতায় কবি শাব্দিক অর্থে যা প্রকাশ করেছেন, তা কবিতার প্রকৃত তত্ত্ব প্রকাশে সমর্থ নয়। কবিতায় কবির বর্ণিত ভাবনা বুঝতে হলে কবির চেতনাকে অনুভব করতে হবে। কবিতায় কবি কী বলেছেন-তা নয়, কবি কী বলতে চেয়েছেন তা-ই হলো এ কবিতার মর্মার্থ। ‘সুচেতনা’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো বেশি জোর দিয়ে পড়তে হবে তা নিচে বর্ণনা করা হলো। সুচেতনা বলতে কবি যা বুঝিয়েছেন, দূরতম দ্বীপ বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন, কবি কবিতায় শেষ সত্য নয় বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন, বর্তমান সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষের নির্মম মৃত্যুর প্রসঙ্গ কবি এ কবিতায় যেভাবে তুলে ধরছেন, এ পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে বলতে কবি যা বোঝাতে চেয়েছেন, কবি নিজেকে ক্লান্তিহীন নাবিক বলেছেন কেন, কবি যে কারণে পৃথিবীতে না আসাকে ভালো বলেছেন, অনন্ত সূর্যোদয় বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন ইত্যাদি। তবে কবিতার প্রেক্ষাপট পড়ে বৃহত্তর ভাবনায় বিচার করে কবির মনোভাব বুঝতে চেষ্টা করা উচিত।
অনুধাবন প্রশ্ন :
১. সুচেতনা কবিতায় কবি সুচেতনা বলতে কী বুঝিয়েছেন?
২. কবি সুচেতনাকে এক দূরতর দ্বীপ বলেছেন কেন?
৩. ‘তুমি এক দূরতম দ্বীপ/ বিকেলের নক্ষত্রের কাছে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৪. ‘এই পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতা সত্য’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৫. ‘এই পৃথিবীর... শেষ সত্য নয়’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৬. ‘...আমার হাতে হয়তো নিহত/ ভাই বোন বন্ধু পরিজন প’ড়ে আছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৭. ‘পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৮. ‘মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৯. ‘সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে-এ-পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে’-কেন বলা হয়েছে?
১০. ‘আমাদের মতো ক্লান্ত ক্লান্তিহীন নাবিকের হাতে গ’ড়ে দেব’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১১. ‘আমাদের মতো ক্লান্ত... দূর অন্তিম প্রভাতে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১২. ‘মাটি-পৃথিবীর টানে... হতো অনুভব ক’রে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৩. ‘এসে যে গভীরতর লাভ হলো সে-সব বুঝেছি’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্র
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
সুচেতনা
-জীবনানন্দ দাশ
আধুনিক বাংলা কাব্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) কবিতায় সূক্ষ্ম ও গভীর অনুভবের এক জগৎ তৈরি করেন। বিশেষ করে গ্রামবাংলার নিসর্গের যে ছবি তিনি এঁকেছেন, বাংলা সাহিত্যে তার তুলনা চলে না। সেই নিসর্গের সঙ্গে অনুভব ও বোধের বহুতর মাত্রা যুক্ত হয়ে তার হাতে অনন্যসাধারণ কবিতাশিল্প রচিত হয়েছে। এই অসাধারণ কাব্য বৈশিষ্ট্যকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘চিররূপময়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিমানুষের নিঃসঙ্গতা, আধুনিক জীবনের বিচিত্র যন্ত্রণা ও হাহাকার এবং সর্বোপরি জীবন ও জগতের রহস্য-মাহাত্ম্য সন্ধানে তিনি এক অপ্রতিম কবিভাষা সৃষ্টি করেছেন। বুদ্ধদেব বসু তাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘নির্জমতম কবি’ বলে। উপমা, চিত্রকল্প, প্রতীক সৃজন, আলো-আঁধারের ব্যবহার, রঙের ব্যবহার এবং অনুভবের বিচিত্র মাত্রার ব্যবহারে তার কবিতা লাভ করেছে অসাধারণত্ব। তার নিসর্গবিষয়ক কবিতা বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতাকে তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক হিসাবেও বাংলা সাহিত্যে তার বিশেষ স্থান রয়েছে। ‘সুচেতনা’ কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এটি কবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। এ কবিতায় সুচেতনা সম্বোধনে কবি তার প্রার্থিত, আরাধ্য এক চেতনানিহিত বিশ্বাসকে শিল্পিত করেছেন। কবির বিশ্বাসমতে, সুচেতনা দূরতম দ্বীপসদৃশ একটি ধারণা, যা পৃথিবীর নির্জনতায়, যুদ্ধে, রক্তে নিঃশেষিত নয়। চেতনাগত এই সত্তা বর্তমান পৃথিবীর গভীরতর ব্যাধিকে অতিক্রম করে সুস্থ ইহলৌকিক পৃথিবীর মানুষকে জীবন্ময় করে রাখে। জীবন্মুক্তির এই চেতনাগত সত্যই পৃথিবীর ক্রমমুক্তির আলোকে প্রজ্বলিত রাখবে, মানবসমাজের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করবে। শাশ্বত রাত্রির বুকে অনন্ত সূর্যোদয়কে প্রকাশ করবে।
‘সুচেতনা’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে-
‘সুচেতনা’ কবি জীবনানন্দ দাশের মানব চেতনার গভীরে অনুভূতিমূলক একটি কবিতা। এ কবিতায় কবি শাব্দিক অর্থে যা প্রকাশ করেছেন, তা কবিতার প্রকৃত তত্ত্ব প্রকাশে সমর্থ নয়। কবিতায় কবির বর্ণিত ভাবনা বুঝতে হলে কবির চেতনাকে অনুভব করতে হবে। কবিতায় কবি কী বলেছেন-তা নয়, কবি কী বলতে চেয়েছেন তা-ই হলো এ কবিতার মর্মার্থ। ‘সুচেতনা’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো বেশি জোর দিয়ে পড়তে হবে তা নিচে বর্ণনা করা হলো। সুচেতনা বলতে কবি যা বুঝিয়েছেন, দূরতম দ্বীপ বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন, কবি কবিতায় শেষ সত্য নয় বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন, বর্তমান সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষের নির্মম মৃত্যুর প্রসঙ্গ কবি এ কবিতায় যেভাবে তুলে ধরছেন, এ পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে বলতে কবি যা বোঝাতে চেয়েছেন, কবি নিজেকে ক্লান্তিহীন নাবিক বলেছেন কেন, কবি যে কারণে পৃথিবীতে না আসাকে ভালো বলেছেন, অনন্ত সূর্যোদয় বলতে যা বোঝাতে চেয়েছেন ইত্যাদি। তবে কবিতার প্রেক্ষাপট পড়ে বৃহত্তর ভাবনায় বিচার করে কবির মনোভাব বুঝতে চেষ্টা করা উচিত।
অনুধাবন প্রশ্ন :
১. সুচেতনা কবিতায় কবি সুচেতনা বলতে কী বুঝিয়েছেন?
২. কবি সুচেতনাকে এক দূরতর দ্বীপ বলেছেন কেন?
৩. ‘তুমি এক দূরতম দ্বীপ/ বিকেলের নক্ষত্রের কাছে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৪. ‘এই পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতা সত্য’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৫. ‘এই পৃথিবীর... শেষ সত্য নয়’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৬. ‘...আমার হাতে হয়তো নিহত/ ভাই বোন বন্ধু পরিজন প’ড়ে আছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৭. ‘পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৮. ‘মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৯. ‘সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে-এ-পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে’-কেন বলা হয়েছে?
১০. ‘আমাদের মতো ক্লান্ত ক্লান্তিহীন নাবিকের হাতে গ’ড়ে দেব’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১১. ‘আমাদের মতো ক্লান্ত... দূর অন্তিম প্রভাতে’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১২. ‘মাটি-পৃথিবীর টানে... হতো অনুভব ক’রে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৩. ‘এসে যে গভীরতর লাভ হলো সে-সব বুঝেছি’-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?