তাদেরও পরিচয়-পরিচিতি থাকুক
আজকাল ট্রেনে-বাসে প্রায়ই দেখা যায়- রঙচঙে সাজগোজ করে তৃতীয় লিঙ্গের কিছু মানুষ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। এসব দেখে অনেকেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে নাক সিঁটকাচ্ছে, কেউ হয়তো একটা নোট এগিয়ে দিয়ে চরম অবজ্ঞার সঙ্গে। আবার টাকা না দিলে ওরাও ছাড় দিচ্ছে না কাউকে; রীতিমতো জোর করেই টাকা আদায় করা হচ্ছে। অবশ্য এছাড়া আর করারই বা কী আছে! পেটের দায় যে বড় দায়। সে দায় মেটাতেই তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ পথে নামে এভাবে।
কী দুভার্গ্য- পরিবার ও সমাজ তাদের মেনে নেয় না। রাষ্ট্রও তাদের কথা ভাবার অবকাশ পায় না। জন্মের পর থেকেই তারা বৈষম্যের শিকার। পরিবার থেকেও বিতাড়িত হয়ে তাদের ঠাঁই হয় কোনো রাস্তায়। তারা যেন কোনো অচ্ছ্যুত বস্তু। পরিবার পায় না, পরিচয় পায় না; পায় কেবল অবহেলা আর তাচ্ছিল্য। মুখ ফিরিয়ে নেয় রাষ্ট্রও। মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটা তাদের কাছে অলীক কোনো বস্তু। পরিবার ও সমাজের করুণা নিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তারা মানুষের কাছে হাত পাতে। অথচ তারাও আমাদের মতোই মানুষ; এদেশের নাগরিক।
মৌলিক অধিকার হিসাবে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তাদেরও প্রাপ্য। তাদেরও অধিকার রয়েছে মাথা উঁচু করে বাঁচার। হয়তো তাদের কারও মধ্যেই লুকিয়ে আছে অসামান্য প্রতিভা, অমিত সম্ভাবনা। কিন্তু তা বিকাশের সুযোগ কোথায়? এ জন্যই তাদের পরিচর্যা করা দরকার। দরকার পুনর্বাসন। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পুনর্বাসন করে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হোক। তাদেরও পরিবার হোক, পরিচয়-পরিচিতি থাকুক। মানুষের কাছে হাত পেতে নয়; সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচুক তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ।
শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তাদেরও পরিচয়-পরিচিতি থাকুক
আজকাল ট্রেনে-বাসে প্রায়ই দেখা যায়- রঙচঙে সাজগোজ করে তৃতীয় লিঙ্গের কিছু মানুষ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। এসব দেখে অনেকেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে নাক সিঁটকাচ্ছে, কেউ হয়তো একটা নোট এগিয়ে দিয়ে চরম অবজ্ঞার সঙ্গে। আবার টাকা না দিলে ওরাও ছাড় দিচ্ছে না কাউকে; রীতিমতো জোর করেই টাকা আদায় করা হচ্ছে। অবশ্য এছাড়া আর করারই বা কী আছে! পেটের দায় যে বড় দায়। সে দায় মেটাতেই তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ পথে নামে এভাবে।
কী দুভার্গ্য- পরিবার ও সমাজ তাদের মেনে নেয় না। রাষ্ট্রও তাদের কথা ভাবার অবকাশ পায় না। জন্মের পর থেকেই তারা বৈষম্যের শিকার। পরিবার থেকেও বিতাড়িত হয়ে তাদের ঠাঁই হয় কোনো রাস্তায়। তারা যেন কোনো অচ্ছ্যুত বস্তু। পরিবার পায় না, পরিচয় পায় না; পায় কেবল অবহেলা আর তাচ্ছিল্য। মুখ ফিরিয়ে নেয় রাষ্ট্রও। মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটা তাদের কাছে অলীক কোনো বস্তু। পরিবার ও সমাজের করুণা নিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তারা মানুষের কাছে হাত পাতে। অথচ তারাও আমাদের মতোই মানুষ; এদেশের নাগরিক।
মৌলিক অধিকার হিসাবে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তাদেরও প্রাপ্য। তাদেরও অধিকার রয়েছে মাথা উঁচু করে বাঁচার। হয়তো তাদের কারও মধ্যেই লুকিয়ে আছে অসামান্য প্রতিভা, অমিত সম্ভাবনা। কিন্তু তা বিকাশের সুযোগ কোথায়? এ জন্যই তাদের পরিচর্যা করা দরকার। দরকার পুনর্বাসন। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পুনর্বাসন করে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হোক। তাদেরও পরিবার হোক, পরিচয়-পরিচিতি থাকুক। মানুষের কাছে হাত পেতে নয়; সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচুক তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ।
শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়