এখনো তারা বেপরোয়া
দুদিন আগে খুলনা যাওয়ার জন্য আমরা তিনজন গিয়েছিলাম আব্দুল্লাপুর। এখান থেকে খুলনা যায় সেবা গ্রিনলাইন। এখান থেকে খুলনা যাওয়ার এটিই একমাত্র পরিবহণ। টিকিটের জন্য কাউন্টারে যেতেই দেখলাম-তাদের পাত্তাহীন মনোভাব। টিকিটের মূল্য ৫০০ টাকা; ইচ্ছা হলে যান, নয়তো কেটে পড়েন। আমাদের মধ্য থেকে একজন ভাড়া কিছু কম দিতে চাইলে অভিযোগ ও পরামর্শের জন্য নির্দিষ্ট একটি নম্বর দেখিয়ে কথা বলতে বললেন কাউন্টারে বসা দুজন লোক। ওই নম্বরে ফোন করে অনুরোধ করা হলো ভাড়া কমানোর জন্য। কিন্তু কোনো কাজ হলো না।
এরপর অভিযোগের জন্য নির্দিষ্ট ওই নম্বরে ফোন দিয়ে কাউন্টারের একজন আমাদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও মজা করা শুরু করল। আমরা সবাই হয়ে গেলাম হাসির পাত্র। আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করায় আমরা তার প্রতিবাদ করলে কম্পিউটারের সামনে বসা লোকটি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করল। অন্য কোনো পরিবহণ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ পরিবহণেই আমরা খুলনা আসি।
এ পরিবহণের একচেটিয়া ব্যবসা, মালিকপক্ষের মন্দ ব্যবহার, বেপরোয়া গতি, মানহীন সেবা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। জানা যায়, কয়েক বছর আগেও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে চলাচল করা মানুষখেকো আলোচিত একটি পরিবহণের নাম ছিল সেবা গ্রিনলাইন। এ পরিবহন কোম্পানির বাসগুলোর বেপরোয়া গতি ও অনিয়ম কেড়ে নিয়েছে শত শত মানুষের প্রাণ। এখনো রেশ কাটেনি মানুষখেকো দানব সেবা গ্রিনলাইনের থাবায় হারানো স্বজনদের আর্তনাদের। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সেবা গ্রিনলাইন পরিবহণের বেপরোয়া গতির কারণে সৃষ্ট সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১৮ সলের ২৮ ও ২৯ মার্চ ৭ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। ২ এপ্রিল একজন এবং ২৯ আগস্ট ২ জন নিহত হয়। একইভাবে ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৬ জন নিহত ও ২০ জন আহতসহ ভিন্ন স্থানে একই পরিবারের ৫ জন নিহত হয়। এ কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এ পরিবহণ কোম্পানির রোড পারমিট।
এতে কিছুদিন তাদের বেপরোয়া গতি ও খারাপ ব্যবহার বন্ধ থাকলেও নতুন করে আবার শুরু হয়েছে যাত্রী হয়রানি। আব্দুল্লাপুর থেকে একচেটিয়া ব্যবসা নিশ্চিত হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে বিভিন্ন অনিয়ম করছে কাউন্টারের লোকজন। অতিরিক্ত ভাড়া, যাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি, মানহীন সেবা সবই যেন সেবা গ্রিনলাইন পরিবহণের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। যাত্রী হয়রানি বন্ধে এ পরিবহণ কোম্পানি ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেদগ্রাম, খুলনা
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এখনো তারা বেপরোয়া
দুদিন আগে খুলনা যাওয়ার জন্য আমরা তিনজন গিয়েছিলাম আব্দুল্লাপুর। এখান থেকে খুলনা যায় সেবা গ্রিনলাইন। এখান থেকে খুলনা যাওয়ার এটিই একমাত্র পরিবহণ। টিকিটের জন্য কাউন্টারে যেতেই দেখলাম-তাদের পাত্তাহীন মনোভাব। টিকিটের মূল্য ৫০০ টাকা; ইচ্ছা হলে যান, নয়তো কেটে পড়েন। আমাদের মধ্য থেকে একজন ভাড়া কিছু কম দিতে চাইলে অভিযোগ ও পরামর্শের জন্য নির্দিষ্ট একটি নম্বর দেখিয়ে কথা বলতে বললেন কাউন্টারে বসা দুজন লোক। ওই নম্বরে ফোন করে অনুরোধ করা হলো ভাড়া কমানোর জন্য। কিন্তু কোনো কাজ হলো না।
এরপর অভিযোগের জন্য নির্দিষ্ট ওই নম্বরে ফোন দিয়ে কাউন্টারের একজন আমাদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও মজা করা শুরু করল। আমরা সবাই হয়ে গেলাম হাসির পাত্র। আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করায় আমরা তার প্রতিবাদ করলে কম্পিউটারের সামনে বসা লোকটি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করল। অন্য কোনো পরিবহণ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ পরিবহণেই আমরা খুলনা আসি।
এ পরিবহণের একচেটিয়া ব্যবসা, মালিকপক্ষের মন্দ ব্যবহার, বেপরোয়া গতি, মানহীন সেবা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। জানা যায়, কয়েক বছর আগেও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে চলাচল করা মানুষখেকো আলোচিত একটি পরিবহণের নাম ছিল সেবা গ্রিনলাইন। এ পরিবহন কোম্পানির বাসগুলোর বেপরোয়া গতি ও অনিয়ম কেড়ে নিয়েছে শত শত মানুষের প্রাণ। এখনো রেশ কাটেনি মানুষখেকো দানব সেবা গ্রিনলাইনের থাবায় হারানো স্বজনদের আর্তনাদের। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সেবা গ্রিনলাইন পরিবহণের বেপরোয়া গতির কারণে সৃষ্ট সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১৮ সলের ২৮ ও ২৯ মার্চ ৭ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। ২ এপ্রিল একজন এবং ২৯ আগস্ট ২ জন নিহত হয়। একইভাবে ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৬ জন নিহত ও ২০ জন আহতসহ ভিন্ন স্থানে একই পরিবারের ৫ জন নিহত হয়। এ কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এ পরিবহণ কোম্পানির রোড পারমিট।
এতে কিছুদিন তাদের বেপরোয়া গতি ও খারাপ ব্যবহার বন্ধ থাকলেও নতুন করে আবার শুরু হয়েছে যাত্রী হয়রানি। আব্দুল্লাপুর থেকে একচেটিয়া ব্যবসা নিশ্চিত হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে বিভিন্ন অনিয়ম করছে কাউন্টারের লোকজন। অতিরিক্ত ভাড়া, যাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি, মানহীন সেবা সবই যেন সেবা গ্রিনলাইন পরিবহণের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। যাত্রী হয়রানি বন্ধে এ পরিবহণ কোম্পানি ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেদগ্রাম, খুলনা