চট্টগ্রাম মেডিকেলে ডায়ালাইসিস ফি কমানো হোক
রায়হান উদ্দিন
১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে গরিব-দুঃখী রোগীদের মধ্যে অসহায়ত্ব নেমে এসেছে। কিডনি রোগীর জন্য ডায়ালাইসিস করানো অপরিহার্য। যে পরিবারে কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস করাতে হয়, সে পরিবার জানে, চিকিৎসা চালানো কতটা কষ্টকর। ব্যয়বহুল হওয়াতে অনেকেই প্রাইভেটে ডায়ালাইসিস করানো ভাবতেই পারেন না। অর্থের অভাবে অনেকের মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করতে হয়।
ডায়ালাইসিস করানো ছাড়াও রোগীর ওষুধপত্রাদি, পরিবারের খরচ জোগানো অনেক কষ্ট। অনেককে ধারদেনা করে চিকিৎসা চালাতে হয়, কেউ কেউ জায়গা জমি বিক্রি করে আজ নিঃস্ব। মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষকে কিডনি রোগীর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। গরিব অসহায় রোগীরা কোনোমতে চিকিৎসা চালানোর জন্য আশ্রয়স্থল হিসাবে বেছে নেয় সরকারি হাসপাতালকে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসব অসহায় হতদরিদ্র রোগী কষ্ট করে আসেন সরকারি হাসপাতালে, যাতে কম ফিতে ডায়ালাইসিস করানো সম্ভব হয়। অনেকের এক সেশনে ডায়ালাইসিস করাতে হয় ৮-১২টি। যদি সরকারি হাসপাতালে এক সেশনে এত বেশি ফি দিয়ে ডায়ালাইসিস করাতে হয়, তাহলে এ টাকা কেমন করে জোগাড় করবে রোগী ও রোগীর পরিবার। এ রোগীরা সরকারি হাসপাতাল ছাড়া যাবে কোথায়? কিডনি ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ২ কোটি কিডনি রোগী রয়েছে; তার মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয় এবং এদের ৭৫ ভাগই মৃত্যুবরণ করে থাকে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের অভাবে। প্রতিবছর কিডনি বিকল হয়েই মারা যায় ২০ হাজারের মতো।
সরকারি ভর্তুকি সুবিধায় গরিব ও অসহায় রোগীরা গত বছরও সরকারিভাবে ৫১০ টাকা আর বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৭৯৫ টাকা করে দিয়ে সেবা পেতেন। কিন্তু এ বছরেই ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করে সরকারিভাবে ৫৩৫ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৯৩০ টাকা নিচ্ছে। পিপিপির আওতায় সরকার ও স্যান্ডরের করা চুক্তিতে ৫ শতাংশ ফি বৃদ্ধি করার কথা উল্লেখ রয়েছে। একজন রোগীর আত্মীয় মুহাম্মদ মুক্তার হোসাইন বলেন-তার রোগীকে গত বছর ৫১০ টাকা দিয়ে ডায়ালাইসিস করা হতো; কিন্তু এ বছর ডায়ালাইসিস করতে গেলে বলা হয় ২ হাজার ৯৩০ টাকা ছাড়া ডায়ালাইসিস করা হবে না। তার রোগীর প্রতিমাসে ১২টা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। ফি যদি এত বেশি হয়, তাহলে এত টাকা পাবে কোথায়? এরকম হলে তো সরকারি হাসপাতালেও ডায়ালাইসিস করাতে পারবে না। হাটহাজারী থেকে আসা ইফতেখার উদ্দিন নামে অন্য একজন রোগী জানান-আমি এক বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছি। এর মধ্যে তিন মাস ধরে আমার টানা ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। এখন আমি সম্পূর্ণ অক্ষম মানুষ। এ সময়ে হঠাৎ করে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে কষ্টে পড়ে গেলাম। জমি বিক্রি করে ও আত্মীয়স্বজন থেকে ধারদেনা করে কোনোমতে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে।
গণমাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান বলেছেন, ফি বাড়ানোর বিষয়টি চুক্তিতেই উল্লেখ আছে। এ চুক্তি সরকারের সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছরই ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে; এ বছর বাড়ছে, তা কিন্তু নয়। প্রতি বছর রোগীর সংখ্যা বাড়ছে; কিন্তু সেশন বাড়ছে না। আমাদের কম ফির সেশন নির্ধারিত। আগে যে রোগী কম ফির সুবিধা পেতেন, এখন রোগী বাড়ার কারণে আমাদের সুবিধাও কমাতে হচ্ছে। ডায়ালাইসিস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাজমুল হাসান বলেন, রোগী বাড়তে থাকায় কম ফির সুবিধা কমে গেছে। এছাড়া ফি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছরই এ ফি বাড়ে।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় ঢাকার জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসে দুটি সেন্টার স্থাপন করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড। এর মধ্যে ঢাকায় জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে ৫৯টি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেলে ৩১টি মেশিনে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুটি সেন্টারে ফি বৃদ্ধি করা হলেও ঢাকায় জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে যাদের সুবিধা দেওয়া হতো, এ বছরও তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে না গত বছরের মতো সুবিধা। এ ছাড়াও ঢাকায় গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারে কম খরচে সেবা নিতে পারেন সাধারণ রোগীরা। এতে শ্রেণিভেদে ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ডায়ালাইসিস করানো যায়। তবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাতে গেলে প্রতিবারে গুনতে হয় প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো। এ কারণে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তরা শেষ আশ্রয়স্থল হিসাবে খুঁজে নেয় চট্টগ্রাম মেডিকেলকে।
অনেক দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা ডায়ালাইসিস করানোর জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে আসে। যদি এত টাকা ফি বৃদ্ধি পায়, তাহলে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনেক রোগী ডায়ালাইসিস করে বেঁচে আছেন। যদি ডায়ালাইসিস করাতে না পারেন, তবে মৃত্যু হবে এসব কিডনি রোগীর। উল্লেখ্য, বৃহত্তর চট্টগ্রামের কিডনি রোগীদের জন্য ২০১৭ সালের ৫ মার্চ ৩১টি মেশিন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করা হয়। স্যান্ডর কর্তৃপক্ষের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে সংকটে পড়েছেন কিডনি রোগীরা।
সরকারি হাসপাতালে মানুষজন আসেন কম টাকায় ডায়ালাইসিস করার জন্য, যাদের বেশির ভাগ গরিব অসহায় রোগী। এভাবে যদি ফি বৃদ্ধি করা হয় আর ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্রদের জন্য এ বিশাল চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব নয়। কিডনি রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য জেলা পর্যায়ে ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা রাখা এবং প্রতিটি মেডিকেল কলেজে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা দরকার। কিডনি রোগীরা যাতে আগের বছরের ফিতে সেবা নিতে পারে, এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্যান্ডর কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
চট্টগ্রাম মেডিকেলে ডায়ালাইসিস ফি কমানো হোক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে গরিব-দুঃখী রোগীদের মধ্যে অসহায়ত্ব নেমে এসেছে। কিডনি রোগীর জন্য ডায়ালাইসিস করানো অপরিহার্য। যে পরিবারে কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস করাতে হয়, সে পরিবার জানে, চিকিৎসা চালানো কতটা কষ্টকর। ব্যয়বহুল হওয়াতে অনেকেই প্রাইভেটে ডায়ালাইসিস করানো ভাবতেই পারেন না। অর্থের অভাবে অনেকের মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করতে হয়।
ডায়ালাইসিস করানো ছাড়াও রোগীর ওষুধপত্রাদি, পরিবারের খরচ জোগানো অনেক কষ্ট। অনেককে ধারদেনা করে চিকিৎসা চালাতে হয়, কেউ কেউ জায়গা জমি বিক্রি করে আজ নিঃস্ব। মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষকে কিডনি রোগীর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। গরিব অসহায় রোগীরা কোনোমতে চিকিৎসা চালানোর জন্য আশ্রয়স্থল হিসাবে বেছে নেয় সরকারি হাসপাতালকে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসব অসহায় হতদরিদ্র রোগী কষ্ট করে আসেন সরকারি হাসপাতালে, যাতে কম ফিতে ডায়ালাইসিস করানো সম্ভব হয়। অনেকের এক সেশনে ডায়ালাইসিস করাতে হয় ৮-১২টি। যদি সরকারি হাসপাতালে এক সেশনে এত বেশি ফি দিয়ে ডায়ালাইসিস করাতে হয়, তাহলে এ টাকা কেমন করে জোগাড় করবে রোগী ও রোগীর পরিবার। এ রোগীরা সরকারি হাসপাতাল ছাড়া যাবে কোথায়? কিডনি ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ২ কোটি কিডনি রোগী রয়েছে; তার মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয় এবং এদের ৭৫ ভাগই মৃত্যুবরণ করে থাকে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের অভাবে। প্রতিবছর কিডনি বিকল হয়েই মারা যায় ২০ হাজারের মতো।
সরকারি ভর্তুকি সুবিধায় গরিব ও অসহায় রোগীরা গত বছরও সরকারিভাবে ৫১০ টাকা আর বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৭৯৫ টাকা করে দিয়ে সেবা পেতেন। কিন্তু এ বছরেই ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করে সরকারিভাবে ৫৩৫ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৯৩০ টাকা নিচ্ছে। পিপিপির আওতায় সরকার ও স্যান্ডরের করা চুক্তিতে ৫ শতাংশ ফি বৃদ্ধি করার কথা উল্লেখ রয়েছে। একজন রোগীর আত্মীয় মুহাম্মদ মুক্তার হোসাইন বলেন-তার রোগীকে গত বছর ৫১০ টাকা দিয়ে ডায়ালাইসিস করা হতো; কিন্তু এ বছর ডায়ালাইসিস করতে গেলে বলা হয় ২ হাজার ৯৩০ টাকা ছাড়া ডায়ালাইসিস করা হবে না। তার রোগীর প্রতিমাসে ১২টা ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। ফি যদি এত বেশি হয়, তাহলে এত টাকা পাবে কোথায়? এরকম হলে তো সরকারি হাসপাতালেও ডায়ালাইসিস করাতে পারবে না। হাটহাজারী থেকে আসা ইফতেখার উদ্দিন নামে অন্য একজন রোগী জানান-আমি এক বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছি। এর মধ্যে তিন মাস ধরে আমার টানা ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। এখন আমি সম্পূর্ণ অক্ষম মানুষ। এ সময়ে হঠাৎ করে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে কষ্টে পড়ে গেলাম। জমি বিক্রি করে ও আত্মীয়স্বজন থেকে ধারদেনা করে কোনোমতে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে।
গণমাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান বলেছেন, ফি বাড়ানোর বিষয়টি চুক্তিতেই উল্লেখ আছে। এ চুক্তি সরকারের সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছরই ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে; এ বছর বাড়ছে, তা কিন্তু নয়। প্রতি বছর রোগীর সংখ্যা বাড়ছে; কিন্তু সেশন বাড়ছে না। আমাদের কম ফির সেশন নির্ধারিত। আগে যে রোগী কম ফির সুবিধা পেতেন, এখন রোগী বাড়ার কারণে আমাদের সুবিধাও কমাতে হচ্ছে। ডায়ালাইসিস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাজমুল হাসান বলেন, রোগী বাড়তে থাকায় কম ফির সুবিধা কমে গেছে। এছাড়া ফি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছরই এ ফি বাড়ে।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় ঢাকার জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসে দুটি সেন্টার স্থাপন করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড। এর মধ্যে ঢাকায় জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে ৫৯টি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেলে ৩১টি মেশিনে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুটি সেন্টারে ফি বৃদ্ধি করা হলেও ঢাকায় জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে যাদের সুবিধা দেওয়া হতো, এ বছরও তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে না গত বছরের মতো সুবিধা। এ ছাড়াও ঢাকায় গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারে কম খরচে সেবা নিতে পারেন সাধারণ রোগীরা। এতে শ্রেণিভেদে ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ডায়ালাইসিস করানো যায়। তবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাতে গেলে প্রতিবারে গুনতে হয় প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো। এ কারণে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তরা শেষ আশ্রয়স্থল হিসাবে খুঁজে নেয় চট্টগ্রাম মেডিকেলকে।
অনেক দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা ডায়ালাইসিস করানোর জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে আসে। যদি এত টাকা ফি বৃদ্ধি পায়, তাহলে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনেক রোগী ডায়ালাইসিস করে বেঁচে আছেন। যদি ডায়ালাইসিস করাতে না পারেন, তবে মৃত্যু হবে এসব কিডনি রোগীর। উল্লেখ্য, বৃহত্তর চট্টগ্রামের কিডনি রোগীদের জন্য ২০১৭ সালের ৫ মার্চ ৩১টি মেশিন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করা হয়। স্যান্ডর কর্তৃপক্ষের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করার কারণে সংকটে পড়েছেন কিডনি রোগীরা।
সরকারি হাসপাতালে মানুষজন আসেন কম টাকায় ডায়ালাইসিস করার জন্য, যাদের বেশির ভাগ গরিব অসহায় রোগী। এভাবে যদি ফি বৃদ্ধি করা হয় আর ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্রদের জন্য এ বিশাল চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব নয়। কিডনি রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য জেলা পর্যায়ে ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা রাখা এবং প্রতিটি মেডিকেল কলেজে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা দরকার। কিডনি রোগীরা যাতে আগের বছরের ফিতে সেবা নিতে পারে, এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্যান্ডর কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ