উইন্ডসর ক্যাসেল ও রানির কবর
সম্প্রতি ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাজার বছরের প্রাচীন রাজদুর্গ ‘উইন্ডসর ক্যাসেল’ দেখতে গিয়েছিলাম। সেন্ট্রাল লন্ডন থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরের উইন্ডসর এলাকায় টেমসের তীরে এ ক্যাসেল বা দুর্গের অবস্থান। ১০৭০ সালে দুর্গটি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন ব্রিটিশ রাজা উইলিয়াম দ্যা কনকরার।
১৬ বছরে দুর্গের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল। ১৩ হাজার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত উইন্ডসর ক্যাসেলের একটি হলের নাম হচ্ছে সেন্ট জর্জ চ্যাপেল। চ্যাপেল বলা হয় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ছোট্ট আকারের প্রার্থনা হলকে। ওই চ্যাপেলের লাগোয়া একটি ছোট্ট রুমের নাম হচ্ছে কিং ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল। এটি দেখতে মসজিদের বাইরে থেকে মেহরাবের অংশ যেভাবে দেখা যায়, অনেকটা সেরকম।
প্রয়াত রানির পিতা ষষ্ঠ জর্জের স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে এ চ্যাপেল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটির নাম চ্যাপেল বা প্রার্থনাঘর হলেও এখানে কোনো প্রার্থনা হয় না। এটা মূলত গোরস্তান। অনেকটা মিসরের ফেরাউন রাজাদের কবরস্থান ‘পিরামিড’র মতোই, যে পিরামিডের ভেতরে রাজা-রানিদের লাশ মমি করে রেখে দেওয়া হতো। সঙ্গে দেওয়া হতো মূল্যবান স্বর্ণ-রোপ্য। সেখানে পাহারাদারও নিযুক্ত করা হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল, পিরামিডের ভেতরে লাশ মমি করে রেখে দিলে মৃতদের আত্মা সেখানে পরম শান্তিতে থাকে।
প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পিতা ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৫২ সালে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে সমাহিত করা জন্য কোনো কবরস্থান আগে থেকে প্রস্তুত ছিল না। তাই তার মৃত্যুর পর উইন্ডসর ক্যাসেলের বর্তমান সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের বেইসমেন্টে রয়েল ভল্টে (রাজকীয় সমাধিকক্ষ) তার লাশবাহী কফিনটি রেখে দেওয়া হয়। পিতার মৃত্যুর পর এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি নিযুক্ত হন। এর ১০ বছর পর ১৯৬২ সালে তিনি তার বাবার লাশ সমাহিত করার জন্য এই কিং জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল (কবরস্থান) প্রতিষ্ঠা করেন। কবরস্থান প্রতিষ্ঠার পর পিতার লাশবাহী কফিনটি রয়েল ভল্ট থেকে বের করে কবরস্থানে স্থাপন করা হয়। এরপর ২০০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রানি এলিজাবেথের একমাত্র ছোট বোন প্রিন্সেস মার্গারেট মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার লাশটি দাহ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। তাই মৃত্যুর পর লাশটি পুড়িয়ে এর ছাই একটি বক্সে ভরে বাবার কফিনের এক পাশে একটি প্লাকের ওপর রেখে দেওয়া হয়। ছোট বোনের মৃত্যুর মাত্র ৫০ দিনের মাথায় ৩০ মার্চ ২০০২ মারা যান রানির মাতা এলিজাবেথ এঞ্জেলা। তখন মায়ের লাশবাহী কফিনটি তার (রানির) পিতা রাজা ষষ্ঠ জর্জের কফিনের ওপর স্থাপন করা হয়। গত বছর (৯ এপ্রিল ২০২১) মারা যান রানির স্বামী প্রিন্স ফিলিপ। তখন তার লাশবাহী কফিনটি রয়েল ভল্টের ভেতরে রেখে দেওয়া হয়, যাতে রানির মৃত্যুর পর তিনি তার সঙ্গে মিলিত হতে পারেন এবং একটি কফিনের ওপর অন্যটি প্রতিস্থাপন করা যায়।
৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ মৃত্যুবরণ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার প্রথম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয় ১৯ সেপ্টেম্বর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে। উল্লেখ্য, অ্যাবে হচ্ছে খ্রিষ্টান ধর্মের বড় অকারের প্রার্থনাস্থল। ওখানে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে নিয়ে যাওয়া হয় উইন্ডসর ক্যাসেলে। সেখানকার ছোট প্রার্থনা হলো সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে স্বল্প পরিসরে আরও একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। অনেকটা দ্বিতীয় জানাজার মতো। এরপর চ্যাপেলের ফ্লোরের মধ্যখানে একটি বিশেষ ধরনের লিফটে কফিনটি রাখা হয়। লিফটের সুইচ টিপ দিলে ক্রমেই কফিনটি নিচের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
আমরা এ দৃশ্য দেখে অনেকেই ভেবেছিলাম, নিচেই বোধহয় কবরস্থান। আর লাশটি নতুন খোদাই করা কবরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাহিত হয়ে গেছে। আসলে তা নয়। মিডিয়ায় দেখানোর জন্য এটি ছিল একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া মাত্র। মূলত ওই বিশেষ লিফটে করে কফিনটি সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের বেইসমেন্টে নামানোর পর সেখান থেকে হাতে হাতে নিয়ে যাওয়া হয় কিং জর্জ চ্যাপেল বা পারিবারিক গোরস্তানে। সেখানে প্রথমে রুমের মেঝেতে স্থাপন করা হয় স্বামী প্রিন্স ফিলিপের লাশবাহী কফিন। আর তার ওপর রাখা হয় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কফিন।
এই হলো উইন্ডসর দুর্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পারিবারিক গোরস্তানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। ১০ ফুট প্রস্থ, ১৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট উচ্চতার একটি রুমই হচ্ছে রানির পারিবারিক গোরস্তান। এখানে লাশবাহী চারটি কফিন ও একটি ছাইভর্তি বক্স রাখা আছে। রুমের ছাদের সঙ্গে সিঁড়িযুক্ত একটি ছোট্ট দরজা রয়েছে। তাতে লেখা আছে জর্জ ষষ্ঠ ১৮৯৫-১৯৫২, এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২।
২০ সেপ্টেম্বর (২০২২) ফেসবুকে লেখা একটি স্ট্যাটাসে রানির মৃত্যুর পর যে কফিনে তার লাশটি রাখা হয়েছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছিলাম। স্কটল্যান্ড থেকে যে কফিনে করে লাশ লন্ডনে নিয়ে আসা হয়েছিল, তা সাদামাটা কোনো কফিন নয়। এটি রানির জন্য তৈরি করা হয়েছিল প্রায় ৩০ বছর আগে। শুধু রাজপরিবারের সদস্যদের লাশ বহনের জন্য এ ধরনের বিশেষ কফিন তৈরি করা হয়। রানির শেষকৃত্য কীভাবে হবে-নৌবাহিনী অফিসাররা সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে আসছিলেন ২০ বছর আগে থেকেই। কফিনটি তৈরি করা হয়েছিল ইংলিশ ওক কাঠ দিয়ে। আর সিসা দিয়ে বাতাস প্রবেশের সব পথ একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কফিনটির ওজন ২৫০ কেজি। এটি বহন করতে আটজন সুঠামদেহী মানুষের প্রয়োজন হয়।
গত ২৪ অক্টোবর উইন্ডসর ক্যাসেল ঘুরে দেখার সময় রাজপ্রাসাদের একজন নারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়। তার কাছে রানির গোরস্তানের কথা জানতে চাই। তিনি বিস্তারিত খুলে বলেন। জানতে চাই, গোরস্তানটি কি দেখা যাবে? তিনি বলেন, ওখানে যাওয়ার কারোরই অনুমতি নেই। জানতে চাইলাম, কফিনের ভেতরে লাশগুলো কি অক্ষত রয়েছে? বললেন, আসলে কফিনের ভেতরটাই তো গ্রেইভ (কবর)। ওখানে কী হচ্ছে, লাশ পচে গেছে; নাকি অক্ষত রয়েছে, কেউ বলতে পারবে না। ভেতরের খবর আমরা কেউই জানি না।
তিনি আরও জানান, সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের নিচের রয়েল ভল্টে রাজপরিবারের ২৪ সদস্যের লাশবাহী কফিন রয়েছে। কফিনগুলো কখনো খোলা হয়নি। লাশ কোন অবস্থায় আছে, কেউ জানে না। বললাম, রাজা চাইলে কি তার মায়ের কফিন খুলে দেখতে পারেন? হেসে বললেন, পারবেন না কেন; অবশ্যই পারবেন। কারণ, তিনি তো রাজা।
তাইসির মাহমুদ : সম্পাদক, সাপ্তাহিক দেশ; সাধারণ সম্পাদক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব
উইন্ডসর ক্যাসেল ও রানির কবর
তাইসির মাহমুদ
২৭ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সম্প্রতি ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাজার বছরের প্রাচীন রাজদুর্গ ‘উইন্ডসর ক্যাসেল’ দেখতে গিয়েছিলাম। সেন্ট্রাল লন্ডন থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরের উইন্ডসর এলাকায় টেমসের তীরে এ ক্যাসেল বা দুর্গের অবস্থান। ১০৭০ সালে দুর্গটি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন ব্রিটিশ রাজা উইলিয়াম দ্যা কনকরার।
১৬ বছরে দুর্গের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল। ১৩ হাজার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত উইন্ডসর ক্যাসেলের একটি হলের নাম হচ্ছে সেন্ট জর্জ চ্যাপেল। চ্যাপেল বলা হয় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ছোট্ট আকারের প্রার্থনা হলকে। ওই চ্যাপেলের লাগোয়া একটি ছোট্ট রুমের নাম হচ্ছে কিং ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল। এটি দেখতে মসজিদের বাইরে থেকে মেহরাবের অংশ যেভাবে দেখা যায়, অনেকটা সেরকম।
প্রয়াত রানির পিতা ষষ্ঠ জর্জের স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে এ চ্যাপেল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটির নাম চ্যাপেল বা প্রার্থনাঘর হলেও এখানে কোনো প্রার্থনা হয় না। এটা মূলত গোরস্তান। অনেকটা মিসরের ফেরাউন রাজাদের কবরস্থান ‘পিরামিড’র মতোই, যে পিরামিডের ভেতরে রাজা-রানিদের লাশ মমি করে রেখে দেওয়া হতো। সঙ্গে দেওয়া হতো মূল্যবান স্বর্ণ-রোপ্য। সেখানে পাহারাদারও নিযুক্ত করা হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল, পিরামিডের ভেতরে লাশ মমি করে রেখে দিলে মৃতদের আত্মা সেখানে পরম শান্তিতে থাকে।
প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পিতা ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৫২ সালে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে সমাহিত করা জন্য কোনো কবরস্থান আগে থেকে প্রস্তুত ছিল না। তাই তার মৃত্যুর পর উইন্ডসর ক্যাসেলের বর্তমান সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের বেইসমেন্টে রয়েল ভল্টে (রাজকীয় সমাধিকক্ষ) তার লাশবাহী কফিনটি রেখে দেওয়া হয়। পিতার মৃত্যুর পর এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি নিযুক্ত হন। এর ১০ বছর পর ১৯৬২ সালে তিনি তার বাবার লাশ সমাহিত করার জন্য এই কিং জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল (কবরস্থান) প্রতিষ্ঠা করেন। কবরস্থান প্রতিষ্ঠার পর পিতার লাশবাহী কফিনটি রয়েল ভল্ট থেকে বের করে কবরস্থানে স্থাপন করা হয়। এরপর ২০০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রানি এলিজাবেথের একমাত্র ছোট বোন প্রিন্সেস মার্গারেট মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার লাশটি দাহ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। তাই মৃত্যুর পর লাশটি পুড়িয়ে এর ছাই একটি বক্সে ভরে বাবার কফিনের এক পাশে একটি প্লাকের ওপর রেখে দেওয়া হয়। ছোট বোনের মৃত্যুর মাত্র ৫০ দিনের মাথায় ৩০ মার্চ ২০০২ মারা যান রানির মাতা এলিজাবেথ এঞ্জেলা। তখন মায়ের লাশবাহী কফিনটি তার (রানির) পিতা রাজা ষষ্ঠ জর্জের কফিনের ওপর স্থাপন করা হয়। গত বছর (৯ এপ্রিল ২০২১) মারা যান রানির স্বামী প্রিন্স ফিলিপ। তখন তার লাশবাহী কফিনটি রয়েল ভল্টের ভেতরে রেখে দেওয়া হয়, যাতে রানির মৃত্যুর পর তিনি তার সঙ্গে মিলিত হতে পারেন এবং একটি কফিনের ওপর অন্যটি প্রতিস্থাপন করা যায়।
৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ মৃত্যুবরণ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার প্রথম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয় ১৯ সেপ্টেম্বর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে। উল্লেখ্য, অ্যাবে হচ্ছে খ্রিষ্টান ধর্মের বড় অকারের প্রার্থনাস্থল। ওখানে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে নিয়ে যাওয়া হয় উইন্ডসর ক্যাসেলে। সেখানকার ছোট প্রার্থনা হলো সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে স্বল্প পরিসরে আরও একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। অনেকটা দ্বিতীয় জানাজার মতো। এরপর চ্যাপেলের ফ্লোরের মধ্যখানে একটি বিশেষ ধরনের লিফটে কফিনটি রাখা হয়। লিফটের সুইচ টিপ দিলে ক্রমেই কফিনটি নিচের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
আমরা এ দৃশ্য দেখে অনেকেই ভেবেছিলাম, নিচেই বোধহয় কবরস্থান। আর লাশটি নতুন খোদাই করা কবরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাহিত হয়ে গেছে। আসলে তা নয়। মিডিয়ায় দেখানোর জন্য এটি ছিল একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া মাত্র। মূলত ওই বিশেষ লিফটে করে কফিনটি সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের বেইসমেন্টে নামানোর পর সেখান থেকে হাতে হাতে নিয়ে যাওয়া হয় কিং জর্জ চ্যাপেল বা পারিবারিক গোরস্তানে। সেখানে প্রথমে রুমের মেঝেতে স্থাপন করা হয় স্বামী প্রিন্স ফিলিপের লাশবাহী কফিন। আর তার ওপর রাখা হয় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কফিন।
এই হলো উইন্ডসর দুর্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পারিবারিক গোরস্তানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। ১০ ফুট প্রস্থ, ১৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট উচ্চতার একটি রুমই হচ্ছে রানির পারিবারিক গোরস্তান। এখানে লাশবাহী চারটি কফিন ও একটি ছাইভর্তি বক্স রাখা আছে। রুমের ছাদের সঙ্গে সিঁড়িযুক্ত একটি ছোট্ট দরজা রয়েছে। তাতে লেখা আছে জর্জ ষষ্ঠ ১৮৯৫-১৯৫২, এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২।
২০ সেপ্টেম্বর (২০২২) ফেসবুকে লেখা একটি স্ট্যাটাসে রানির মৃত্যুর পর যে কফিনে তার লাশটি রাখা হয়েছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছিলাম। স্কটল্যান্ড থেকে যে কফিনে করে লাশ লন্ডনে নিয়ে আসা হয়েছিল, তা সাদামাটা কোনো কফিন নয়। এটি রানির জন্য তৈরি করা হয়েছিল প্রায় ৩০ বছর আগে। শুধু রাজপরিবারের সদস্যদের লাশ বহনের জন্য এ ধরনের বিশেষ কফিন তৈরি করা হয়। রানির শেষকৃত্য কীভাবে হবে-নৌবাহিনী অফিসাররা সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে আসছিলেন ২০ বছর আগে থেকেই। কফিনটি তৈরি করা হয়েছিল ইংলিশ ওক কাঠ দিয়ে। আর সিসা দিয়ে বাতাস প্রবেশের সব পথ একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কফিনটির ওজন ২৫০ কেজি। এটি বহন করতে আটজন সুঠামদেহী মানুষের প্রয়োজন হয়।
গত ২৪ অক্টোবর উইন্ডসর ক্যাসেল ঘুরে দেখার সময় রাজপ্রাসাদের একজন নারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়। তার কাছে রানির গোরস্তানের কথা জানতে চাই। তিনি বিস্তারিত খুলে বলেন। জানতে চাই, গোরস্তানটি কি দেখা যাবে? তিনি বলেন, ওখানে যাওয়ার কারোরই অনুমতি নেই। জানতে চাইলাম, কফিনের ভেতরে লাশগুলো কি অক্ষত রয়েছে? বললেন, আসলে কফিনের ভেতরটাই তো গ্রেইভ (কবর)। ওখানে কী হচ্ছে, লাশ পচে গেছে; নাকি অক্ষত রয়েছে, কেউ বলতে পারবে না। ভেতরের খবর আমরা কেউই জানি না।
তিনি আরও জানান, সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের নিচের রয়েল ভল্টে রাজপরিবারের ২৪ সদস্যের লাশবাহী কফিন রয়েছে। কফিনগুলো কখনো খোলা হয়নি। লাশ কোন অবস্থায় আছে, কেউ জানে না। বললাম, রাজা চাইলে কি তার মায়ের কফিন খুলে দেখতে পারেন? হেসে বললেন, পারবেন না কেন; অবশ্যই পারবেন। কারণ, তিনি তো রাজা।
তাইসির মাহমুদ : সম্পাদক, সাপ্তাহিক দেশ; সাধারণ সম্পাদক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023