তার শূন্যতা পূরণে অনেক সময় লাগবে
দেখতে দেখতে এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বীর সেনানী যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তার মতো কর্মদ্যোমী মানুষের শূন্যস্থান পূরণ হতে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে। আমি অনেক পত্রিকা সৌজন্য সংখ্যা পাই। ফলে কিনতে হয় না। শুধু একটিমাত্র পত্রিকা টাকা দিয়ে কিনে পড়ি। সেটি হচ্ছে যুগান্তর।
এর কারণ হল- ব্যাংকিং খাতসহ অর্থনৈতিক অন্যান্য বিষয়গুলো ব্যাপক গুরুত্বসহকারে এবং বস্তুনিষ্টভাবে তুলে ধরা হয় যুগান্তর পত্রিকায়। এই পত্রিকাটি তিনি গড়ে তুলেছেন তার মেধা, শ্রম ও মননের মাধ্যমে। সমাজ সচেতন, চিন্তা-চেতনার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন এমন একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
নুরুল ইসলাম শুধু যে শিল্প-কারখানা করে অর্থ উপার্জন করেছেন, তা নয়। তিনি দেশের কল্যাণের কথা, সাধারণ মানুষের কথাও ভেবেছেন। মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন একজন স্বচ্ছ মানুষ। মুখে ও মনে তার ছিল একই সুর। ফলে সারাজীবন দৃঢ়তার সঙ্গেই জীবনযাপন করেছেন। কখনও অন্যায়ের কাছে তাকে মাথা নত করতে দেখিনি। এমন মানুষ বর্তমান সময়ে পাওয়া দুষ্কর।
স্বপ্ন সবাই দেখেন, কিন্তু কতজন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন? নুরুল ইসলাম এমন এক ব্যক্তিত্বের নাম, যিনি শুধু স্বপ্নই দেখতেন না, বরং তা বাস্তবায়ন করেই ছাড়তেন। তা না হলে স্বল্প সময়ে এত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না। তাও এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যা ঝড়ের বেগে পড়ে যাবে। বরং তার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত।
বিশেষ করে যমুনা ফিউচার পার্ক তো বিশ্বমানের শপিংমল। তার প্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও লক্ষ্যণীয়। এর মাধ্যমে শিল্পের শাখায় শাখায় রেখেছেন অবদান। প্রচুর কর্মসংস্থান করেছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায়- তিনি ছিলেন একজন অর্থনীতির কারিগর।
এছাড়া তিনি ছিলেন দুঃসাহসিক এবং নির্ভীক। ডর-ভয়ের ঊর্ধ্বে উঠে অনেক অন্যায়-অনিয়মের মূল হোতার মুখোশ খুলেছেন। ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। ঋণখেলাপি দু’চোখে দেখতে পারতেন না। নুরুল ইসলাম দেশকে অনেক দিয়েছেন। স্বল্প সময়ে এত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এটা সহজ কথা নয়।
তিনি ছিলেন একজন অর্থনীতি তারকা। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করছি। আশা করছি তার অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো পরিবারের সদস্যরা বাস্তবায়নে ব্রতী হবেন। ওনার রেখে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন সুচারুরূপে। তার শিক্ষা ও দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে যমুনা গ্রুপ। সুনামের সঙ্গে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখবে এই প্রত্যাশা থাকল।
লেখক : সাবেক লিড ইকোনমিস্ট, ঢাকা অফিস, বিশ্বব্যাংক
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তার শূন্যতা পূরণে অনেক সময় লাগবে
দেখতে দেখতে এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বীর সেনানী যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তার মতো কর্মদ্যোমী মানুষের শূন্যস্থান পূরণ হতে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে। আমি অনেক পত্রিকা সৌজন্য সংখ্যা পাই। ফলে কিনতে হয় না। শুধু একটিমাত্র পত্রিকা টাকা দিয়ে কিনে পড়ি। সেটি হচ্ছে যুগান্তর।
এর কারণ হল- ব্যাংকিং খাতসহ অর্থনৈতিক অন্যান্য বিষয়গুলো ব্যাপক গুরুত্বসহকারে এবং বস্তুনিষ্টভাবে তুলে ধরা হয় যুগান্তর পত্রিকায়। এই পত্রিকাটি তিনি গড়ে তুলেছেন তার মেধা, শ্রম ও মননের মাধ্যমে। সমাজ সচেতন, চিন্তা-চেতনার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন এমন একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
নুরুল ইসলাম শুধু যে শিল্প-কারখানা করে অর্থ উপার্জন করেছেন, তা নয়। তিনি দেশের কল্যাণের কথা, সাধারণ মানুষের কথাও ভেবেছেন। মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন একজন স্বচ্ছ মানুষ। মুখে ও মনে তার ছিল একই সুর। ফলে সারাজীবন দৃঢ়তার সঙ্গেই জীবনযাপন করেছেন। কখনও অন্যায়ের কাছে তাকে মাথা নত করতে দেখিনি। এমন মানুষ বর্তমান সময়ে পাওয়া দুষ্কর।
স্বপ্ন সবাই দেখেন, কিন্তু কতজন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন? নুরুল ইসলাম এমন এক ব্যক্তিত্বের নাম, যিনি শুধু স্বপ্নই দেখতেন না, বরং তা বাস্তবায়ন করেই ছাড়তেন। তা না হলে স্বল্প সময়ে এত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না। তাও এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যা ঝড়ের বেগে পড়ে যাবে। বরং তার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত।
বিশেষ করে যমুনা ফিউচার পার্ক তো বিশ্বমানের শপিংমল। তার প্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও লক্ষ্যণীয়। এর মাধ্যমে শিল্পের শাখায় শাখায় রেখেছেন অবদান। প্রচুর কর্মসংস্থান করেছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায়- তিনি ছিলেন একজন অর্থনীতির কারিগর।
এছাড়া তিনি ছিলেন দুঃসাহসিক এবং নির্ভীক। ডর-ভয়ের ঊর্ধ্বে উঠে অনেক অন্যায়-অনিয়মের মূল হোতার মুখোশ খুলেছেন। ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। ঋণখেলাপি দু’চোখে দেখতে পারতেন না। নুরুল ইসলাম দেশকে অনেক দিয়েছেন। স্বল্প সময়ে এত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এটা সহজ কথা নয়।
তিনি ছিলেন একজন অর্থনীতি তারকা। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করছি। আশা করছি তার অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো পরিবারের সদস্যরা বাস্তবায়নে ব্রতী হবেন। ওনার রেখে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন সুচারুরূপে। তার শিক্ষা ও দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে যমুনা গ্রুপ। সুনামের সঙ্গে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখবে এই প্রত্যাশা থাকল।
লেখক : সাবেক লিড ইকোনমিস্ট, ঢাকা অফিস, বিশ্বব্যাংক