Logo
Logo
×

অটোটেক

গাড়ির জগতে বিপ্লব

ফ্রান্সে চালু হলো ‘ওয়্যারলেস চার্জিং রোড’ প্রযুক্তি

Icon

মো. আবদুস সালিম

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং পদ্ধতিতে বিপ্লব আনছে ফ্রান্স। রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক প্রযুক্তি, ‘ওয়্যারলেস চার্জিং রোড’ বা তারবিহীন চার্জিং সড়ক।

১.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে চলাচলের সময় গাড়ির ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হবে, কোনো তার বা প্লাগ-ইন ছাড়াই। বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে ঘণ্টায় ২০০ থেকে ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত, যা টেসলার ভি-থ্রি সুপার চার্জারের সমমানের বা তার চেয়েও বেশি শক্তি প্রদান করে।

যেভাবে কাজ করে এ প্রযুক্তি

সড়কের নিচে বসানো তামার কয়েল থেকে উৎপন্ন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড গাড়ির নিচের কয়েলে বিদ্যুৎ স্থানান্তর করে। ফলে ভৌত সংযোগ ছাড়াই চার্জিং সম্পন্ন হয়। চার্জিং খরচও পরিশোধ করা যাবে গাড়ির নিজস্ব ইলেকট্রনিক সিস্টেমের মাধ্যমে।

সবকিছু মাটির নিচে থাকায় এটি বন্যা, ঝড়-বৃষ্টি বা তুষারপাতেও নিরাপদ। বাহ্যিকভাবে কিছুই দেখা যায় না, ফলে সড়কের সৌন্দর্যও অক্ষুণ্ন থাকে।

চলন্ত গাড়িতেই চার্জিং

এ পদ্ধতিতে চার্জ করার জন্য গাড়ি থামানোর প্রয়োজন নেই। নির্দিষ্ট সীমারেখায় প্রবেশ করলেই গাড়ি চার্জ হতে শুরু করবে-চালক বা যাত্রীরা টেরই পাবেন না। ফলে দীর্ঘপথে সময় বাঁচবে, বড় ব্যাটারি বহনের ঝামেলাও কমবে।

প্রযুক্তির পটভূমি

এ ধারণার মূলনীতি এসেছে উনিশশ শতকের প্রযুক্তিবিদ মাইকেল ফ্যারাডে-এর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন তত্ত্ব থেকে। এরপর ধীরে ধীরে বিকশিত হয় ইন্ডাকটিভ চার্জিং প্রযুক্তি, যা আজকের তারবিহীন সড়কব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করেছে।

ফ্রান্সের পাশাপাশি নরওয়েসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশও একই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা

ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে সারা দেশে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ‘ওয়্যারলেস চার্জিং মহাসড়ক’ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সফল হলে এটি পরিবেশ, জ্বালানি দক্ষতা ও জনস্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার।

প্রযুক্তির নাম ‘ট্রান্সসিটিভ রোডওয়ে’

একইসঙ্গে সিগন্যাল প্রেরণ ও গ্রহণে সক্ষম এ প্রযুক্তি শুধু শক্তি স্থানান্তরই নয়, তথ্য আদান-প্রদানেও ব্যবহারযোগ্য হতে পারে যা ভবিষ্যতের ‘স্মার্ট রোড’ ধারণার বাস্তব রূপ দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম