Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

খুলনায় নির্বাচনি মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

শহরে ৪০টি নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন

Icon

আহমদ মুসা রঞ্জু, খুলনা

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে খুলনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। ছয়টি আসনেই বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় নির্বাচনি মাঠে ভিন্ন আবহ তৈরি হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কর্মী সভা, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ। তবে নির্বাচনি উচ্ছ্বাসের মধ্যেও সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সম্প্রতি কর্মসূচি ও গুপ্ত মিছিলের কারণে নির্বাচনি উত্তাপ বাড়ছে। এতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আশঙ্কা করছে টার্গেট কিলিং ও সহিংসতার। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের খুন, হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ অবস্থায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৪ মাসে খুলনা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে নেমে গেছে। কেএমপির আওতায় থাকা আটটি থানায় একের পর এক ৪১টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পাশাপাশি গুলি, কুপিয়ে হত্যা, বোমা হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে প্রায়ই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনি প্রচারকে ঘিরে সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্ত চক্র সুযোগ নিতে পারে, যা প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে নগরীর দুটি পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মিছিল থেকে পুলিশ তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করে। এছাড়া মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলের নেতারা।

কেএমপির সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের আজ ঢাকার কর্মসূচি এবং নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজনীতির মাঠে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। যে কারণে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। শহরের নিরাপত্তায় ৪০টি স্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে।

খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির ও খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহানআলী) আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ফুলবাড়িগেট, তেলিগাতীসহ কিছু এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে, যা নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে নির্বাচনি পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি খুন হয়েছে খুলনায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনের প্রার্থী মুফতি আমানুল্লাহ বলেন, খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা একাধিকবার প্রশাসনকে জানিয়েছি।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, কেউ যদি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করব। বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৪ (রূপসা- তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল অবশ্য খুলনায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেন, আমার সংসদীয় এলাকায় এখন পর্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচন উপলক্ষ্যে একটি দলের সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর। যে কারণে পতিত সরকারের দোসরদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনি মাঠ গরম করতে চাইছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরির জন্য।

খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পুলিশের। নির্বাচন সামনে রেখে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম