Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

মহান স্বাধীনতা দিবস

ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মহান স্বাধীনতা দিবস

ছবি: সংগৃহীত

মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। ৫৪ বছর আগে ঘোষিত হয়েছিল এদেশের স্বাধীনতা। সেটা ছিল এক আনন্দের দিন। তবে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস যেমন গৌরবের, তেমনই বেদনারও। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। আজ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেই সব জানা-অজানা শহিদকে, যারা তাদের বর্তমানকে বিসর্জন দিয়ে গেছেন এদেশের ভবিষ্যৎকে সুন্দর করার জন্য। আমরা শ্রদ্ধা জানাই মুক্তিযুদ্ধের সব সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাকে এবং যারা এ যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের সবাইকে।

মহাকালের বিচারে ৫৪ বছর খুব বড় সময় নয়। তবে এ সময়ের ব্যবধানে কোনো কোনো জাতির অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার নজিরও আছে। আজ আমাদের বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন স্বাধীনতার পর আমরা কতটা এগিয়েছি, কী ছিল আমাদের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা, পূরণ হয়েছে কতটা। কোথায় আমাদের ব্যর্থতা, কী এর কারণ। স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য যদি হয় ভৌগোলিকভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বা ভূখণ্ডের অধিকারী হওয়া, তাহলে তা অর্জিত হয়েছে। তবে শুধু এটুকুই মানুষের প্রত্যাশা ছিল না। পাকিস্তানের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে দেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশাও ছিল সবার। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের রায় মেনে না নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের দাবি প্রবল হয়ে উঠেছিল বাঙালির মধ্যে। তবে স্বাধীনতার পর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেলেও তা হোঁচট খেয়েছে বারবার। বজায় থাকেনি এর ধারাবাহিকতা। ফলে আজও প্রাতিষ্ঠানিকতা পায়নি গণতন্ত্র। এবার স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ১৬ বছরের গণতন্ত্রহীনতার পর এক নতুন বাংলাদেশে নতুন চিন্তায় পালিত হচ্ছে এবারের স্বাধীনতা দিবস। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনাই হোক এবারের স্বাধীনতা দিবসের অন্যতম অঙ্গীকার।

আমরা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর একচেটিয়াকরণ করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। অথচ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ নানা পর্যায়ে এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে তাদের সবারই অবদান রয়েছে। আজ নতুন প্রেক্ষাপটে এ উপলব্ধি জাগ্রত হোক সবার মনে। আমাদের রাজনীতিতে ঐকমত্যের অভাব ও অসহিষ্ণুতা রয়েছে। অন্তত জাতীয় ইস্যুগুলোয় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে ঐক্য থাকা প্রয়োজন হলেও অতীতের কোনো শাসনামলেই তা দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে দেশের চেয়ে দলের স্বার্থই হয়ে উঠেছে মুখ্য। এ প্রবণতা থেকে সবার বেরিয়ে আসা উচিত।

এটা সত্য যে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার প্রসার, নারী উন্নয়ন, শিশুমৃত্যুর হার কমানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে আমাদের। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হতে যাচ্ছে দেশ। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। এদেশের মানুষ ধর্মের নামে সহিংসতা সমর্থন করে না। তা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে; গড়ে তুলতে হবে রাজনৈতিক ঐকমত্য। সরকারকে মানবাধিকারের প্রশ্নে হতে হবে অঙ্গীকারবদ্ধ। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে সব বিভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সেই ঐক্যের ভিত্তিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো আমরা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব-এ প্রত্যাশা সবার। স্বাধীনতা দিবসে আমাদের পাঠক, লেখক, শুভানুধ্যায়ীসহ সমগ্র দেশবাসীর প্রতি রইল শুভেচ্ছা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম