আগেই গণভোটে অনড় জামায়াত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে-এখনো এই সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের কিছু কিছু বিষয়ে আরও ক্লারিফিকেশন দরকার। আমরা নিজেরা বসে পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’ তার মতে, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট অনুষ্ঠিত হলে এর গুরুত্ব অনেকটা চাপা পড়ে যাবে।’ এদিকে আজ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে আট দল।
জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোটের ঘোষণায় জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘গণভোট প্রসঙ্গে যে ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন, তাতে গণদাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভোটারদের জন্য একটা সংকট তৈরি করল। গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে আয়োজন করা গেলে জুলাই সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। এছাড়া যেসব বিষয়ের ওপর গণভোটের প্রশ্ন নির্ধারণের কথা প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সেটাও বিশ্লেষণ করা জরুরি।’
এর আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন উপযুক্ত সময়ে প্রণয়ন করা হবে।
আজ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ৮ দলের : বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আন্দোলনরত ৮ দলের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে ৮ দলের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের উদ্দেশে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিং করেন।
তার আগে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের সভাপতিত্বে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নায়েবে আমির, সেক্রেটারি জেনারেল এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলরাসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। উভয় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পর্যালোচনা করে বলা হয়, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজনের ঘোষণা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি এবং গণদাবি মানা হয়নি। এছাড়া দেশের বর্তমান সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জনগণের প্রত্যাশা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উদ্ভূত প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে দেশ ও জাতির কল্যাণ, ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠা এবং আগামীর বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করা হয়।
৮ দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের তোফাজ্জল হোসাইন, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমাদ আলী কাশেমী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র (জাগপা) ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম প্রমুখ।
