Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ বিএনপির

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ বিএনপির

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা থেকে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করায় ও সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে এই ধন্যবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে গত ১৭ অক্টোবর ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদের ওপর জনগণের সম্মতি গ্রহণের জন্য গণভোট অনুষ্ঠান ও শিগগির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজনের জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা হয়। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন। সভা শেষে গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত ও সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় তাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, সভায় ১৭ অক্টোবর ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদের ওপর জনগণের সম্মতি গ্রহণের জন্য গণভোট অনুষ্ঠান ও শিগ্গিরই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাউদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন ও হাফিজ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

রাত ৭টা থেকে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। জানা গেছে, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেন স্থায়ী কমিটির নেতারা।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে জুলাই জাতীয় সনদ প্রধান উপদেষ্টা নিজে স্বাক্ষর করেছেন, সেটা তিনি লঙ্ঘন করেছেন তার ভাষণের মাধ্যমে। জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিচার-বিশ্লেষণ করে এ নিয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন নেতারা।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, কয়েকদিন আগেও দলের অবস্থান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছি, স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের বাইরের কোনো বিষয় যদি আরোপ করা হয় তার সঙ্গে আমরা একমত হব না। সনদে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সেটা কোনো বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করবে না। এখনো বলতে চাই যেসব বিষয় এখানে জবরদস্তি করা হয়েছে ও বলা হচ্ছে, এগুলোর ওপর হয় আপনি ‘হ্যাঁ’ বলবেন বা ‘না’ বলবেন। যে প্রশ্নগুলো করা হচ্ছে, সেটা স্বাক্ষরিত সনদবহির্ভূত। যে আদেশটা জারি করা হয়েছে, সেটার মধ্যে অনেকগুলো আছে নতুন, তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে অনেকগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হয়তো এখানে কোনো কোনো পক্ষ খুশি হতে পারে। কিন্তু কথা হচ্ছে, আমরা রাষ্ট্রের মধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টির পরিবর্তে কি অনৈক্য সৃষ্টি করতে যাচ্ছি? জাতীয়ভাবে কি আমরা কোনো বিভাজন সৃষ্টি করতে যাচ্ছি? এই বিভাজনের দায়-দায়িত্ব কি প্রধান উপদেষ্টা নেবেন? সংবিধান সংস্কার পরিষদ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এটা নতুন ধারণা যেটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে কখনো আলোচিত হয়নি, সিদ্ধান্ত হয়নি, ঐকমত্য হয়নি। এই ধারণাগুলো কেন তিনি আদেশের মধ্যে ও প্রস্তাবের মধ্যে নিয়ে এলেন সেটা জানা নেই। কারণ জাতীয় সংসদ গঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্যই নির্বাচন কমিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবিধানিকভাবে, রাষ্ট্রপতির নির্বাচনও সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এখন যে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ও নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন, তার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবে সংসদ-সদস্যরা। তারা শপথ নেবেন যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংসদ-সদস্য হিসাবে। তিনি বলেন, আর এখানে (আদেশে) প্রস্তাব করা হয়েছে, তারা একইভাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসাবে শপথ নেবেন। তারা কি সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন যে শপথ নেবেন? সুতরাং এই ধারণাগুলো নতুন। এভাবে একটা সময় নির্ধারণ করে দেওয়া ও একটা পরিষদ নির্ধারণ করে দেওয়া এগুলোর এখতিয়ার কি আসলে কারও আছে? আগামী জাতীয় সংসদকে এভাবে নির্দেশনা দিয়ে কোনো প্রস্তাব কি কোনো আইনি ভিত্তি পাবে? তাতে করে কি সংসদের এখতিয়ার, সার্বভৌম এখতিয়ারের ওপর কি হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না?


Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম