এ যেন সিলেটের আরেক সাদা পাথর
মতলব উত্তরে চলছে বালু লুটের উৎসব
ফারুক হোসেন, মতলব (চাঁদপুর)
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ও ধনাগোদা নদীতে বালু লুটের উৎসবে মেতেছ বালুখেকোরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ দৃশ্যমান না থাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে বালু সন্ত্রাসীরা। দিনে-রাতে মেঘনায় নামানো হচ্ছে অর্ধশতাধিক অবৈধ ড্রেজার। তোলা হচ্ছে বালু। এভাবে নিয়মিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। এতে নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইকোনমিক জোন)।
এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের টনক নড়বে কি সিলেটের সাদাপাথরের মতো সব ফুরানোর পরে?
জানা যায়, বালু সন্ত্রাসী কিবরিয়া মিয়াজি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। তাদের এ ধরনের কাজে জড়িত থাকা দুপক্ষের বিরোধে গোলাগুলিতে একাধিক ব্যক্তি মারাও গেছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এসব ঘটনায় এখনো মামলা চলছে। এতকিছুর পরও কীভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে! এ প্রশ্ন মতলব উত্তরবাসীর।
সূত্র জানায়, মতলব উত্তরের সীমানাসংলগ্ন মুন্সীগঞ্জের কয়েকটি মৌজার বালুমহাল জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে এর আড়ালে বালু সন্ত্রাসীরা নাছিরারকান্দি, বোরচর, দশানি, বাহাদুরপুর, খুনেরচর, বাহেরচর, বেলতলী, ষাটনল, লালপুর ও কালিপুরে নদীতে ৫০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে এক সময় ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, বেড়িবাঁধ ও ইকোনমিক জোনে ভাঙন দেখা দিতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অবৈধ বালুখেকোদের প্রতিহত করা খুবই কঠিন। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নেই। এরা রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধ ড্রেজার চালায়। কেউ প্রতিবাদ করলে তারও প্রাণনাশের হুমকি দেখা দেয়। যার কারণে কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলম সরকার জানান, নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, মতলব উত্তরের সীমানায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত নদীতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। যেসব এলাকায় বালু উত্তোলন করা হয় সেখানে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা অচিরেই যৌথ বাহিনীর একটি অভিযান পরিচালনা করব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কেউ পার পাবে না।
