|
ফলো করুন |
|
|---|---|
একসময় বই ছিল শিক্ষিতজনের নিত্যসঙ্গী। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে কিংবা বিকালে বারান্দায় বসে চা খেতে খেতে বই পড়া একটি অভ্যাসে দাঁড়িয়েছিল। তখন মানুষ জানত, বই শুধু বিনোদন নয়, এটি এক অনন্ত জগৎ-যেখানে চিন্তা, কল্পনা আর অনুভূতি মিলে একাকার হয়ে যায়। কিন্তু আজকের প্রজন্ম বড় হচ্ছে স্ক্রিনের আলোয়, বইয়ের ঘ্রাণে নয়। তাদের অবসর সময় কাটে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা গেমসের জগতে। বাবা-মা নিজেরাও মোবাইল ফোনে ডুবে থাকেন। ফলে ঘরে বই পড়ার পরিবেশটাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আগে ঘরে একটা বইয়ের আলমারি থাকত, এখন থাকে ওয়াইফাই রাউটার। স্ক্রিনের আকর্ষণ অস্বীকার করার উপায় নেই। রঙিন ছবি, শব্দ, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া-সবকিছু মানুষকে মুগ্ধ করে। কিন্তু এই সহজ বিনোদনের আসক্তিতে আমরা হারিয়ে ফেলছি মনোযোগ, ধৈর্য আর গভীর চিন্তার অভ্যাস। একটি ভালো বই মানুষের মনের দরজা খুলে দেয়, তাকে ভাবতে শেখায়, প্রশ্ন করতে শেখায়। একটি বই হতে পারে জীবনের দিশারি। যদি অভিভাবকরা সন্তানদের বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন, স্কুলে গল্প পাঠের আসর হয়, যদি বন্ধুরা বই বিনিময়ের অভ্যাস গড়ে তোলে, তাহলে বই আবার জীবনের অংশ হয়ে উঠবে। আধুনিক যান্ত্রিক এই যুগে আমাদের উচিত অন্তত প্রতিদিন কিছু সময় বইয়ের পাতায় ডুবে থাকা। কারণ, যতদিন মানুষ ভাবতে ও অনুভব করতে জানবে, ততদিন বই কখনো মরবে না।
জান্নাতুল ফেরদাউস অহনা, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
