Logo
Logo
×

খবর

বিএনপি নেতার অডিও ফাঁস

‘আমি সম্পাদক, ডিআইজির বইনতে আমি খাবু না তো ক্যারা খাব’

Icon

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘আমি সম্পাদক, ডিআইজির বইনতে আমি খাবু না তো ক্যারা খাব’

খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল।ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের একটি কথোপকথনের অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই অডিওতে শোনা যায়, চাঁদাবাজি, বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকজন কথা বলছেন। মঙ্গলবার সকালে অডিওটি বিভিন্ন জনের কাছে ছড়ানোর পর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

মাদারগঞ্জ পৌর বিএনপির সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আশরাফুর রহমানের বোনের জামাই (ভগ্নীপতি)।

অডিওতে খালেদ মাসুদ সোহেলকে বলতে শোনা যায়, ‘৬ লাখ টাকা এককালীন দিছে, আর এক লাখ করে প্রতিমাসে দিবার লাগছে।’ তখন তাকে পাশ থেকে আরেকজন বলছিলেন, ‘তুমি (খালেদ মাসুদ তালুকদার) ডিআইজিকে পচাবার লাগছ।’

তখন খালেদ বলেন, ‘আমি ডিআইজির নাম করেই খাই। আমি পৌর বিএনপির সম্পাদক ও আমি ডিআইজির বইনতে (ভগ্নীপতি), আমি খাবু না তে (তো) ক্যারা খাব। এই শোনেন (তার সঙ্গে থাকা লোকদের উদ্দেশে) আপনি আইসে যদি ২ লাখ টাকা দিয়ে বলেন, ভাই আপনি একটু দেইখেন, আমি কইলাম, দেখলাম। তাইলে আমার ২ লাখ টাকা হজম হইল না, হালাল হইল?’ তখন পাশ থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘তুমি তো পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, মানুষ জানবে না?’ তখন খালেদ মাসুদ তালুকদার বলেন, ‘মানুষ জানবই তো, আমি দিবার পাই দেখেই আমি খাবার পাই। আমার ওতাহানি (এতখানি) ক্ষমতা আছে তো, তুমগরে (তোমাদের) নাই, তাই তুমরা খাবার পাও না।’

তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ওসি আইসা কইল, ভাই ২ লাখ টাকা থাকল, একটু দেইখেন আমার মুক (দিক)। আমি ২ লাখ টাকা নিয়ে ওরে ভালো করে দেখলাম। ওসিরা আমারে ট্যাকা দিলে আমি কি না করমু, সুযোগ কি বারেবারে আসে? আমি তো হালাল করেই খাই। ৬ লাখ টাকা একবারে দিছে আর এক লাখ করে প্রতিমাসে দেয়, না হইলে গাড়ি বন্ধ। ময়মনসিংহের সব বালু আমার উনতনে (কাছ) থেকে যায়।’

তখন পাশের একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘এই রিপোর্ট তো বাবুল (মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মঞ্জুর কাদের বাবুল খান) ভাই জানে।’ জবাবে খালেদ মাসুদ বলেন, ‘বাবুল জানুক বা বাবুলের বাপ জানুকগা, তাতে আমার কী আসে যায়? আমি আমার হেডামে চলি। আমার নাম কইয়ে চান্দা (চাঁদা) তুলবার গেছিল, তিনজনকে আটকাইয়া থুইছি জেলখানার মধ্যে, আইজ দেড় মাস হইয়া গেল। আমার ক্ষমতা আছে, আমি আটকাইয়া থুইছি। আইজকে ক্ষমতা আছে দেহামু, কাল থাকব না, দেহামু না।...ক্ষমতা কি চিরদিন থাকব?’ তখন পাশ থেকে আরেকজন বলেন, ‘আমগোর এহন সিজন চলতাছে।’ 

আলাপচারিতার একপর্যায়ে আরেক ব্যক্তি খালেদ মাসুদের উদ্দেশে বলেন, ‘তুমি তো (বিএনপি নেতা) একটা সংগঠনের দ্বিতীয় (ক্ষমতাধর) ব্যক্তি?’ তখন খালেদ মাসুদকে বলতে শোনা যায়, ‘তাহলে আমাকে বহিষ্কার করো, কার কতখানি ক্ষেম (ক্ষমতা) আছে, ক্ষেম থাকলে বহিষ্কার করো। আমি সোহেল (বিএনপি নেতা) চান্দাবাজি-ধান্দাবাজি করবার লাগছে, তাহলে বহিষ্কার করে দাও।’

এ বিষয়ে সোহেল বলেন, অডিওটির কথাগুলো অতিরঞ্জিত তিনি হয়তো বা কোথাও তার বন্ধুদের নিয়ে খুশগল্পের সময় কে বা কারা ষড়যন্ত্র করে রেকর্ড করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে ফাঁসানোর জন্য এই অডিও ভাইরাল করেছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম