৭৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গাজিকের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তার দুর্নীতির সহযোগী করপোরেশনের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়াকেও আসামি করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার বিকালে গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আত্মগোপন করেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। আর গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা পদে কর্মরত আছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৭ জুন থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নগর ভবনসহ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিল প্রস্তুত, মাস্টাররোলে কর্মী নিয়োগ, ভুয়া সভা, অনুদান, আপ্যায়ন, ইজারা খাতসহ বহু খাতে কোনো কাজ না করেই বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এ অর্থ সরকারি উন্নয়ন তহবিল ও সিটি করপোরেশনের রাজস্ব খাত থেকে কৌশলে তুলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে রাজস্ব তহবিল থেকে ১৩৬ কোটি টাকা, টেন্ডার বাবদ ১২৮ কোটি টাকা, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে ৯ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২ কোটি টাকা, উন্নয়ন তহবিল থেকে রাজস্ব তহবিলে স্থানান্তরের নামে ৯৯৯ কোটি টাকা, রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে ৭২ কোটি টাকা, মাস্টাররোলকর্মী ও করোনা খাতে ভুয়া বিলের মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া হাটবাজার ইজারা ও ট্রাফিক নিয়োগ খাতেও অসংখ্য অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রিমিয়ার ব্যাংকের কোনাবাড়ি শাখায় ভুয়া হিসাব খুলে ২ দশমিক ৬ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়, জাতীয় নির্বাচনের আগেও চেকের মাধ্যমে ১৩ কোটি টাকা তোলা হয়, মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন দেখিয়ে আরও কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কমিশনের নির্দেশে তদন্ত করে অপরাধ-সংশ্লিষ্ট সব প্রমাণ ও তথ্য যাচাই শেষে এজাহার তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ২৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার কাজ দেখিয়ে বিল উত্তোলনের তথ্য মিলেছে, যা আদতে সম্পূর্ণ ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে।

