Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

গাজা দখল হুমকি নেতানিয়াহুর

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজের সুরেই সুর মেলালেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও। এবার গাজার একাংশ দখলের হুমকি দিলেন তিনি। বুধবার পার্লামেন্টে বক্তৃতায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাস যত বেশি আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাবে, আমরা তত শক্তিশালী দমন-পীড়ন চালাব। এতে অঞ্চল দখল করা এবং এতে অন্যান্য জিনিসও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’ আল-জাজিরা।

গাজায় এখনও ৫৯ জন বন্দি রয়েছে। যাদের মধ্যে ২৫ জন এখনো জীবিত রয়েছে বলে বিশ্বাস ইসরাইলের। জানুয়ারিতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতি কাঠামোর দ্বিতীয় পর্যায়ে সব জীবিত বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে চুক্তি ছাড়াই প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইসরাইল গাজায় তাদের আক্রমণ পুনরায় শুরু করে। তবে নেতানিয়াহুর হুমকির পর পালটা জবাব দিয়েছে সশস্ত্রবাহিনী হামাসও। তারা বলছে, ইসরাইল বন্দিদের উদ্ধারের চেষ্টা করে ‘বল প্রয়োগ করে’ তবে তাদের ‘কফিনে’ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও হামাসের দাবি- যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা এবং পুনরায় যুদ্ধ করা নেতানিয়াহুর একটি ‘পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত’ ছিল। বিবৃতিতে তারা আরও জানায়, নেতানিয়াহু চুক্তির ব্যর্থতার জন্য সম্পূর্ণ দায় বহন করেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মধ্যস্থতাকারীদের অবশ্যই তাকে আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং আলোচনার পথে ফিরে আসার জন্য চাপ দিতে হবে। কিন্তু গাজায় ভেতরে বাড়ছে হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। গাজা উপত্যকার উত্তরে শত শত ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ করে হামাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ‘যুদ্ধ বন্ধ করো’ ও ‘হামাস বেরিয়ে যাও’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে এটি একটি বিরল প্রকাশ্য প্রতিবাদ। গাজার উত্তরের বিধ্বস্ত এলাকা বেইত লাহিয়ায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে বিক্ষোভকারীদের মিছিল চলার দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকজন ধুলো-ধূসর রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘হামাস, চলে যাও’ বলে চিৎকার করছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটি যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ। মানুষ ক্লান্ত, তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। অনেকে হামাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সবাই না হলেও অনেকেই বলছিলেন, ‘হামাস, চলে যাও’। মানুষ অতিষ্ঠ, তাদের দোষ দেওয়া যায় না।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ‘আমরা যুদ্ধ চাই না’ স্লোগান দিচ্ছেন। এক ব্যানারে লেখা ছিল, ‘যুদ্ধ যথেষ্ট হয়েছে’। হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা বাসেম নাইম বলেন, যুদ্ধের দুর্ভোগের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। তবে আমরা সন্দেহ করি, কিছু সন্দেহজনক রাজনৈতিক এজেন্ডা এই পরিস্থিতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে গাজায় হামাস এককভাবে শাসন করে আসছে। ওই বছর নির্বাচনে ফাতাহকে হারিয়ে তারা এককভাবে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেখানে ফাতাহর রাজনীতিও অনেকটা শেষ হয়ে যায়। গাজায় নৃশংস ইসরাইলি হামলা শুরুর পর হামাসের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়তে থাকে। রাজপথ ও অনলাইনে সেই সমালোচনা চলছে। তবে এখনো গাজায় হামাসের পক্ষে প্রচুর সমর্থন রয়েছে। এদিকে গাজায় ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি হামলা এখনও চলমান। গত ২৪ ঘণ্টায় অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে ৩৮ জন নিহত হয়েছে। ফলে নতুন হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৩০ জনে। জাতিসংঘ মঙ্গলবার বলছে, ইসরাইল পুনরায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে ১,২৪,০০০ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম