চট্টগ্রামের জেলার কারাগারে
জব্দ ১ কোটি টাকার এফডিআর তার স্ত্রী ও শ্যালক গোপনে ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে
ভৈরব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আবারও কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে সোহোল রানা কিশোরগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন। ঘটনার পর ভৈরব রেলওয়ে থানায় দুটি মামলা করার পর মানি লন্ডারিং মামলাটি দুদককে তদন্ত করতে দেয়া হয়।
সোমবার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়মনসিংহ দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম কিশোরগঞ্জ আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। পরে তাকে কিশোরগঞ্জ থানায় নিয়ে ২ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবারও কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এদিকে জেলার সোহেল ২৬ অক্টোবর ভৈরবে রেলওয়ে পুলিশের হাতে বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর ও চেকসহ গ্রেফতার হওয়ার পর ২৯ অক্টোবর তার স্ত্রী ও শ্যালকের নামে ১ কোটি টাকার দুটি এফডিআর ময়মনসিংহ শাখার মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এই প্রতিনিধিকে মোবাইল ফোনে জানান। তার মধ্যে স্ত্রী হোসনে আরা পপির নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকে এফডিআর ছিল ১ কোটি টাকা (প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫০ লাখ টাকা নিতে পারেনি)। তার শ্যালক রাকিবুল হাসানের নামে প্রিমিয়ার ব্যাংকে এফডিআর ছিল ৫০ লাখ টাকা, যা উঠিয়ে নিয়ে গেছে।
এফডিআর’র মূল কপি ছাড়া দুটি ব্যাংক থেকে কীভাবে কোটি টাকা তুলে নিল, তা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সাধারণত এফডিআর’র মূল কপি না থাকলে থানায় জিডিসহ অনেক কিছু প্রসেসিং করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হয়। তবে জেলারের নামের ১ কোটি টাকার এফডিআর ব্যাংক থেকে তুলতে পারেনি। ওইদিন জেলারের কাছ থেকে জব্দ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আদালতের অনুমতি না পাওয়ায় এখনও সরকারি কোষাগার ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারেনি বলে জানায় রেলওয়ে পুলিশ। এর আগেও ভৈরব রেলওয়ে পুলিশ মাদকের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল।
২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে গ্রেফতার হন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ জেলারকে বরখাস্ত করে এবং ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ময়মনসিংহ দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এ প্রতিনিধিকে শুক্রবার মোবাইল ফোনে বলেন, তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, যা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, জব্দ এফডিআর’র মধ্যে তার স্ত্রীর নামে ৫০ লাখ ও শ্যালকের নামে ৫০ লাখ টাকা তারা দুটি ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে গেছে। কীভাবে তারা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ এফডিআরের টাকা মূল কপি ছাড়া তুলে ফেলল, তাতে আমি হতবাক হয়েছি। তবে বাকি দেড় কোটি টাকার এফডিআরসহ সোয়া দুই কোটি টাকা কয়েকটি ব্যাংকে যথানিয়মে জব্দ করা হয়েছে। তাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেকগুলোর ব্যাংকে কোনো টাকা নেই বলে তিনি জানান। সব বিষয়েই তদন্ত করে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।