ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশীয় টেক্সটাইল মিল সুরক্ষায় দেশের সব স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে সমুদ্রপথ বা অন্য কোনো উপায়ে সুতা আমদানি চালু থাকবে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে-বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারীসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে এখন থেকে সুতা আমদানির অনুমতি বাতিল করা হলো। তবে আগের ঘোষণা অনুযায়ী অন্য পণ্য আমদানিতে বাধা থাকবে না।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালে বৈধ পথে ভারত থেকে ২৭০ কোটি ডলারের সুতা আমদানি হয়েছে। অবৈধ পথে কী পরিমাণ আমদানি হয়েছে, তার ধারণাও করা যাচ্ছে না। কারণ বন্দরে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ভারত থেকে সুতা আনায় সে দেশে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হলো, মূল্য সংযোজনটা সে দেশে হলো, আর বাংলাদেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলো। ভারতে অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহারের সুতার চেয়ে রপ্তানির সুতার দাম কম। কারণ তারা রপ্তানিকে প্রাধান্য দেয়। বাংলাদেশ সরকারের এদিকে মনোযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) স্থলপথে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এর আগের সরকার নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির অনুমতি দেয়। কিন্তু, এসব স্থলবন্দরে সুতার মান যাচাই করে শুল্কায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বা কারিগরি সক্ষমতা নেই। এছাড়া শুধু আংশিক আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলেও এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় সুতাকলগুলো। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, স্থলবন্দর ব্যবহার করে সুতা আমদানি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এতে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। ফলে বিদেশি সুতার ওপর আমদানি-নির্ভরশীলতা বেড়ে যাবে, আমদানি ব্যয় বাড়বে। একইসঙ্গে বাড়বে বেকারত্ব।
গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের সুরক্ষায় স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, স্থলবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মোতাবেক সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়ায় পূর্বের মতো সমুদ্র বন্দর দিয়ে সব ধরনের সুতা আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এর বিকল্প হিসাবে শুধুমাত্র মাস্টার এলসির অনুকূলে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে সুতা আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি এলসিতে আংশিক চালান খালাস বন্ধ করার শর্ত যুক্ত করা যেতে পারে। একইসঙ্গে সুতা আমদানির যে কোনো চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
