Logo
Logo
×

শেষ পাতা

জাতিসংঘের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা

শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশি নারীর সংখ্যা বাড়ান

Icon

বাসস

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ থেকে আরও নারী সদস্য নিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রমবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস আরও জানান, প্রয়োজনে বাংলাদেশ অতিরিক্ত সৈন্য ও পুলিশ পাঠাতে প্রস্তুত। জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের (পিপিআরএস) র‌্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুত পাঁচটি ইউনিটের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। শান্তিরক্ষায় সদর দপ্তর এবং মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশি নেতৃত্ব বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান তিনি। তিনি জানান, শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘের যাচাই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ কঠোরভাবে মেনে চলে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতায় জাতিসংঘসহ অন্যসব সংস্থার সঙ্গে আরও সহযোগিতাকে স্বাগত জানায়। যাতে মানবাধিকার প্রতিপালন আরও জোরদার হয়। সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার এ সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নতুন করে আশা জুগিয়েছে।

জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লাক্রোয়া জানান, নারীদের শান্তিরক্ষায় সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে জাতিসংঘের একটি নীতিমালা রয়েছে। আমরা নারীদের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। শান্তিরক্ষার সব ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগে সমর্থন দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে।

উল্লেখ্য, শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ তিন দেশের একটি। বর্তমানে বাংলাদেশের পাঁচ হাজার ৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী ১১টি সক্রিয় মিশনের ১০টিতে কাজ করছে।

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে আরও সদস্য নেওয়ার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের আরও বেশি হারে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ অনুরোধ জানান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান, বর্তমান অবস্থান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কর্মকর্তা ও সদস্যদের মিশনের যোগ্য করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সামর্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া নারী পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ফিমেল প্লাটুন পাঠানো, মিশনে বিজিবি ও আনসার সদস্য পাঠানোর সম্ভাব্যতা, দক্ষিণ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ফরমড পুলিশ ইউনিট (এফপিইউ) পাঠানো ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক সময় শীর্ষ দেশ ছিল। কালের পরিক্রমায় বর্তমানে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। নেপাল ও রুয়ান্ডা বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আবারও শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রথম স্থান পুনরুদ্ধার করতে চাই।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদানের কথা স্বীকার করে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া বলেন, পুলিশসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। সেখানে শীর্ষ পদগুলোতে যাতে বাংলাদেশি অফিসাররা আরও অধিক হারে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করছি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম