Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

নাগরিক সেবা এক ছাতায় আনতে কমিশন হচ্ছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন ও পাসপোর্টসহ সব সেবা এক ছাতার নিচে আনতে পৃথক কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর নাম দেওয়া হয়েছে সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশন। এসংক্রান্ত আইনের খসড়াও প্রস্তুত। খসড়াটি পর্যালোচনার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এ বৈঠকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের প্রতিনিধিও ছিলেন। এসব সেবা পেতে নাগরিকদের দুর্ভোগ নিরসনে এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন) অধ্যাদেশের খসড়া পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। জানতে চাইলে মঙ্গলবার সকালে তিনি বলেন, এনআইডির কাঠামোগত অবস্থান একটু বাড়ানোর জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে-এটার ব্যাপারে কেবিনেট ডিভিশন একটা উদ্যোগ নিয়েছে। আলোচনা চলছে। এর বাইরে কিছু বলার অবকাশ নেই।

এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগে ক্ষুব্ধ ইসির কর্মকর্তারা। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নেওয়া এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিলেন তারা। কর্মকর্তারা মঙ্গলবার ক্ষোভের কথা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আজ সভা ডেকেছে ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার বিকালে এ বিষয়ে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ভোটার নিবন্ধনের বাইপ্রডাক্ট। এটি অবশ্যই ইসির কাছে থাকা উচিত। সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের পর থেকেই তো বলে আসছি। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে। সামনে একটি নির্বাচন আছে। বাস্তব বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়েই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, এটি আমি ধারণা করতে পারি। ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’ অধ্যাদেশের খসড়ায় উঠে এসেছে, একজন চেয়ারম্যান ও পাঁচজন সদস্য নিয়ে কমিশন গঠন করা হবে। তাদের মেয়াদ প্রস্তাব করা হয়েছে তিন বছর। এই কমিশন জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ ও দত্তক নিবন্ধন করতে পারবে। জাতীয় পরিচয়পত্রসংক্রান্ত সেবা দেবে। স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত এই কমিশনের তত্ত্বাবধানে থাকবে। নাগরিকদের ইউনিক আইডিসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবে। এ অধ্যাদেশের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিচ্ছে।

সিইসির প্রতিক্রিয়া : জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসি থেকে সরে গেলে নির্বাচনি কাজে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেন নাসির উদ্দিন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, সমস্যা তো হবে। সেটা আমরা লিখিত আকারে সরকারকে জানাব। তবে সরকার এক ধরনের চিন্তা করছে-কীভাবে সব ধরনের নাগরিক সেবা এক জায়গা থেকে দেওয়া যায়। যাই হোক, সোমবার একটি মিটিং হয়েছে। সেখানে প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের মতামত তুলে ধরেছি। আরও মিটিং হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এনআইডি নির্বাচন কমিশন থেকে নিয়ে যাবে-আমি এমনটা শুনিনি।

খসড়া করার আগে ইসির সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এনআইডিটা কিন্তু নিয়ে যাচ্ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইনও করে ফেলেছিল। কার্যকর হয়নি। আমরা সরকারকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, এটি স্বরাষ্ট্রে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কীভাবে কাজটা করা যেতে পারে এটির একটি চিন্তা আছে। এটা এমন না যে, শুধু এনআইডি আমাদের থেকে নিয়ে গেল আর সবকিছু হয়ে গেল। এমন হওয়া উচিতও নয়।

সিইসি বলেন, যদি আলাদা কোনো কর্তৃপক্ষ হয়েও যায়, আর এনআইডি আমাদের (ইসির) অধীনে থাকে তাহলেও তো সমস্যা নেই। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি বড় সিদ্ধান্ত। যেখানে মাঠে ভোটার নিবন্ধন চলছে, হাজার হাজার লোক কাজ করছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আছে, যেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর মধ্যে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত হবে বলে আমি অন্তত মনে করি না। যেখানেই কথা বলার সুযোগ থাকবে সেখানেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলব। এনআইডি চলে যাবে-এ বিষয়ে ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি হতাশাও তৈরি হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম