৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ
ইউএসটিআর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অর্থ উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ শতাংশ পালটা শুল্ক আরোপ নিয়ে আগামী সপ্তাহে ইউনাইটেড স্টেটস অব ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করবে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দলে থাকবেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। বুধবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সংলাপে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন একথা জানান।
সংলাপে উপদেষ্টা আরও বলেন, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ফলে কয়েকটি দেশে বাংলাদেশি পণ্য পরিবহণ খরচ দুই হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। শিগগির যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি তাতে এ খরচ শূন্যের কোঠায় নেব।
সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বিএসআরএফ ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭% শুল্ক আরোপ : চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক ওই সংলাপের আয়োজন করে। সেখানে উপদেষ্টা আরও বলেন, শুধু শুল্ক ছাড়াও বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্ভাবনা এবং অশুল্ক বাধা দূরীকরণ নিয়েও আলোচনা হবে।’ ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দুই দেশই যাতে লাভবান হয়, সে ধরনের একটি কাঠামোতে পৌঁছানো। আমরা দেখতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র কী চায়, আবার আমরাও কী চাইছি এই বিষয়টি সরাসরি আলাপ হবে।’ আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিযোগ্য নতুন সম্ভাবনাময় পণ্যের দিকেও নজর দেওয়া হবে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি আরও জানান, প্রতিনিধিদলটির সফরের অভিজ্ঞতা ও প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে সরকার। এরপর তিনি নিজেও যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ কয়েকটি প্রধান রপ্তানি পণ্যে যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সরকার কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে এই চাপ মোকাবিলায় সক্রিয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকারের শর্ত সহজ করা এবং শুল্ক হ্রাসে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সমঝোতা অর্জনই প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল : সংলাপে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে আমাদের খরচ প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি, কর্মসূচি নিয়েছি, দিন-রাত থেকে আলোচনা করছি। আমি নিজে পহেলা বৈশাখে সারা দিন বিমানবন্দরে কাটিয়েছি। নিজে বোঝার চেষ্টা করেছি, কেন পণ্যবাহী কার্গো আরেক দেশের সহায়তা নিয়ে তৃতীয় দেশে যেতে হচ্ছে।
পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সংসার খরচে চাপ পড়বে না : সংলাপে বাজার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানে তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি বা টাকার ক্রয় ক্ষমতা যদি থাকে, তাহলে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সংসার খরচে চাপ ততটা পড়বে না। আপনারা দেখেছেন ক্রমান্বয়ে আমাদের মূল্যস্ফীতি নামছে। আমাদের টাকার ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সামগ্রিক প্রচেষ্টার মধ্যে এটা রেখেছি। ওই সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব, সঞ্চালনায় ছিলেন বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
