Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

পিআরআই এমএমআইর প্রথম সংস্করণ প্রকাশ

রাজস্বে দুর্বলতা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বহিঃখাতের ভারসাম্য উন্নত হলেও রাজস্ব খাতের দুর্বলতা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে। তবে এনবিআর পুনর্গঠন করে পৃথক রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন এবং ব্যাংক রেজ্যুলেশন অধ্যাদেশ প্রণয়নের মতো সংস্কার কার্যকর করা হলে দেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। তবে উচ্চ সুদের হার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির চাপে বেসরকারি বিনিয়োগ পরিবেশ এখনো মন্থর। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ‘মাসিক ম্যাক্রোইকোনমিক ইনসাইটস (এমএমআই)’ প্রথম সংস্করণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (ডিএফএটি) সহায়তায় পিআরআই’র সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস (সিএমইএ) প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবণতার বিষয়ে সময়োপযোগী, তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ ও নীতি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।

পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকে এবং অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি জোশুয়া গাকুটান। এছাড়া ড. জাইদী সাত্তার ও পিআরআই’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ইতিহাস অনুযায়ী, নীতির সামঞ্জস্য ও শক্তিশালী সামাজিক মূলধনের সমন্বয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। বাংলাদেশকেও এ দুদিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে লক্ষ্যভিত্তিক নীতি প্রণয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আমাদের জন্য একটি সুযোগ এনেছে দিয়েছে অতীতের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে নতুন কৌশল নির্ধারণের। তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতির সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বিনিময় হার উদারীকরণ আমাদের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে। ভাসমান হার পদ্ধতি চালু হওয়ার পরও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমান রিজার্ভ, চলতি হিসাবের উন্নয়ন ও সামগ্রিক অর্থ প্রবাহের অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম। সরকার বিনিময় হারকে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। তবে ডলারের দাম কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে বেশি বেড়ে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। জাইদী সাত্তার বলেন, চলতি অর্থবছরে ম্যাক্রো ইকোনমিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং অর্থনীতি উচ্চতর প্রবৃদ্ধির গতিধারায় ফিরে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। তবে আমাদের রপ্তানি খাতের সম্ভাবনা একটি অতিমাত্রায় সুরক্ষামূলক শুল্ক কাঠামোর কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি নীতিনির্ধারণে রপ্তানি-বিরোধী প্রণোদনা সৃষ্টি করে চলেছে। তিনি বলেন, দেশের রপ্তানি শুধু পোশাক শিল্প নির্ভর। এ অবস্থা টেকসই অর্থনীতির জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে পোশাক খাতে যেমন রপ্তানি বহুমুখীকরণের সুযোগ রয়েছে তেমনি পোশাক খাতের বাইরে অন্যান্য শিল্পেও রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। ড. আশিকুর রহমান বলেন, বহির্খাতের ভারসাম্য উন্নত হলেও রাজস্ব খাতের দুর্বলতা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে। তবে, এনবিআর পুনর্গঠন করে পৃথক রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন এবং ব্যাংক রেজ্যুলেশন অধ্যাদেশ প্রণয়ন ইতিবাচক পদক্ষেপ। মার্চ সংস্করণে মূল উন্নয়নগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২০২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির মাঝারি উন্নতি হয়েছে। চলমান মূল্যস্ফীতির চাপ এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের শক্তিশালী প্রবাহে বহির্খাতের উন্নতি হয়েছে। তবে, এতে রাজস্ব সংগ্রহে চলমান চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফলে সরকারি বিনিয়োগ কম হচ্ছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম