Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান

খেলাপি ঋণ ২৫ হাজার কোটি টাকা

ব্যাংকিং খাতের মতো এটিকেও নতুন করে সাজাতে হবে : ড. মইনুল

Icon

হামিদ বিশ্বাস

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ব্যাংক খাতের সঙ্গে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাতেও বাড়ছে খেলাপি ঋণ। গত এক বছরে এ খাতে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়ে খেলাপির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

তবে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি-এটা মোটেও এ খাতের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র নয়। কারণ এ খাতে ১৫-২০টি প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৫০-৯৯ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তাদের মতে, জুলাই-আগস্ট পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাতে কিছুটা হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, তেমন কোনো উদ্যোগ নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে দেখা যায়নি। মাত্র একটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ ভাঙা হয়েছে। বিপরীতে ব্যাংক খাতে ভেঙেছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ। ফলে গত এক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। অথচ ব্যাংক থেকে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ। কিন্তু এ খাতে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আগাগোড়াই শেষের পথে। তবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এখন ব্যাংক খাতে সংস্কার চলছে। এটা ভালো। আগে ব্যাংক ঠিক হোক, পরে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেরামতে মনোযোগ দিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা খেলাপি, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। এটি আগের প্রান্তিক, অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫.৫২ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের মোট ঋণের ২৯ দশমিক ২৭ শতাংশ।

আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করে গেছেন, তার জের পুরো খাতকেই টানতে হচ্ছে। পিকে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই এখন খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা ঋণের ৮০-৯৯ শতাংশই খেলাপি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবই যে খারাপ তা নয়। কিছু কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা অনেক ভালো। তারা ভালো ব্যবসা করছে। ঋণ আদায়ের হারও ঊর্ধ্বমুখী। তারপরও নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ ঋণই খেলাপি হয়ে গেছে। এই খাতটিকেও নতুন করে সাজাতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম